অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে বিএনপির ওপর শুধু দেশের মানুষ নয় মহান আল্লাহ তায়ালাও নারাজ ও নাখোশ হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা যেভাবে নিরীহ মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ ও অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, এতে তাদের ওপর শুধু দেশের মানুষ নয়, মহান আল্লাহ তায়ালাও নারাজ ও নাখোশ হয়ে গেছেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ভোটকেন্দ্র কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নাকি আবার দুইদিনের হরতাল ডেকেছে, তারা হরতালকে অকেজো রাজনৈতিক অস্ত্র বানিয়ে দিয়েছে। গতকাল (সোমবার) উত্তরবঙ্গে তারা দুটি স্কুল ঘর পুড়িয়েছে। যারা সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে, অকারণে হরতাল ডাকে, মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা চালায়, তারা জনগণের প্রতিপক্ষ। মূলত বিএনপি এখন জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণ যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে বিএনপির ইতিপূর্বের পরিকল্পনা যেভাবে ভেস্তে গেছে, এবারকার পরিকল্পনাও সেভাবে ভেস্তে যাবে।’
সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জাানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগেও হরতাল ডেকেছিল, কিন্তু দেশের মানুষ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি। বিএনপির এ হরতালকে কখন কোন সময়ে ডাকে কেউ জানে না। এ সমস্ত হরতাল ডেকে তারা নিজেদেরকে হাস্যকর করেছে। হরতাল একটি অকেজো রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল নির্বাচনকে ভন্ডুল করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করল, নির্বাচনের যে ডামাডোল, উৎসব ও আমেজ সেটা যেন দেশে সৃষ্টি না হয়।’
‘এরপর অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়ে চেষ্টা করেছিল নির্বাচনি উৎসবকে ভন্ডুল করার। তারা যখন দেখতে পেল নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে, এজন্য তারা পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। অনেক মানুষ আগুনে ঝলসে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ একজন মা তার শিশু সন্তানসহ বিএনপির ছোড়া পেট্রল বোমায় পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে, এবং সে হৃদয়বিদারক মৃত্যু আল্লাহর আরশ কাঁপিয়ে দিয়েছে। এগুলো করেও বিএনপি নির্বাচনের ডামাডোল, উৎসব ও আমেজকে থামাতে পারেনি। এরপর তারা এখন পিছু হটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিছু হটে বিএনপি এখন নির্বাচন ভন্ডুল কিংবা প্রতিহত করবে সেই শব্দগুলো আর ব্যবহার করছে না। এখন বলছে, তারা নির্বাচন পরিহার করার আহবান জানাচ্ছে। অর্থাৎ আগের অবস্থান থেকে তারা পিছু হটে গেছে।’
দেশে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচন একটি উৎসব, সে উৎসব আজ সারা দেশ জুড়ে বিরাজ করছে। সে উৎসবের আমেজ অনেক এলাকার তুলনায় রাঙ্গুনিয়ায় অনেক বেশি। রোববার (৭ জানুয়ারি) জনগণের অংশগ্রহণে দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’
‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ধস নামানো বিজয় হবে। এ বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে পরপর চতুর্থবার এবং পঞ্চমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠন করবেন। আমরা সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।’
ভোটের দিন বিএনপি’র সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের চক্রান্ত গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জেনে গেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটের দিন মোটরসাইকেলে এসে পেট্রোল বোমা ও বোমা নিক্ষেপ করে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।’
‘তাদের এ চক্রান্ত ও পরিকল্পনা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং র্যাব পুলিশসহ প্রত্যেকটি বাহিনী ইতিমধ্যেই জেনে গেছে। সে কারণে তাদের পক্ষে এগুলো বাস্তবায়ন করা কখনও সম্ভবপর হবে না।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার, উত্তর জেলা নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মেয়র শাহজাহান সিকদার, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইদ্রিছ আজগর, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান ও আবদুল মোনাফ সিকদার।