শ্রীলঙ্কায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হওয়ায় আবারো দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এর আগে গত মাসের ২ তারিখ প্রথমবারের মতো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সে সময় পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে বাধ্য হয়ে সরকারের ২৬ মন্ত্রী একসঙ্গে পদত্যাগ করেন। শুক্রবার রাতে (৬ মে) দেশটির সরকারের এক মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রেসিডেন্টের
মুখপাত্র জানান, গোটাবায়া রাজাপাকসে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়ে জরুরি অবস্থা
জারি করেন। ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে
শুক্রবার দেশব্যাপী ধর্মঘট করেছে। তাই ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি’ বজায় রাখতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার
দিনভর শ্রীলঙ্কায় আন্দোলন হয়েছে। বিশেষ করে এদিন ছাত্ররা দেশটির পার্লামেন্টের সামনে
গিয়ে আন্দোলন করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ ছাত্রদের
ওপর টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
করোনা মহামারি,
ক্রমবর্ধমান তেলের দাম এবং প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সরকারের ট্যাক্স কমানোর
কারণে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আমদানিকৃত খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের
ঘাটতির কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষিপ্তভাবে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে।
দেশটির অর্থমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ এখন মাত্র
পাঁচ কোটি ডলার।
শুক্রবার দেশের
বড় বড় শহরগুলোতে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বেসরকারি বাস ও ট্রেন অপারেটররা
ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার কারণে যাত্রীরা আটকা পড়েছিলেন। কলম্বোর প্রধান ট্রেন স্টেশনটি
শুক্রবার সকালে বন্ধ ছিল এবং কাছাকাছি টার্মিনালে শুধুমাত্র সরকারি বাস চালু ছিল। স্বাস্থ্যসেবা
কর্মীরাও ধর্মঘটে যোগ দেন, যদিও জরুরি পরিষেবা চালু ছিল।
এর আগে বৃহস্পতিবার
বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে যাওয়ার
প্রধান সড়কের বাইরে অবস্থান নেয়। কেউ কেউ রাজনৈতিক নেতাদের অপমানিত করতে তাদের অন্তর্বাস
ব্যারিকেডে ঝুলিয়ে দেন।