বিল্ডিং কোড মানতে সিডিএকে অনেক বেশি তদারকি বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত আবাসন মেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা জানান। রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে চার দিন ব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আবাসন কোম্পানিগুলো উন্নয়ন করছে। বানানো হচ্ছে সুউচ্চ
বিল্ডিং। কিন্তু বিল্ডিং কোড কয়জন মানছে? এ ব্যাপারে সিডিএ’র দৃষ্টি রাখা উচিত। ডেভেলপারদের
প্রতি অনুরোধ, সঠিক মাপের ফ্ল্যাট গ্রাহকদের বুঝিয়ে দিতে হবে। কমন এরিয়ার নামে ২৫ থেকে
৩০ শতাংশ কেড়ে নিচ্ছে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান, যা অনৈতিক। এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে
আসতে হবে।
তিনি বলেন, আবাসিক মালিকদের আরও সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে মানুষের রিফ্রেশমেন্টের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। খোলামেলা মাঠ ও পর্যাপ্ত হাঁটা-চলার ব্যবস্থা রেখে আবাসন প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমি কর সম্পূর্ণ অনলাইনে আদায়ের কথা জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ডেভেলপারের হাতে জমি দেওয়ার পর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও
তা হস্তান্তর করতে পারে না অনেক প্রতিষ্ঠান। এতে ডেভেলপারের দুর্নাম হচ্ছে। রিহ্যাবের
এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা রিহ্যাবের মেম্বার হবে না তারা যেন আবাসন ব্যবসায়
জড়িত হতে না পারেন। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সিটি মেয়র হিসেবে আমার প্রতিষ্ঠান একটি
কাজ করতে পারে। তা হলো ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করা। তবে এ প্রস্তাব আসতে হবে রিহ্যাবের
কাছ থেকে। ফ্ল্যাটের দাম মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে রিহ্যাব সদস্যদের প্রতি
অনুরোধ জানায়।
রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল
কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে একটি মাস্টার প্ল্যান করা হচ্ছে। এমন কোনও মাস্টার প্ল্যান
যেন তৈরি না হয় যা নিয়ে সবার প্রশ্ন থাকে। অতীতের মাস্টার প্ল্যান নিয়ে অনেক সমস্যা
ছিল। ফ্ল্যাট কেনা-বেচার ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি করা ও ভূমির রেজিষ্ট্রেশন
ফি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান তিনি।
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল কৈয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে
আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, রিহ্যাবের শামসুল আল
আমিন কাজল, রিহ্যাবের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ প্রমুখ
এবারের মেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্বপ্নিল আবাসন সবুজ দেশ, লাল সবুজের বাংলাদেশ’। মেলায় ৪৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
এর মধ্যে গোল্ড স্পন্সর হিসেবে আছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে উইকন প্রপার্টিজ লিমিটেড
ও আরএকে সিরামিকস বাংলাদেশ। কো-স্পন্সর হিসেবে অংশ নিচ্ছে ১৭টি প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন
সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রবেশের জন্য দুই ধরনের
টিকিটের ব্যবস্থা থাকছে। ‘সিঙ্গেল’প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা এবং ‘মাল্টিপল’প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল
টিকিট দিয়ে দর্শনার্থীরা চারবার প্রবেশ করতে পারবেন।