আজ ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ওয়ার্ল্ড হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্সের আহ্বানে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমরা অপেক্ষা করছি না’।
শরীরে হেপাটাইটিস নির্ণীত হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিতে হবে। ভাইরাল হেপাটাইটিস জনিত কারণে পৃথিবীতে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যায়। হেপাটাইটিস বি-সি, লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
হেপাটাইটিস (লিভারের প্রদাহ) সাধারণত এ, বি, সি, ডি, ই—এই পাঁচ ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। হেপাটাইটিস এ এবং ই খাদ্য ও পানীয়বাহিত। হেপাটাইটিস ই ভাইরাস গর্ভকালীন অবস্থায় গর্ভবতী মা ও সন্তানের জন্য জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। হেপাটাইটিস ডি সাধারণত হেপাটাইটিস বি-এর সঙ্গে তার প্রদাহ ক্রিয়া করে থাকে।
প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে হেপাটাইটিস বি ও সি। নীরবে দীর্ঘদিন ধরে লিভারের ক্ষতিসাধন করে লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার ও লিভার ফেইলিওর করে থাকে। আর এ জন্য এই দুই ভাইরাসকে নীরব ঘাতকও বলা হয়।
দেশে বেসরকারি হিসাবে হেপাটাইটিসে প্রতি বছর ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে প্রায় এক কোটি মানুষ আক্রান্ত। হেপাটাইটিস নিয়ে উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সারা বিশ্বে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে সংক্রমিত ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই জানেন না যে তার শরীরে এই ভাইরাস আছে।
এ ব্যাপারে ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও লিভার সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, হেপাটাইটিস প্রতিরোধে সচেতনতা খুবই বড় বিষয়। হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ লিভার ক্যানসারের প্রধান কারণ এবং বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান ১০টি কারণের একটি হলো লিভার সিরোসিস। লিভার ক্যানসার বিশ্বে এবং বাংলাদেশে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ। এই দুই ভাইরাসজনিত লিভার রোগের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৮ লাখ মানুষ এবং প্রতি ৩০ সেকেন্ড একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। তারা হেপাটাইটিস প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, মানবহিতৈষী সংগঠন ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।