মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে বেকার
নাগরিক তৈরি হচ্ছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বেকার তৈরির কারখানা হয়ে গেছে। এতে রাষ্ট্রের
সম্পদ ও মেধার অপচয় হচ্ছে। এজন্য আমাদের পাঠ্যসূচি পরিবর্তন হচ্ছে, যুগোপযোগী করা হচ্ছে;
যেন বেকার সৃষ্টি না হয়।
আজ শনিবার সকালে
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরের রাজবাড়ী মাঠে দুদিনব্যাপী চাকরি মেলার উদ্বোধন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে
মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘জেলা প্রশাসক অফিসে পিয়নের একটি নিয়োগ দিলে সেখানে দুই হাজার আবেদনের
মধ্যে এক হাজার থাকে এমএ পাস মানুষের। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে
পিয়ন হতে চায়। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করল, অথচ সেটা বাস্তবে কোনো কাজে লাগছে না।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ড. কুদরাত-এ-খুদা জাতীয় শিক্ষা কমিশন করেছিলেন।
যেখানে বলা হয়েছিল, সাধারণ শিক্ষার দরকার নেই। মুষ্টিমেয় লোক উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে।
অন্যরা টেকনিক্যাল শিক্ষা অর্জন করবে, ভোকেশনাল শিক্ষা নেবে। যে শিক্ষা একজন ব্যক্তি
কাজে লাগাতে পারবে। যেটা ব্যক্তির জীবনে কাজে লাগবে।’
গাজীপুরের জেলা
প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
কৃষি বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক
হাসানসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার প্রতিনিধিরা।
চাকরি মেলায়
চাকরি লাভের আশায় যোগ দেওয়া ভাওয়াল মির্জাপুরের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে এ ধরনের মেলা এটাই প্রথম।
কোনো রকম তদবির বা ঘোরাঘুরি-হয়রানি ছাড়াই এখানে সরাসরি চাকরিদাতাদের সঙ্গে কথা বলা
যাচ্ছে। তাদের চাহিদা জানা যাচ্ছে, সত্যিই অসাধারণ বিষয়। এখানে এসে অনেক কিছু জানার
সুযোগ পেয়েছি।’
মেলায় অংশ নেওয়া
বিডিজবস লিমিটেডের এজিএম (প্রোগ্রাম) মোহাম্মদ আলী ফিরোজ বলেন, ‘মেলায় চাকরি প্রার্থীদের উপস্থিতি
লক্ষ্যণীয়। অনেক সময় চাকরি প্রার্থী মনোনয়ন বোর্ডের সামনে গিয়ে অনেকে বোঝাতে চায় চাকরিটা
তার কত প্রয়োজন। আমরা তাদের বোঝাতে চেয়েছি,
আপনার সমস্যার কথা শুনে কেউ আপনাকে চাকরি দিবে না। এজন্য আপনার নিজেকে যোগ্য করে তুলতে
হবে।’
মেলার আয়োজক
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গাজীপুরে প্রচুর প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেখানে চাকরি পাওয়া সম্ভব।
চাকরি প্রার্থী ও চাকরিদাতার মধ্যে যাতে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, সেজন্য আমরা
এ মেলার আয়োজন করেছি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষিত প্রজন্ম প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের
সংস্পর্শে এসে নিজেদের ঘাটতিগুলো বুঝতে পারবে, কোনো মাধ্যম বা তদবির ছাড়াই কম সময়ে
চাকরি লাভের সুযোগ পাবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোও লাভবান হবে।’
ডিসি বলেন,
মেলায় বেক্সিমকো, স্কয়ার, নেসলে, ওয়ালটন, প্রাণ আরএফএল , বাটাসহ দেশসেরা ৪০টি মতো প্রতিষ্ঠান
অংশ নিয়েছে। আশা করছি রোববার মেলার শেষে এখান থেকে অন্তত ১২০০ লোকের চাকরির সুসংবাদ
দিতে পারব।