চট্টগ্রামের
চান্দগাঁওয়ে ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় ভারতীয় হাই-কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়মে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের উদ্যোগে ‘‘নলেজ পার্ক চট্টগ্রাম” এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এর আগে প্রতিমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নগরীর চান্দগাওঁয়ে নলেজ পার্ক এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি,
রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়
গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে চুয়েটে দেশের
প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক পূর্নাঙ্গ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের
পর মাত্র এক বছরেই সেখানে বেশ কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান
করা হয়েছে। সিংগাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে নির্মিত বীর
মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বাণিজ্যিক কার্যক্রম
পূর্ণদ্যোমে চলছে। অন্যদিকে চান্দগাঁও-এ এই নলেজ পার্কের পাশেই শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং
এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চট্টগ্রামে বাস্তবায়িতব্য
চারটি প্রকল্পের বাকি দুটি প্রকল্প সম্পন্ন হলে বন্দর নগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী
চট্টগ্রাম আইটি বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
বলেন, নতুন করে প্রাইমারিতে ৫ হাজার এবং স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আরো ১০ হাজার শেখ
রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে স্কুল পর্যায়ে ৩ শত “স্কুল অফ ফিচার” স্থাপন করা হয়েছে। আগামী ২০২৫
সালের মধ্যে আরো ১ হাজার স্কুল অফ ফিউচার বা স্মার্ট স্কুল স্থাপন করা হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর
স্থাপন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাই-কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা
দুই দেশের অত্যন্ত উন্নত সম্পর্ক আরো দৃঢ়করণ এবং আইসিটি সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশের
সঙ্গে অংশীদারীত্ব বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন,
বাংলাদেশের হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগসহ আইসিটি খাতে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত।
অদূর ভবিষ্যতে ভারত বাংলাদেশে তাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করবে বলে তিনি
মন্তব্য করেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি
শিক্ষার বিকল্প নাই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তি নির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে।
এখন থেকে আর চাকুরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকুরি দিবে।
চট্টগ্রাম-৮
আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে বেশ
কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম ডিজিটাল সিটি
হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমারা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
সভাপতির বক্তব্যে
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি.এস.এম জাফরউল্লাহ্
বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশে সরাকারি উদ্যোগে
৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার
স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে, ইতোমধ্যে ১১টি পার্ক স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে যেখানে ইতোমধ্যে
ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত হয়েছে আরো ১৭টি পার্ক।
প্রকল্প পরিচালক
এ.কে.এ.এম. ফজলুল হক জানান, প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও-এ ৯.৫৫১
একর জায়গায় এই ‘নলেজ পার্ক’ স্থাপনের কাজ শেষ হলে এখানে প্রায় ১০০০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর ৩০০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর
স্থাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ
ফখরুজ্জামান, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পার্কটি
নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। পার্কটিতে প্রতি বছর ৩ হাজার তরুণ তরুণী সরাসরি
প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে। পার্কটিতে ১ হাজার তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি
হবে। সেখানে আরো একটি সিনেপ্লেক্স ও একটি ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্টার্টআপ বিজনেস শুরু করার পাশাপাশি সুস্থ ও সুষ্ঠু বিনোদনের
সুযোগ সৃষ্টি হবে।