আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন জিয়া

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০১ আগস্ট ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফাহাদ মশিউর রহমান

Image

আগস্ট আমাদের শোকের মাস। ১৫ আগস্ট এক অভ্যুত্থানে আমরা হারিয়েছি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এটা অভূতপূর্ব, অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিয়োগান্ত। আমরা আগে ছিলাম পাকিস্তানি। এখন বাংলাদেশি। আমাদের পাকিস্তানবিরোধী রাজনৈতিক মনস্তত্ত্বে আছে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও দ্রোহ। পাকিস্তানে নিয়মিত বিরতিতে জারি হয় কোটালের রাজ। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশেও এ রকম দেখেছি তিনবার। ১৯৭৫, ১৯৮২ ও ২০০৭ সালে। এই সব কটির মধ্যে ব্যতিক্রম হলো ১৯৭৫। অন্য সব অভ্যুত্থান ছিল রক্তপাতহীন। ১৯৭৫ ছিল রক্তাক্ত। কেন এমন হলো?

১৫ আগস্ট নিয়ে অনেক কাটাছেঁড়া হচ্ছে। আরও হবে। ৫২ বছর হয়ে গেল। অনেক কিছুই জানা গেল না। বলা হয়ে থাকে, এটা শুধু কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার কাজ নয়, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্রটি আজও উন্মোচন করা গেল না।

                   এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, সে সময়ের সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। খুনিদের সঙ্গে সহযোগিতার পুরস্কার হিসেবে ১৫ আগস্টের ৯ দিন পরই জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হয়। এর পর জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রপতিসহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন এই জিয়াউর রহমান।

১৫ আগস্ট নিয়ে হাতের কাছে আছে দুটি বই, লরেন্স লিফশুলৎজের দ্য আনফিনিশড রেভল্যুশন আর অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের দ্য লিগ্যাসি অব ব্লাড। দুটো বইকে অভ্রান্ত ধরে নিয়ে মন্তব্য করতে থাকলে তো আর অনুসন্ধানের দরকার পড়ে না। ১৫ আগস্ট ও তার পরপর আমরা দেখেছি কয়েকজন মেজর-ক্যাপ্টেন বঙ্গভবনে বসে ছড়ি ঘোরাত। তাদের নেতা ছিলেন রশিদ আর ফারুক। মসনদে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ। তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হন জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানী। তার নিচেই ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান। এটা অনুমিতই ছিল যে মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে সরিয়ে নতুন একজনকে সেনাপ্রধান করা হবে। এটি করতে ৯ দিন লেগে গেল। সেনাপ্রধান হিসেবে মোশতাক, ওসমানী, রশিদ ও ফারুকের প্রথম পছন্দ ছিলেন খালেদ মোশাররফ। ওসমানী জিয়াউর রহমানকে খুব অপছন্দ করতেন। কিন্তু অভ্যুত্থানকারীদের বেশির ভাগের পছন্দ হিসেবে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করা হয়।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ভোরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ঘাতক মেজর ডালিম ভোর ৬টার দিকে বেতার ঘোষণায় জানায়, শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে এবং খোন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। সকাল প্রায় ৮টায় খোন্দকার মোশতাক বেতারে প্রদত্ত ভাষণে বলেন- তার উপর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের লাশ ধানমন্ডির বাড়িতে পড়ে থাকা অবস্থাতেই হত্যাকাণ্ডের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার সদস্য কয়েকজন বাদে প্রায় সবাই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী মোশতাক মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে যোগদান করে। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধান এবং বিডিআর, পুলিশ, রক্ষী বাহিনী প্রধানরা পৃথকভাবে বেতারে খুনি সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন।

হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহকর্মী ও মন্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই ঘাতক সরকারের মন্ত্রী হন। সেনাবাহিনী প্রধান কে এম সফিউল্লাহ ও উপপ্রধান জিয়াউর রহমান দুজনকেই বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি প্রমোশন দিয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল বানিয়ে সেনাপ্রধান ও উপপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে অদ্যাবধি কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া না গেলেও হত্যাকাণ্ডের পর কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হননি। অবশ্য তিনি গত সাড়ে চার দশকে বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করেছেন- তার পদস্থ সহকর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন আবার কেউবা প্রতিরোধের ব্যাপারে তাকে সহযোগিতা করেনি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার ১০ দিনের মাথায় সফিউল্লাহকে সরিয়েও দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্র খুবই উল্লসিত হয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রবীণ জননেতা মওলানা ভাসানী সর্বাগ্রে ঘাতক মোশতাক সরকারকে সমর্থন দেন। তথাকথিত রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরিত তারবার্তায় নতুন সরকারের প্রতি অভিনন্দন ও তার পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান। মওলানা এই পরিবর্তনকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে দেশ হতে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অবিচার দূর করার আহ্বান জানান। (ইত্তেফাক, ১৭.৮.১৯৭৫)

যেই রক্ষীবাহিনীর জন্যে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি সেনাবাহিনীর অনেকের ক্ষোভ ছিল, সেই রক্ষীবাহিনী বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটি গুলিও ছোড়েনি। এখানে উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট সকালে সশস্ত্র ডালিমচক্র সেনাপ্রধানকে বেতার ভবনে নিয়ে যেতে এলে সেনাপ্রধান প্রতিরোধের আশায় ৪৬ ব্রিগেডে যান। সেখানে গিয়ে দেখলেন, জনৈক ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পদতলে পিষ্ট করছে আর জোয়ানরা সরকার পতনে উল্লাস করছে।

হয়তো কেউ বলবেন, বঙ্গবন্ধুর লাশ বত্রিশ নম্বরে- রাস্তায় সশস্ত্র আর্মি, ট্যাঙ্ক নিয়ে ঘাতকের মহড়া, এর মধ্যে কীভাবে প্রতিরোধের ডাক দেয়া সম্ভব। তবে এটাও ঠিক রাজধানী ছাড়া সারা বাংলাদেশে কিন্তু আর্মি বা ট্যাঙ্কের মহড়া ছিল না। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আর্মির হত্যাকারী ওই ক্ষুদ্র অংশ ভয়ে ভয়ে ছিল। ওরা ঊর্ধ্বতনদের বলছিল- আমরা দেশের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আপনারা পরিস্থিতি সামলান। উপ-প্রধান জিয়াউর রহমানসহ পাকিস্তান প্রত্যাগত প্রায় সকল সেনা কর্মকর্তা ঘাতক চক্রের প্রতি সমর্থন, আর সিজিএস খালেদ মোশাররফসহ আরও অনেকের যা হবার হয়ে গেছে এই মনোভাব- সর্বোপরি রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী পদে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীরাই শপথ নেয়ায় জনগণ যেমন বিভ্রান্ত হয়, তেমনি খুনি চক্রও সময় পেয়ে যায়।

যে কারণে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ হয়নি তা হচ্ছে: ১. বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে হত্যা করা হয়েছে- এ কথা প্রথমে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেনি; ২. আবার হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতায় বড় বড় নেতাসহ কেউ কেউ হতভম্ব ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন; ৩. হত্যাকাণ্ডের পর পর বঙ্গবন্ধুর সহকর্মীরাই খুনি সরকারের রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়। তাছাড়া সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীপ্রধান, রক্ষীবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান, পুলিশ বাহিনীসহ সকল প্রধানদের খুনি সরকারের প্রতি আনুগত্য ও সমর্থনের ঘোষণা বেতার-টিভিতে প্রচারিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্যাঙ্ক মোতায়েন, কারফিউ জারি ও সঙ্গীন উঁচিয়ে সেনা টহলে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যেসব নেতারা খুনিদের সমর্থন করেননি তাদেরকে গৃহবন্দি করা হয়। এসব কারণেই খুনিচক্র তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়নি।

মোশতাক-ফারুক-রশীদ-ডালিম চক্র বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যা করেই ক্ষান্ত থাকেনি, ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতিও তারা অবমাননা করেছে। বঙ্গবন্ধুর মরদেহ ১৫ আগস্ট সারা দিন, ১৫ আগস্ট দিবাগত রাত শেষে ১৬ আগস্ট বিকেলে গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যাওয়া হয়। আর্মির যে কজন বঙ্গবন্ধুর মরদেহ টুঙ্গিপাড়া নিয়ে যায় তারা দাফন-কাফন অর্থাৎ ইসলামি নিয়ম-কানুন পালন না করেই লাশ কবরস্থ করতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্থানীয় মৌলবির চাপের মুখে কফিন খুলে বঙ্গবন্ধুর মুখ দেখানো হয় এবং খুব দ্রুত ১০/১৫ জনের উপস্থিতিতে জানাজা দিয়ে লাশ দাফন করা হয়। আর্মির উদ্যত আচরণের কারণে স্থানীয় লোকজন বঙ্গবন্ধুর লাশ দেখাতো দূরের কথা- তারা আশেপাশের গ্রাম ছেড়ে দূরে চলে যায়। বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্যদের লাশ বনানী গোরস্তানে ১৫ আগস্ট দিবাগত শেষ রাতে জানাজা-গোসল ছাড়াই কবরস্থ করা হয়।

আরেকটি আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো বঙ্গবন্ধুর আর্মি, পুলিশ, বিডিআর, প্রায় তিনশ জন সংসদ সদস্য, সহকর্মী যারা সেদিন রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী হলেন- তাদের অন্তত একজনও শেষবারের মতো বঙ্গবন্ধুর মুখ দেখার সাহস করেননি। অথচ এই বঙ্গবন্ধুর কারণেই বাংলাদেশ হলো- ক্যাপ্টেনরা জেনারেল হলো- অনেক অখ্যাত লোক খ্যাত হলো, মন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি হলো।

হত্যা-ষড়যন্ত্রে জড়িত জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, তাহের, মঞ্জুরসহ আরও অনেকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। মাহবুব আলম চাষী- দেশের বাইরে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। প্রায় দুই যুগ চোরের মতো গৃহবন্দি এবং দুর্নীতির দায়ে কয়েক বছর জেল খেটে ১৯৯৬-এর মার্চে বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের মৃত্যু হয়েছে। ৩৫ বছর পরে হলেও ২০১০-এর ২৮ জানুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধুর ৫ ঘাতকের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

এতসব কিছুর পরেও যতদিন মানুষের হৃদয়ে স্পন্দন থাকবে, বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে- হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ততদিন শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে।


আরও খবর



কলেরার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বৈশ্বিক কর্মসূচি ঘোষণা ডব্লিউএইচও’র

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সঙ্গে পানিবাহিত এই প্রাণঘাতী রোগটি ঠেকাতে বৈশ্বিক কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বড় আকারের টেস্ট কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

ডব্লিউএইচওর হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ লাখ ৭৩ হাজার জন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ তথা ৭ লাখ। চলতি ২০২৪ সালে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আলামত পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত দুতিন বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা কলেরার অনাকাঙিক্ষত ও উদ্বেগজনক প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করছি। এই প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কলেরার বৈশ্বিক টেস্ট কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো কলেরা নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা এবং নিয়মিত নজরদারি এবং কলেরা টেস্ট বিষয়ক সক্ষমতা বাড়ানো।

কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কলেরা টেস্টের সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে। প্রাথমিকভাবে মালাউই, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, জাম্বিয়াসহ মোট ১৪টি দেশে পাঠানো হবে সরঞ্জাম।

এ কর্মসূচিতে অংশীদার হিসেবে আন্তর্জাতিক টিকা সহায়তা সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি), জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং কলেরা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বৈশ্বিক সংস্থা গ্লোবাল টাস্কফোর্স অন কলেরা কন্ট্রোল রয়েছে বলেও জানায় ডব্লিউএইচও।

গ্যাভির কর্মসূচি বিভাগের প্রধান নির্বাহী অরেলিয়া এনগুয়েন এক বিবৃতিতে বলেন, কলেরা প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে তৎপরতা চলছে, এ কর্মসূচি তাকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।


আরও খবর



হামলার সময় ইসরায়েলকে রক্ষায় সহযোগিতা করেছে সৌদি!

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরানের ছোড়া ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে সৌদি আরব। সৌদিতে ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন নিউজ।

সৌদি রাজপরিবারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সৌদি আরব নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের পাশাপাশি ইসরায়েল,যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক জোটকে সহযোগিতা করেছে।

এই সহযোগিতার কারণ হিসেবে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সৌদি আরব মনে করে, গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরান এই সংঘাত থেকে ফায়দা তোলার পরিকল্পনা করছে এবং সম্প্রতি যে হামলা তেহরান পরিচালিত করেছে, তা সেই পরিকল্পনার অংশ। সৌদি আরব কখনও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। সেই সঙ্গে যেসব দেশ যদি সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়, তাদেরকেও সমর্থন করে না।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রহিমিও ছিলেন।

হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল তা পরিষ্কার। গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।


আরও খবর



তামান্না ভাটিয়াকে সাইবার সেলে তলব

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির আলোচিত অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া এখন বলিউডেরও পরিচিত মুখ। বেশ দাপুটের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। ক্যারিয়ারে দুর্দান্ত সময় পার করছেন। তবে সম্প্রতি বিপাকে পড়েছেন এ তারকা। তাকে তলব করেছে ভারতের মহারাষ্ট্র সাইবার সেল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সাইবার সেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহাদেব অনলাইন গেমিং এবং বেটিং অ্যাপ্লিকেশনের একটি সহায়ক অ্যাপে আইপিএল ম্যাচ দেখতে কথিত প্রচারের জন্য তলব করা হয়েছে তামান্নাকে। দক্ষিণী এই নায়িকাকে আগামী ২৯ এপ্রিল মহারাষ্ট্র সাইবার সেলে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে গত বছরও কিছু আইপিএল ম্যাচ অ্যাপে অবৈধভাবে স্ট্রিম করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগও রয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে তার বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য ডাকা হয়েছে।

এ মামলায় ইতোমধ্যে মহারাষ্ট্র সাইবার সেল গায়ক বাদশা, অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের ম্যানেজারদের বক্তব্য নিয়েছে। আর মহাদেব অ্যাপটি অবৈধ অর্থ লেনদেন এবং বাজি ধরার জন্য বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার মনিটরিংয়ে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, তামান্না ভাটিয়া বাহুবলী এবং নেটফ্লিক্স অ্যান্থলজি লাস্ট স্টোরিজ-২ এর জন্য দর্শকমহলে বহুল পরিচিত।


আরও খবর



মূল্যবান খনিজ জমিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ডংগিংয়ে গতবছর নতুন জ্বালানি তেলের একটি ডিপো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে চীন। আর চলতি বছরের শুরু থেকেই সেখানে নজরে আসছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ব্যস্ততা। কৌশলগত জ্বালানি মজুত হিসেবে অভিহিত ডংগিংয়ের এ বিশাল তেলের ডিপোর ধারণ ক্ষমতা ৩ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল। মূলত রাশিয়া থেকে ভর্তি হয়ে আসা ট্যাংকারগুলোই এখানে খালাস করছে তাদের তেল। দ্রুত খালাস করেই নতুন চালান ভরতে চীনা ট্যাংকারগুলো ফের ছুটছে রাশিয়ার বন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে।

যেভাবে তেলের মজুত বাড়াচ্ছে চীন

দিন দিন রাশিয়া থেকে চীনের এ জ্বালানি আমদানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে ২১ লাখ ব্যারেল তেল মস্কো থেকে আমদানি করছে বেইজিং। টানা দুবছর ধরে বেইজিংয়ের জ্বালানি সরবরাহের প্রধান উৎস মস্কো। এতো বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত জ্বালানি তেলের মজুত বর্তমানে উঠানামা করছে ২৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ব্যারেলের মধ্যে।

যেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জ্বালানি মজুতের পরিমাণ ৩৬ কোটি ব্যারেলের আশপাশে। শান্তিপূর্ণ সময়ে চীনের দৈনিক জ্বালানি চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময়ের তেলের মজুত নিজের হাতে ধরে রেখেছে চীন।

চীনের তেলের মজুত গড়ে তোলার এ পরিসংখ্যানই পশ্চিমা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক মহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য যথেষ্ট। তাদের ধারণা, সামনে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা আঁটছেন চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর অংশ হিসেবেই দ্রুত ডংগিংয়ের মতো এসব ডিপোকে তেলে ভর্তি করছে বেইজিং।

অন্যান্য খনিজের মজুতও বাড়াচ্ছে চীন

শুধু জ্বালানি তেলই নয়, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কৌশলগত প্রায় সব শিল্প কাঁচামালের মজুত গড়ে তুলছে বেইজিং। পশ্চিমা মহলের ধারণা, ভবিষ্যতে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কিংবা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকেই এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বেইজিংকে সুযোগ করে দিচ্ছে ডিসকাউন্ট দরে মস্কো থেকে তেলসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ব্যাপারে। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি অনেক সস্তায় মস্কো থেকে নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ কিনতে সক্ষম হচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলো। আর চীনের এ মূল্যবান ধাতু কিনে মজুত করার প্রবণতার গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়ার নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার ওপর আরোপ করা সর্বশেষ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের এক-তৃতীয়াংশই চীনের কব্জায়

এসব ধাতুর পাশাপাশি বেইজিংয়ের নজরে রয়েছে বর্তমান যুগের অন্যতম মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে পরিচিত লিথিয়ামের ওপরও। ব্যাটারি শিল্পের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে চীন মজুত বাড়িয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন দেশে থাকা লিথিয়ামের খনি থেকে শুরু করে পরিশোধনাগার পর্যন্ত কিনে ফেলতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গত মার্চে জানায়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বের সব লিথিয়াম সরবরাহের তিন ভাগের একভাগই চলে যাবে চীনের কব্জায়।

অবশ্য চীন অনেক আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ধাতু ও বিরল মৃত্তিকার মতো খনিজ পদার্থের মজুত গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে মার্কিন খনি বিষয়ক দফতর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের হাতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, কপার, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, ইরিডিয়াম, ট্যানট্যালাম, টিন, টাংগেস্টন, জিংক ও জিরকোনিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা পদার্থের মজুত রয়েছে। এরপরের বছরগুলোতে চীন এসব খনিজ মজুত করার তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।

চীন স্বর্ণের মজুদও বাড়াচ্ছে, টান পড়ছে সারা বিশ্বে

শুধু এসব খনিজ পদার্থই নয়, বরং স্বর্ণের মজুতও দিন দিন বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। আর এ স্বর্ণ শুধু সরকারই কিনছে না, বরং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বেড়ে গেছে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা। মূলত চীনাদের এ স্বর্ণ কেনার প্রবণতাই বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দামকে রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ডলারে।

মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনেই চীনের এ স্বর্ণ কেনার উদ্দেশ্য বলে কেউ কেউ মনে করছে। তবে এর পেছনে দেশটির জনগণের একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা আঁচ করতে পেরেই চীনের এলিট সমাজ তাদের সম্পদ দেশের বাইরে জমা করার বদলে দেশেই নিজের হাতের নাগালে রাখতে চাইছেন। আর স্বর্ণ কিনে জমা রাখার মাধ্যমেই তা সবচেয়ে ভালোভাবে সম্ভব। অর্থাৎ চীন যে তাইওয়ানকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে, সে বিশ্বাস দানা বাঁধছে চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

টার্গেট তাইওয়ান, ডেডলাইন ২০২৭

জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুত চীন যেভাবে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে নিচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের সামরিক বাহিনীকেও ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করছে বেইজিং। এমন এক সময়ে এই সামরিকীকরণ চলছে যখন তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বেরও উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আর চীনের এসব প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন সামরিক মহল। মার্কিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন শি জিনপিং তাইওয়ান দখলে তার সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আর এজন্যই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত নৌবাহিনীর সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুলিনো বলেন, অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চীন সচেতনভাবে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। যা কিনা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ক ব্লগিং সাইট ওয়ার অন দ্য রকস’-এ নিজের এক লেখায় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক স্টুডম্যান বলেন, শি জিনপিং (চীনা প্রেসিডেন্ট) তার দেশকে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য এক বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য শি জিনপিং চীনা সমাজকে সামরিকীকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বর্মে মুড়িয়ে ফেলছেন।’

এর অংশ হিসেবেই চীনা কর্তৃপক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামালের একটি কৌশলগত মজুত গড়ে তুলছে বলে মনে করেন মার্কিন এ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই বেইজিং এই মজুত গড়ে তুলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাইক স্টুডম্যান আরও বলেন, ২০২২ সালে চীনের শীর্ষে নেতৃত্বের যে রদবদল, সেখানেও শি জিনপিংয়ের এ যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে। বেছে বেছেই তাইওয়ান সম্পর্কে অভিজ্ঞদের নিজের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে চীনের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনকেই মনে করা হয় তাইওয়ান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

এমনকি তাদের মধ্যে সামিল রয়েছেন এমন একজন সামরিক কর্মকর্তা, পলিটব্যুরোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে তার আগের ধাপ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না তিনি। তাইওয়ান বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতাই পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দেয় তাকে। এ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সাবেক কমান্ডার। আর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোন সামরিক অভিযানের সার্বিক দায়িত্ব প্রথমে এই ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের ওপরেই বর্তাবে।

যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা বিশ্ব

তবে চীন যখন দ্রুত তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে, তখনও চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা মহল। জ্বালানি ও কাঁচামালের আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বেইজিংকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে এখনও দৃশ্যমান কোন শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো চিপ থেকে চীনকে বঞ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। বরং চলতি মাসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চীন সফরের মধ্যদিয়ে এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে যে, ইউরোপীয়রা চীনের সঙ্গে বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী।


আরও খবর



দেশের সব আদালতে চালু হচ্ছে ওয়ান স্টপ সার্ভিস

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

উচ্চ আদালতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস বাস্তবায়িত হয়েছে। আগে জামিন আদেশের কপি পেতে অনেক সময় ব্যয় হত। এখন তা সঙ্গে সঙ্গেই আপলোড হয় এবং আদেশ যথাস্থানে পৌঁছে যায়। উচ্চ আদালতের এই সুবিধা দেশের সব পর্যায়ের আদালতে পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। বাংলাদেশ বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিচার বিভাগ আরো শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

বুধবার (১ মে) দুপুরে সিলেটে আদালত চত্বরে ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে তিনি সিলেট সিটি করপোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এসব অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

তিনি বলেন, আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের সুবিধাজনক বসার স্থান হিসেবে সিলেটে ন্যায়কুঞ্জের উদ্বোধন করা হলেও আদালতে আসা সব মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারবেন। সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হলেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সম্মিলিতভাবে কাজ করলে বিচার বিভাগ পূর্ণতা লাভ করে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চান তিনি।


আরও খবর
মুক্তি পেতে যাচ্ছেন মামুনুল হক

মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪