
এবার বোরো ধান
চাষে বেড়েছে খরচ। গতবছরের চেয়ে এবার দফায় দফায় বিদুৎতের দম আর জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের
কৃষি পন্যের দাম বাড়াতে এবার বোরো ধান উৎপাদন করতে কৃষকদের গুনতে হচ্ছে দিগুন টাকা।
এতে ব্যায় বাড়েনি বাড়ছে খরচ। তাই কৃষকদের এখন বোরো ধান উৎপাদন করতে যেয়ে হিমসিম অবস্থা
।
চুয়াডাঙ্গা
মাঠ ঘুরে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার মাঠে মাঠে এখন নীল সবুজের অপার জমি নিয়ে বোরো ধান।
আর তাই প্রতিটা ধান গাছে যেন কৃষকদের স্বপ্ন। তবে এই স্বপ্নটা এ জেলার কৃষকদের কাছে
বরই অপ্রিয় এখন। একদিকে যেমন সব ধরনের নিত্য পন্যের দাম বেশি। অন্যদিকে আবার দফায় দফায়
দাম বাড়ছে বিদুৎতের। এতে কৃষকদের সেচ খরচ যেন দিগুন হারে বাড়ছে। আবার কৃষি পণ্যসহ সব
ধরনের সারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে এসব কৃষক। এতে এবার বোরো ধান চাষে যেখানে এক বিঘা
জমিতে খরচ হতো ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। সেখানে এবার খরচের আশঙ্কা করা যাচ্ছে প্রায় ১৬
হাজার টাকা। তাই এবার বোরো ধান উৎপাদন নিয়ে কৃষকদের যেন মহা দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তাই
জমিতে সেচ দিতে গেলে খরচের দিকে চিন্তার করতে গেলে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।
তাই কৃষকদের
দাবি, বিদুৎতের দামটা কিছুটা সহনিয় পর্যায়ে করলে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকরা বাচঁবে।
আর এই রকম দিন দিন সব কিছুর দাম বাড়লে তারা তাদের ফসলের উৎপাদন করে ঘড়ে তুলতে গেলে
তাদের কাছে অবশিষ্ট আর লাভের পরিমাণ কিছুই দাড়াই না তাদের। তাই কৃষকদের বাচাঁতে হলে
সরকারের এগিয়ে আসার আহবান জানান এ জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা।
চুয়াডাঙ্গা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবার বোরো আবাদে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬
হাজার ৭১০ হেক্টর । আর ৩০ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে । আর বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
কথা হয় চুয়াডাঙ্গা
সদর উপজেলা সুবদিয়া গ্রামের আসাদুলের সাথে জানতে চাইলে তিনি আজকের দর্পণকে বলেন, আগে
এক বিঘা জমিতে খরচ হতো ধান চাষ করতে ১২ হাজার টাকা। কিন্তু এখন তেলের দাম আবার সারের
দাম বেশি। এখন আবার বিদুৎতের অস্বাভাবিক দামে আমরা সেচ দিতে পারছি না। প্রচুর খরচ পরে
যাচ্ছে। এবার ব্যয় ভুহুল খরচ এই বোরো আবাদে। এরমকম করে যদি চাষে খরচ বাড়ে তাহলে আমাদের
বছর শেষে আর কিছুই থাকে না।
অপর কৃষক সাইদুল
ইসলম বলেন, একদিকে যেসব নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম। আবার অন্যদিকে কৃষি পণ্যের দাম
এই যেন আমাদের গলার কাটা। প্রতিবছর বোরো আবাদ নিয়ে একটা স্বপ্ন থাকে আমরাদের ভালো লাভ
পাব। তবে বিদুৎতের দাম বাড়ায় এবার মনে হয় ভালো লাভ আর পাব না। ধান উৎপাদন শেষ করে ঘরে
তুলে খরচ যেন সমান মতো দাড়াবে। তাই কৃষি পণ্যের দাম কমানোর দরকার।
আর এদিকে চুয়াডাঙ্গা
আলুকদিয়া ইউনিয়ন কৃষক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুল আলম বলেন, এখন আসলে বোরো আবাদে
আয় বাড়েনি বেড়েছে ব্যয়। আর কৃষকদের এখন বোরো আবাদে ব্যাপক খরচ বেড়েছে। আর খরচ কমানোর
জন্য কৃষকদের নিয়মিত প্রনোদনা দিতে হবে। তাহলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল থেকে লাভবান
হতে পারবে। আর এইটা করার জন্য কৃষি দপ্তরকে এগিয়ে আসতে হবে। আর আমাদের কৃষক জোট থেকে
কৃষকদের চাষের খরচ কিভাবে কমানোর যায়। সেজন্য দাবি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি
এখনো বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
চুয়াডাঙ্গা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, আমাদের বিশ্ব পরিস্থিতির
সাথে সব কিছুই সম্বনয় করতে হবে। যে কারণে বোরো আবাদের যেখানে সেচ ২০ টা লাগার কথা।
সেখানে আমরা ১৬ টা সেচ দিতে বলছি কৃষকদের। আর বোরো আবাদের জমি ভিজা এবং শুকনো এই দুইটা
রাখতে হবে পরিমাণ মতো। এটা করলে ভালো ফলন হবে বোরো আবাদে। আর কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি
খরচ কমানোর জন্য। আমরা পরিকল্পনা করছি যাতে করে কৃষকরা লাভবান হয়।