আজঃ মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩
শিরোনাম

বৌদ্ধ গ্রামের ২’শ বছরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দোকান ঘর নির্মাণ

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | ১৭১৫জন দেখেছেন
নোয়াখালী প্রতিনিধি


Image

নোয়াখালীর সেনবাগের সংখ্যালঘু বৌদ্ধ গ্রামের প্রায় ২শ বছরের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দোকান ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে এক বিত্তশালী প্রবাসীর বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রধান রাস্তার সম্মুখভাগের এক টুকরো জায়গা কিনে প্রায় ২৫০ বছরের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকমান হোসেন নামের এক প্রবাসী।

গ্রামবাসীর দাবী পূর্বে ঐ জমি বৌদ্ধদের ছিল, তাই পথের জন্য কখনও ঝামেলা হয়নি। কালক্রমে হাত বদল হয়ে মুসলিমদের কাছে বিক্রি হয়। আগের মালিকও বাঁধা দেননি। কিন্তু বিগত ৩/৪ মাস আগে গোপনে লোকমান হোসেন কিনে নিয়ে খতিয়ান করেই রাস্তাটি বন্ধ করে দেন।

সেই সময় এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে এসিল্যান্ড সশরীরে এসে বলেন প্রাচীন জনগোষ্ঠীর পথটি কখনও বন্ধ হবেনা। কিন্তু এখন অজ্ঞাত কারণে, বৌদ্ধ গ্রামের কয়েকজনকে অফিসে ডেকে নিয়ে ৩টি শর্ত জুড়ে দেন ১) জায়গাটি কিনে নিতে হবে ২) জায়গার পরিবর্তে জায়গা দিতে হবে ৩) অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার পরামর্শ দেন। তাও ৩ দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এসিল্যান্ডের এমন মন্তব্যে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় বৌদ্ধবাসীরা।

স্থানীয় গ্রামের নেতা বিপ্রসেন বড়ুয়া মাস্টার বলেন, এখানের বৌদ্ধরা খেটে খাওয়া মানুষ। অনেকের মাথার ঠাই টুকুও নেই। গ্রামের চলাচলের কথা ভেবে যার যার জায়গা পড়ে তা ছেড়ে দিয়েছে। জনগোষ্ঠীর এই টাকা দিয়ে পথটুকু কেনার সামর্থ্য নেই।

অভিযুক্ত প্রবাসী লোকমান হোসেনের সাথে ফোনে কথা বলে জানা যায়, তিনি টাকা দিয়ে জমি কিনে তা খতিয়ান করেছেন। সরকারী নিয়মকানুন মেনেই সব কিছুই করেছেন। তিনি রাস্তার জায়গা দিবেন না। তার জায়গার সাথের জায়গা দিলেই সে রাস্তা দিবে। অন্যথা সে অন্য কোন শর্ত মানবেন না।

তবে এসি ল্যান্ড তানজিম আলম তুলিকে কয়েক বার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, আমি এতদিন ছুটিতে ছিলাম। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এসিল্যান্ড দায়িত্ব পালন করেছেন। আগামী রবিবার এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলেই এই ব্যাপারে তথ্য দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯১০ সালে উক্ত বৌদ্ধ গ্রামে মতইন বৌদ্ধ বিহারটি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু ভারতের বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার ইস্যুতে উক্ত বড়ুয়া পাড়াসহ বৌদ্ধ বিহারটিতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন উগ্রবাদীরা। তাই ১৯৯২ সালে নিরাপত্তার খাতিরে তৎকালীন ১০ম সঙ্ঘরাজ জ্যোতিপাল ভিক্ষুর তত্ত্বাবধানে গ্রামের অভ্যান্তরে পুনঃনির্মিত হয়। তখন থেকে এখনও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে জীবন যাপন করে আসছে অন্যদিকে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর র‍্যাব ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় বৌদ্ধরা ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পাদন করে আসছে।


আরও খবর