বরগুনা পৌরসভার ৬০ শতাংশ গভীর নলকূপ অচল হয়ে পড়ায় শহরে সুপেয় খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ৬৫৭ টি টিউবওয়েল মধ্যে ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ টিউবওয়েল অকার্যকর হয়ে গেছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় ঘনবসতির মধ্যে টিউবওয়েল খুবই সংকট। তার মধ্যে যেসব জায়গায় টিউবওয়েল রয়েছে সেখানে রয়েছে দীর্ঘ লাইন, কোন কোন টিউবলে এক কলসি পানি ভরতে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাচ্ছে! ভালো করে পানি উঠছে না! এমত অবস্থায় গভীর নলকূপ সচল করার দাবি জানান পৌরবাসী।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু প্রভাব ও ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় জেলা বরগুনার নলকূপের পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এরফলে বরগুনা পৌরসভার প্রায় ৬০% গভীর নলকূপ অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
বরগুনা পৌরসভার ওয়াটার সুপার সাইফুল ইসলাম শিপন জানান, বরগুনা শহরবাসীর মধ্যে পানি সরবরাহের লক্ষ্যে বিগত বছরগুলোতে পৌর এলাকায় ৬৫৭টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩০০টি নলকূপ মাটির ৮০০ ফিট ও ২০০ টি ৯০০ ফিট গভীরে স্থাপন করা হয়েছিলো। এগুলো এখন অকার্যকর হয়ে আছে। প্রায় ১৫৭ টি নলকূপ মাটির ৯৫০ ফিট গভীরে স্থাপন করা হয়েছিলো, যা এখনও সচল আছে।
পঁয়ষট্টি হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত বরগুনা পৌরসভায় বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা পূরণের জন্য মোট ২০০০ গভীর নলকূপ প্রয়োজন। যা বর্তমানে স্থাপিত নলকূপের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। গত দুই বছরে বরগুনা পৌরসভায় নতুন ২০ টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে আরও ৮০০ টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, পৌরসভার মানুষের খাবার পানির স্থায়ী সমাধানের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উৎসের উপর চাপ কমিয়ে সারফেস ওয়াটার প্রক্রিয়াজাত করে সরবরাহ করার উপর জোর দেন।
পৌরসভায় বাড়ির নারীরাই মুলত পরিবারের খাবার পানি সংগ্রহ করে এবং যে কটি গভীর নলকূপ সচল আছে তা থেকে পানি সংগ্রহ করতে অনেক দূর হেটে, দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে বলে জনান পৌর শহরের বেশকিছু নারী বাসিন্দা।
পৌর মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে ১২০০-১৩০০ ফুট লেয়ারে বসানো যে কয়টি টিউবওয়েল আছে সেগুলোতে পানি উঠছে। পূর্বে ৭০০-৮০০ ফুট লেয়ারে বসানো হয়েছিল সেগুলোতে পানি উঠছে না, এই টিউবওয়েল গুলো পুরাই অচল হয়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন নলকূপের পানি খেয়ে ডায়রিয়ার সহ বিভিন্ন রোগবালাইতে জরিয়ে পরছেন। এতে পৌর নাগরিকরা পুরাই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।