ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বরগুনায় ৮ নং মহাবিপদ সংকেত গেলেও কোনো আঘাত না করলেও মোখার পরের দিন কালবৈশাখীর ঝরে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড করে গেছে কয়েকশ গাছপালা ও ঘর বাড়ি। এর প্রভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
সোমবার (১৫ মে) রাত ৯টার দিকে বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তাণ্ডব চালিয়েগেছে কালবৈশাখী ঝড়।
জানা যায়, রাতে হঠাৎ করে এই ৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে বরগুনা জেলা সদর আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটাসহ অন্যান্য উপজেলার শতাধিক গাছপালা ও অনেক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এ সময় ঝড় ও তুমুল বৃষ্টিতে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কলা, মুগ ডাল ও ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ সময় ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার বরগুনা সদরের আয়লা-পাতাকাটা, পুরাকাটা, বুড়িরচর, তালতলীর বগি, আগা ঠাকুরপারা, এটেন পারা, বেতাগীর বিবিচিনি, মোকামিয়া, ফেরিঘাট এলাকা, পাথরঘাটার আমড়াতলা, কাকচিড়া, লেমুয়া, হাতেমপুর, টেংরা ও পদ্মা ভাঙ্গন ও অন্যান্য উপজেলাসহ প্রায় ১০০ গ্রামের মানুষের ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বেগে বয়ে চলা বাতাসে উড়ে গেছে ঘরের চালা। নষ্ট হয়েছে ঘরে রতি খাদ্যসামগ্রী। লণ্ডভণ্ড হয়েছে ঘরের আসবাবপত্র। ছোট-বড় অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের তার ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের অসংখ্য মিটার। রাস্তায় গাছ পড়ে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বসবাস করছে খোলা আকাশের নিচে।
সদর উপজেলার আবু সালেহ বলেন, হঠাৎ করে কালবৈশাখীর ঝড় এসে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। তবুও সবকিছু মিলিয়ে আল্লাহ অনেক ভালো পেয়েছে আমাদের।
পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়ানের আমড়াতলা গ্রামের বাসিন্দা জহির বলেন, রাতে হঠাৎ করে পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যে ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। গাছপালা ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হাতেমপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম জামাল বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে যেয়ে দেখি বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে রান্না ঘরের ওপর পরে আছে। তবে অল্পের জন্য আমরা প্রাণে বেঁচে যাই।
পল্লী বিদ্যুতের পাথরঘাটা উপজেলা এজিএম মিজানুর রহমান বলেন, রাতের ঝড়ে উপজেলার কাকচিড়া, কামারহা, পদ্মা, রুহিতা, হাতেমপুর, রায়হানপুরসহ একাধিক এলাকায় গাছ পরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা কাজ করছি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সঞ্জীব দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় মুখ হওয়া শেষ হওয়ার পর পরই না জানিয়ে কালবৈশাখীর তান্ডব বেশ মানুষকে ক্ষতি করে চলে যায়। তবে আল্লাহ অনেককেই রক্ষা করেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রশাসনকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।