তরমুজ চাষে
ব্যস্ত সময় পার করছেন বরগুনা জেলার কৃষকরা। গতবছর তরমুজের ভালো দাম পাওয়ায়, এবার লক্ষ্যমাত্রার
চেয়ে বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। তবে তরমুজ চাষের বীজ, কীটনাশক
ও সারের দাম বাড়ায় ক্ষোভ জানান কৃষকরা।
সারাদেশে যে
পরিমাণ তরমুজের চাহিদা রয়েছে তার একটি অংশ আশে বরগুনা জেলা থেকে। এছাড়া এই অঞ্চলের
তরমুজ সুমিষ্ট হওয়ায়, দেশজুড়ে এর বাড়তি চাহিদা রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার
বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান কাটার পরপরই পরিবার-পরিজন নিয়ে মাঠে কাজ করছেন
কৃষকরা। মাঠের পর মাঠ চাষাবাদ করে তরমুজ বীজ বপনের জন্য গর্ত তৈরি করে রেখেছেন। এ কাজ
করতে ঘরের নারী ও শিশুরাও বসে নেই। তারাও পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছে।
বরগুনা জেলা
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর ১০ হাজার, আমতলী ০৫ হাজার, তালতলী ০২ হাজার
এবং অন্যান্য উপজেলায় আরো ৫০০ হেক্টর জমিতে এইবছর তরমুজ চাষাবাদের লক্ষমাত্রা মোট ১৭
হাজার ৫০০ ধরা হয়েছে। গত বছর ছিল ১১ হাজার ৫০০হেক্টর। গতো বছরের তুলনায় এ বছর ০৬ হাজার
৫০০ হেক্টর জমিতে বেশি তরমুজ চাষ হবে।
তবে বিগত বছরের
চেয়ে এবার তরমুজের বীজ, সার এবং কীটনাশকের দাম বেড়েছে বলে জানালেন কৃষকরা। কিছু কিছু
এলাকায় অসাধু ব্যাবসায়ীরা ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সার এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার
৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।
সরকারি ভাবে ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সারের দাম এক হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু তরমুজ চাষে
কৃষকেরা বেশি আগ্রহী হওয়ায় সুযোগে সার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট গড়ে বেশি দামে সার বিক্রি
করছে এমন অভিযোগ কৃষকদের। অপর দিকে বাজারে এক কৌটা (১০০ গ্রাম) বিঘ ফ্যামিলি ৩০০০ টাকা,
জাগুয়া ৩২০০ টাকা ও এশিয়ান বীজ ৩১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই বীজের দাম ছিল
২৫০০-২৭০০ টাকা। পাশাপাশি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জমি চাষেও বেশি খরচ হচ্ছে। এর
ফলে, এবার তরমুজের উৎপাদন খরচ বাড়বে বলে জানান তারা।
বরগুনা জেলা
(বিএফএ) ডিলার সমিতির সভাপতি মোঃ ফেরদাউস জামান শাহীন বলেন, সবখানে সরকারি দামে সার
বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গ্রামাঞ্চলে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী বেশি দামে বিক্রি করতে পারে।
তবে তথ্য প্রমান পেলে আমরা আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।
বরগুনা কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, গত বছর তরমুজের
বাম্পার ফলন হওয়ায় এ বছর কৃষকেরা বেশি তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন। আমাদের কর্মকর্তারা রাত-দিন
কৃষকের সুখে-দুখে পরামর্শ দিচ্ছেন আশা করি এ বছরও ব্যাপক হারে তরমুজ ফলন হবে।