আজঃ মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

বৃহস্পতিবার পাতাল রেল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ২২ জানুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২২ জানুয়ারী ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দেশের প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক জানান, এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জের এমআরটি লাইন-১ এর ডিপোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই মেট্রোলাইনের হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশ মাটির নিচ দিয়ে যাবে এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত অংশ উড়ালপথে যাবে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের মানুষের চলাচলের জন্য দেশের প্রথম পাতালরেলের ডিপো নির্মাণ করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চিতলগঞ্জে। এই প্রকল্পটি ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ বা এমআরটি লাইন-১ নামে পরিচিত।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বাচলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালি প্লটে লাইন-১ পাতালরেলের শুভসূচনা করবেন। তিনি একটি ফলক উন্মোচন করবেন। এর মধ্য দিয়ে লাইন-১-এর ডিপোর কাজ শুরু হবে। এছাড়া পিতলগঞ্জের ডিপো নির্মাণ এলাকায় জায়গার সংকুলান হবে না তাই এখানে করা হবে।এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, মেট্রোরেলের পর এখন পাতালরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

এছাড়া ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।সচিব বলেন, হযরত শাহজাহাল (রহ.) বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশ। এটি মাটির নিচ দিয়ে যাবে। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার রেললাইন উড়ালপথে যাবে।

তিনি বলেন, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দুইটি লাইন থাকবে। হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে মাটির নিচ দিয়ে কমলাপুর পর্যন্ত এই পাতাল পথে রেলের স্টেশন থাকবে ১২টি।

স্টেশনগুলোর নির্ধারিত জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে-কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, আফতাবনগর, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দর। আর এমআরটি লাইন-১ এর অপর অংশ নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত উড়ালপথে। স্টেশন থাকবে ৭টি।

সেগুলোর নির্ধারিত জায়গা হলো-জোয়ার সাহারা, বোয়ালিয়া, মস্তুল, শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল সেন্ট্রাল, পূর্বাচল পূর্ব ও পূর্বাচল টার্মিনাল।

এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বাকি ১২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা খরচ করবে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ২০২৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আরও বলেন, এমআরটি লাইন-১ চালু হলে এই রুটে প্রতিদিন আট লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে ২৪ দশমিক ৩০ মিনিট। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল যেতে সময় লাগবে ২০ দশমিক ৩৫ মিনিট।

এমআরটি লাইন-১ এর প্রতিটি পাতাল স্টেশন হবে তিনতলা। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে প্রথম বেজমেন্টে। প্ল্যাটফরম থাকবে দ্বিতীয় বেজমেন্টে। আর উড়াল স্টেশনের টিকিট কাউন্টার এবং প্ল্যাটফরম থাকবে তিনতলায়।

এছাড়া যাত্রীদের চলাচলের জন্য উড়াল ও পাতাল-দুই পথের স্টেশনেই থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর সুবিধা।এদিকে স্টেশনগুলোয় পর্যাপ্ত বাতাস ও অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিক রাখতে থাকবে অতিরিক্ত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, মেট্রোরেলের লাইন-১-এর ডিপো নির্মাণ হবে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে। এই কাজের জন্য জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও দেশিয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

পুরো প্রকল্পের কাজ ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে প্যাকেজে সিপি-১-এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।

আরও জানা যায়, এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। এটির নির্মাণ কাজ মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর ডিপোর ভূমি উন্নয়ন সংক্রান্ত প্যাকেজ সিপি-১ এর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।

এমআরটি-১-এর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ ও ব্রাহ্মণখালী মৌজার ১২ দশমিক ৯৭২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১৪০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে নামজারি সম্পন্ন হয়েছে। ২৮ নভেম্বর পিতলগঞ্জ মৌজায় ৩১ শতাংশ ভূমির দখল নেয়া হয়েছে। শিগগিরই অবশিষ্ট ভূমির দখল নেয়া হবে।

এমআরটি-১ এর রিসিভিং সাব স্টেশন-২ এবং নর্দ্দা, নতুন বাজার ও উত্তর বাড্ডার তিনটি পাতাল স্টেশনের প্রবেশ ও বহির্গমন নির্মাণের জন্য ভুমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে।


আরও খবর
ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




রামুতে বাবা-ছেলেকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

কক্সবাজারের রামুতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধারারো অস্ত্র ও গুলিতে বাবা ও ছেলে নিহত হয়েছেন।

রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের থোয়াইংগাকাটা ঘোনারপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে। গরু পাচারের বিরোধের জেরে এই হত্যা বলে দাবি করা হলেও পুলিশ বলছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড।

নিহতরা হলেন গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের থোয়াইগ্যাকাটা এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জাফর আলম (৫২) ও তার ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩৩)।

পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সোমবার রাতে একটি খোলা দোকানের সামনে ক্যারম খেলছিল বাবা-ছেলেসহ গ্রামের ক'জন। এমন সময় একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি গুলি করার পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবা-ছেলের ওপর হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, সুরতাহাল প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পেরেছি নিহতদের শরীরে ধারারো অস্ত্রের আঘাত ও গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে কিসের আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে জানতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এঘটনা ঘটিযেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে পুলিশ।


আরও খবর



জাল ভিসায় এয়ারপোর্টে ধরা, দালালের বাড়িতে ছয় যুবক

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ছয় যুবক দালালের খপ্পরে পড়ে ভুয়া ভিসায় শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দরে ধরা খেয়ে সরাসরি দালালের বাড়িতে ছয়দিন অবস্থান করছেন। আর বিদেশ নয়, টাকা ফেরত নিয়ে তাঁরা নিজ বাড়িতে ফিরতে চান। তা না হলে দালালের বাড়িতেই সবাই শরীরে কেরাসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে উপজেলার জিন্দারপুর গ্রামে দালালের বাড়িতে গিয়ে ওই ছয় যুবককে অবস্থান নিতে দেখা যায়। দালালের বাড়িতে অবস্থানরত যুবকরা হলেন- উপজেলার পাঁচগ্রামের আতিকুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াদুদ, আলামিন তালুকদার, মোলামগাড়ীহাটের মেহেদী হাসান ও জিন্দারপুর গ্রামের আবু তাহের।

দালালের বাড়িতে অবস্থানরত যুবক, দালালের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জিন্দারপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আদম ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠান। এলাকায় তাকে মাবুদ নামে চিনেন। সাড়ে তিন বছর আগে একই এলাকার পাঁচগ্রাম, মোলামগাড়ীহাট ও জিন্দারপুর গ্রায়ের ছয় যুবক একসঙ্গে মালয়েশিয়াতে যাওয়ার জন্য আদম ব্যবসায়ী মাবুদের সঙ্গে ৩৩ লাখ টাকা চুক্তিবদ্ধ হন। ইতিমধ্যে চুক্তির পুরো টাকা তারা পরিশোধও করেছেন।

এরপর থেকেই পার করে দিব, দিচ্ছি বলে সময় কালক্ষেপণ করেন মাবুদ। ছয় মাস আগে মালয়েশিয়া নয়, তাজিকিস্থানে পাঠানোর কথা হয়। তাতেও রাজি হন ওই যুবকরা। অনেক দেরিতে হলেও চলতি বছরের ১৮ মার্চ তাদেরকে বাড়ি থেকে তাজিকিস্থানের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ২০ মার্চ রাতে একবুক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে টিকিটসহ কাগজপত্র হাতে পেয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হন ওই ছয় যুবক। এয়ারপোর্টে চেকিংয়ে গিয়ে জানতে পারেন ম্যানপাওয়ার, ভিসা, বিএমইটি স্মার্ট কার্ড জালিয়াতি করে তাদের ভুয়া কাগজপত্র দিয়েছেন দালাল মাবুদ। শুধুমাত্র বিমানের টিকেট ছিল আসল। এয়ারপোর্ট থেকেই তাদেরকে ফেরত আসতে হয়। তাই তারা নিজ বাড়িতে না গিয়ে দালাল সুলতান মাহমুদের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, গত ছয় মাস আগে একই উপজেলার আতাহার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আমিরুল ইসলাম, জিন্দাপুর গ্রামের মোশারফের ছেলে মোহসিন আলী, বেলগড়িয়া গ্রামের ফরিদুলের ছেলে ফয়সাল, মহেশপুর গ্রামের ইউনুসের ছেলে রিমন, পাঁচগ্রামের মৃত মজিদের ছেলে মোস্তফাসহ আরও অনেককেই মালয়েশিয়াতে একই কৌশলে পাঠিয়েছে দালাল মাবুদ। তারা বর্তমানে কাজ না পেয়ে মাবুদের লোকজনদের কাছে বন্দী অবস্থায় মালয়েশিয়াতে জীবনযাপন করছেন।

অবস্থানরত যুবক আতিকুল ইসলাম বলেন, জমি বন্ধক রেখে দালাল মাবুদকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিয়ে আজ বড় বিপদে পড়েছি। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ছয় দিন ধরে এ বাড়িতে অবস্থান করছি। পুলিশ নয়, আমরা নিজেরাই এর সমাধান চাই। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত এই বাড়ি থেকে যাব না। কপালে যা আছে তা হবেই।

আরেক যুবক আবু তাহের বলেন, মালয়েশিয়াতে যাওয়া হয়নি তাতে কোনও সমস্যা নেই। তাজিকিস্থানে যাওয়ার দিনে কেন ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে আমাদেরকে ফাঁসানো হলো। আমরা আর বিদেশে যাবো না, টাকা ফেরত চাই। তিনি আরও বলেন, মাবুদের সাথে সমাধানের জন্য আমরা বসেছিলাম। কিন্তু ৯৯৯ এ ফোন করলে মাবুদকে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমরাও থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশ মাবুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বলেছিল কিন্তু আমরা অভিযোগ করিনি। পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর থেকে মাবুদ পলাতক।

দালাল সুলতান মাহমুদ ওরফে মাবুদ বলেন, আমি যে এজেন্সির মাধ্যমে তাদেরকে পাঠাচ্ছি মূলত তারাই এসব ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করেছে। তারা যে ভুয়া কাগজপত্র করেছে তার কিছুই জানি না। টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে আমি তাদের নিকটে সময় চেয়েছি। তাদের টাকার ব্যবস্থা করছি। ছয় মাস আগে মালয়েশিয়াতে যাদেরকে পাঠিয়েছেন তারা এখন বন্দি এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ পায়নি, তার হেফাজতেই তারা রয়েছেন। খরচ যা লাগছে তিনিই দিচ্ছেন। কয়েকদিনের মধ্যে তাদেরও ব্যবস্থা হবে।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতারিত যুবকদের অভিযোগ দিতে ডাকা হয়েছিল কিন্তু তারা অভিযোগ দিতে নারাজ। মাবুদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



ফের ‘অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে উঠেছে ঢাকার বাতাস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের কবলে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে বাতাসের কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু শহরটিতে দুয়েকদিন বৃষ্টি বিদায় নিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে ঢাকার বাতাস আবারও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৫২ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৮ নম্বরে উঠে এসেছে মেগাসিটি ঢাকা, যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত।

 তবে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ২৪৫ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর। এছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতের শহর দিল্লির স্কোর ১৯৫। আর ১৮৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই শহর, ১৬৯ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার স্কোর ১৬৮।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে অস্বাস্থ্যকর বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।


আরও খবর



নয় জেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব, নিহত ১৩

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পিরোজপুর পৌরসভার পালপাড়া ও সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমরিতলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। ঝড়ের তাণ্ডবে নলবুনিয়া গ্রামের খালে পড়ে মৃত কানাই লাল পালের ছেলে অনিল পাল (৮২) মারা গেছেন।

ঝড়ের সময় কানাই লাল গ্রামের একটি বাজারে ছিলেন। ঝড়ের গতি বাড়তে থাকায় এ সময় তিনি বাড়িতে রওনা দিলে প্রচণ্ড বাতাসে তিনি খালে পড়ে নিখোঁজ হন। ঝড় থামলে পরে স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থায় খাল থেকে উদ্ধার করে। অপরদিকে, ঝড়ের সময় শারিকতলা ইউনিয়নের মরিচাল গ্রামে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে রুবী বেগম (২২) নামে এক নারী নিহত হন। এসময় তার শিশু কন্যা গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

ঝড়ে পিরোজপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় শত শত গাছ উপরে পড়ে ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁচা ঘর-বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা রাস্তায় কাজ করছে।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে পিরোজপুরের সদর উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় ২ জন নিহত হয়েছেন।

কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে ভোলার লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু ঘর-বাড়ি। রোববার বেলা ১১টার দিকে লালমোহনে হঠাৎ করেই বইতে শুরু করে ঝড়। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ঝড়ের তাণ্ডব। এতে ঘর চাপা পড়ে ও বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন।

জানা গেছে, ঝড়ের প্রভাবে উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘর চাপা পড়ে হারিছ আহমেদ (৭০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

একই সময় বজ্রপাতে উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলেঙুটিয়া গ্রামে মো. বাচ্চু নামে (৩৫) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই এলাকার কয়ছর আহমেদের ছেলে। এছাড়া ঝড়ে দুই শতাধিক ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে ছিঁড়ে গেছে বিদ্যুতের তার।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে দুই জনের প্রাণহানিসহ এলাকায় বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

অপরদিকে, বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এতে উপজেলার হাজিরহাট, উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার তিন শতাধিকের ওপরে ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টাব্যাপী কালবৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হলে এ ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরের নিচে চাপা পড়ে তিনজন আহত হয়েছে। সবাইকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি হাজিরহাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে পূর্ব সোনারচর গ্রামে।

এছাড়াও অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি উপজেলার মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের টিনশেড ক্লাসরুমটি বিধ্বস্ত হয়। বিভিন্ন চরে থাকা কৃষকের ৩০টি গরু নদীতে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার ২নং হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে হাজিরহাট ইউনিয়নে দুই থেকে আড়াইশ ঘরের ওপরে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়। চর থেকে কৃষকের ৩০টি গরু নদীতে পড়ে হারিয়ে যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহিরুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেওয়া হবে।

পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ে রাতুল (১৪) নামের এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। রাতুলের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামে। বাবার নাম জহির সিকদার। তাকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে বজ্রপাতে তিনি মারা গেছেন। আর সুফিয়া বেগমের বাড়ি উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামে। তার স্বামীর নাম মৃত আহম্মেদ প্যাদা। ঘরের উপর গাছ চাপা পরে তিনি নিহত হন। এছাড়াও ঝড়ে উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে কাঁচা বাড়ি-ঘর, গাছ গাছালি উপরে গেছে। বাউফলের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক আধাপাকা বাড়ি বিধ্বস্ত ও কয়েক হাজার গাছগাছালি উপরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বিরামহীনভাবে বজ্রপাত হয়েছে। বাউফল পৌর শহরের থানার সামনে ছালেহিয়া ফাজিল মাদরাসার একটি ভবনের টিনের চালা উপড়ে রাস্তায় পরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

গোসিংগা গ্রামের আফসেরের গ্রেজ এলাকায় ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে মা সাবিহা (৩০), তার মেয়ে ইভা (১২) ও দুই বছর বয়সি শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে ও বেশ কয়েকটি খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে তরমুজসহ রবি ফসল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী বলেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য কৃষি বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার সকাল ৯টার দিকে বাগেরহাটে আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্নস্থানে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচুর গাছপালা উপড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আকস্মিক ঝড় চলাকালে জেলার কচুয়া উপজেলার চর সোনাকুড় গ্রামে বজ্রপাতে আরিফুল ইসলাম লিকচান (৩৫) নামে মাদরাসার দপ্তরি নিহত হয়েছেন।

এছাড়া জেলা কেন্দ্রীয় বাস-টার্মিনালে একটি সাইনবোর্ডের টাওয়ার ভেঙে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রীবাহীবাসেরওপর পড়ে এক বাস শ্রমিকসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন জানান, আকস্মিক ঝড়ে বাগেরহাটের দেড় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

জেলার রাজস্থলী উপজেলায় বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে একজন নিহত গেছেন। রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

সাজেউ খিয়াং রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের  অংসাউ খিয়াং এর ছেলে। বিকেলে ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের নিজের বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন সাজেউ খিয়াং। এ সময় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি নিজের ঘরে অবস্থান নেন। তখন ঘরে বজ্রপাত হলে মারা যান তিনি।

রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঝালকাঠি জেলার দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল।

মৃতরা হলেন, কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরাবাদ গাজীবাড়ি এলাকার মৃত আলম গাজীর স্ত্রী গৃহিনী হেলেনা বেগম, সদর উপজেলার শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী গৃহিনী মিনারা বেগম ও পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়া আক্তার ঈশান। ঝড়ের আধা ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে ঝালকাঠির চার উপজেলায় শতাধিক বসতঘর, দোকানপাট, বিদ্যুতের খুটি ভেঙে পড়ে। এ সময় গাছপালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতে শেখেরহাট এলাকায় মিনারা বেগম নামে এক নারী এবং পোনাবালিয়া এলাকায় মাহিয়া আক্তার ঈশান নামে এক কিশোরী নিহত হয়েছে।

কাঁঠালিয়া থানা পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, বজ্রপাতে কাঁঠালিয়া উপজেলার মুন্সিরাবাদ গাজীবাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে হেলেনা বেগম নামে আরেক নারী নিহত হয়েছেন।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে মো. ওবায়দুল্লাহ গাজী (২৯) নামের এক মৎস্যচাষি নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়ার কোমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওবায়দুল্লাহ গাজী ওই গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে। ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতের ফুফাতো ভাই আবু সুফিয়ান বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওবায়দুল্লাহ পাশের কানাইডাঙ্গা বিলে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।

নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে।

শহীদ মিয়া উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের সামনে রাজঘাট হাওরে মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করছিলেন তার ভাই। দুপুরের দিকে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে।

নিউজ ট্যাগ: কালবৈশাখী ঝড়

আরও খবর



রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুযোগ থাকলে পাবনার রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করার পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) জায়গায় নতুন আরেকটি প্ল্যান্ট নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, দুটি নতুন ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রযুক্তিগত জরিপ করা দরকার। প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ান ফেডারেশনে আরএনপিপির প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটের স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল’  ফিরিয়ে নেওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

তার উত্তরে রোসাটম মহাপরিচালক রাশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে আরএনপিপি’র প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যয় করা পারমাণবিক জ্বালানি রাশিয়ান ফেডারেশনে ফেরত নেওয়ার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সরকার এবং রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার ইতোমধ্যেই রাশিয়ান ফেডারেশনে আরএনপিপির ব্যয়িত পারমাণবিক জ্বালানি ফেরত দেওয়ার বিষয়ে একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

শেখ হাসিনা জ্বালানি নিরাপত্তা বিশেষ করে বাংলাদেশে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এজন্য তিনি রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে রাশিয়ার সহায়তার কথা এবং এবং মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে দেশটির সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা জানান।

আলেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রীকে আরএনপিপির অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বলেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে আরএনপিপি উৎপাদনে আসবে এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত যোগ করতে সক্ষম হবে। তিনি আরও বলেন, আরএনপিপির ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

রোসাটম মহাপরিচালক আরএনপিপি এলাকায় দুটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪) নির্মাণের প্রস্তাবও দেন। তিনি বলেন, প্রথম দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হলেই নতুন ইউনিট-৩ ও ইউনিট-৪-এর নির্মাণকাজ শুরু করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আলেক্সি লিখাচেভ আরও বলেন, বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং প্রযুক্তিগত ও পারমাণবিক নিরাপত্তার আলোকে অধিক লাভজনক এবং যুক্তিসঙ্গত যা আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশি ও রাশিয়ানসহ প্রায় ২৫০০ কর্মী এই প্রকল্পে কাজ করছেন যারা তাদের দক্ষতা অর্জন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী রোসাটম মহাপরিচালককে বিভিন্ন দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশের দক্ষতা কাজে লাগাতে বলেন।

আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, মহামারি এবং স্যাংশনের জন্য প্রতিবন্ধকতা ছিল। কিন্তু এরপরও স্বাভাবিক গতিতেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৌশলগতভাবে এই বাধা এড়ানো গেছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমানে আরএনপিপি এলাকায় ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটের (১২০০ x ২ = ২৪০০ মেগাওয়াট) নির্মাণকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ এই বছরের ডিসেম্বরে শুরু হবে। আর ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ থেকে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে শুরু হবে।


আরও খবর
ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪