ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি:
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পরিবহনের বাড়তি খরচের কারণে সবধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম যখন হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে তখন পিছিয়ে নেই মুরগির মাংস ও ডিমের দাম। বিশেষ করে মুরগির মাংস ও ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারের ব্যয় সামলাতে কাটছাঁট করতে হচ্ছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোকে।
লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ। বিগত কয়েকদিন ধরে লাফিয়ে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৪০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। পাশাপাশি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে প্রথমবারের মতো ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম ১৪৫-১৫০ টাকায় রেকর্ড মূল্যে উঠেছে। মূলত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে নিত্যপণ্যের বাজারে এসব পণ্যের দাম রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার ধামরাই উপজেলার হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২০০ টাকা। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করছেন। যেখানে গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, সেখানে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটি কেজি প্রতি প্রায় ৪০ টাকা বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।
এদিকে, ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির। এ জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা।
অন্যদিকে, বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকা দরে। যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।
উপজেলার মহিশাষী এলাকার বাসিন্দা বাবুল হোসেন বলেন, পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে একজনের উপার্জনে। আগে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন মুরগি ও দু'দিন মাছ রান্না হলেও এখন এই পণ্যগুলো কেনা কমিয়ে সবজির দিকে ঝুঁকছেন তিনি। ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রেও লাগাম টানতে হচ্ছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে রিয়াজুল নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, প্রতিদিনই পণ্যের দাম বাড়ছে। সামান্য টাকায় চাকরি করি। বেতন তো বাড়ে না। মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বাজারে এলাম মুরগি কিনব। না পেরে ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছি। এখন ডিমের যে দাম কয়দিন পর ঘাস-লতাপাতা খেতে হবে।
কাওয়ালীপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী কাদের জানান, "৬টা মুরগির জন্য দিনে এক কেজি ফিড লাগে। এক কেজি ফিডের দাম আগে ছিল ৫০ টাকা। তাই ওই ৬টা মুরগি থেকে ৬টা ডিম আমি ৬০ টাকায় বিক্রি করলে দুই দিকেই লাভ থাকতো। এখন সেইম ফিডের দাম হয়েছে কেজিতে ৭৫ টাকা। আবার বিদ্যুতের ইউনিট দামও ১৭ টাকা হয় মাঝে মাঝে। তাহলে এর প্রভাব তো ডিমে, মাংসে পড়বেই।"