আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

ব্যারিস্টার সুমনের খেলা দেখতে এসে নিহত ১, আহত ৪

প্রকাশিত:শনিবার ১৫ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ অক্টোবর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফুটবল খেলা দেখতে এসে টিনের চাল ভেঙে পড়ে খোরশেদ হোসেন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪ জন। আহতদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে খেলা দেখার সময় এঘটনা ঘটে।

নিহত খোরশেদ হোসেন ক্ষেতলাল উপজেলার রামপুরা রানী পুকুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। আহতরা হলেন- জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম বালিঘাটা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মাহমুদুল হাসান (২৫), রাধানগর গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে  খোকন হোসেন  (৩৫) ক্ষেতলাল উপজেলার রামপুর গ্রামের  হাফিজুল ইসলামের ছেলে শামীম হোসেন ( ২০), নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার সাগরপুর গ্রামের  আবুল কাশেমের ছেলে রিমন (২০)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান,নিজের টিম নিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এসেছিলেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফুটবল একাডেমীর সংঙ্গে পাঁচবিবি রাধানগর খেলোয়ার কল্যাণ সমিতির ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয় পাঁচবিবি শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামে। তার টিমের ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির হন প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। দর্শকরা মাঠের আশপাশের ভবন, টিনের চাল ও উঁচু গাছে অবস্থান নেন। এ সময় মাঠের দক্ষিণ পাশে দর্শকের চাপে একটি ভবনের টিনের টিনের চাল ভেঙে এতে নিচে পড়ে গেলে ৫ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক খোরশেদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি পলাশ চন্দ্র দেব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর



জলদস্যুদের সঙ্গে সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ভেতরে থাকা ২৩ জন নাবিকদের উদ্ধারে সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিনার শেষে তিনি এ কথা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাহাজটি হাইজ্যাক করা জলদস্যুদের সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। আমরা সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে চেষ্টা করছি এবং যেখানে জানানো প্রয়োজন, সেখানে জানিয়েছি। তাদের উদ্ধারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে। বিষয়টি মন্ত্রিসভায়ও আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে রিপোর্টিং সেন্টার ইন কুয়ালালামপুর, ইন্ডিয়ান ফিউশন সেন্টার ইন নিউ দিল্লি, সিঙ্গাপুর, ইউএসএ, ইউকে এবং চীনসহ সব এরিয়ার নেভাল শিপে আমরা রিপোর্ট করেছি। অন্যান্য সূত্রের মাধ্যমেও আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য জাহাজটাকে এবং নাবিকদের মুক্ত করা। কিন্তু স্ট্র্যাটেজি কী হবে, এটা পাবলিক বলার বিষয় নয়। ইতোপূর্বে একই কোম্পানির একটি জাহাজ জলদস্যুরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। তিন মাস পর সেই জাহাজ ও ক্রুদের উদ্ধার করা হয়েছিল।

এর আগে, ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামের বাংলাদেশি জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।

জানা গেছে, নাবিকদের ছাড়তে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে বাংলাদেশি নাবিকদের মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

জাহাজটি প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীকে পাঠানো সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিও।

দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। পরে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় এমভি আবদুল্লাহ। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার।


আরও খবর



জলদস্যুদের আক্রমণের আদ্যোপান্ত চিফ অফিসারের গোপন অডিও বার্তায়

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুরা বাংলাদেশের পতাকাবাহী এম ভি আবদুল্লাহ নামের জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এটিকে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই গোপনে জাহাজ মালিকের কাছে এক অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন চিফ অফিসার মো. আবদুল্লাহ। ৩ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের ওই অডিও বার্তায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে জানিয়েছেন জাহাজ ও তাদের বর্তমান পরিস্থিতিও।

মো. আবদুল্লাহ তার অডিও বার্তায় জানান, জাহাজটিতে খাবার পানির পরিমাণ কম। আবার যেসব কার্গো রয়েছে সেগুলোও বিপজ্জনক। রয়েছে অগ্নিঝুঁকিও। সোমালিয়ান জলদস্যুরা জাহাজে ওঠার পর কার সঙ্গে কী আচরণ করেছে তাও বর্ণনা করেছেন তিনি।

তার অডিও বার্তাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

আসসালামুলাইকুম স্যার, আমি চিফ অফিসার আবদুল্লাহ বলছি।

আজকে সকালে জাহাজের সময় আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় একটা হাইস্পিড বোট আমাদের দিকে আসছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলার্ম দিয়ে ব্রিজে গেলাম। ওখান থেকে পরে সিটে চলে গেলাম। ক্যাপ্টেন স্যার ও সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিল। আমরা ঝিকঝাক কোর্স করলাম। তারপর এএসএস-এ করলাম। ইউকে এমটিকেও ট্রাই করলাম। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেনি। এর মধ্যে জলদস্যুরা চলে আসলো।

চলে আসার পর ওরা ক্যাপ্টন স্যার ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে। আমাদের ডাকল। আমরা সবাই আসলাম। আমাদের ডেকে কিছু গোলাগুলি করল। আমরা একটু ভয় পেয়েছি। সবাই ব্রিজে বসে ছিলাম। কারো গায়ে হাত তোলেনি। শুধু সেকেন্ড অফিসারকে একটু মারধর করেছে। তারপর ওরা আরেকটি স্পিডবোটে করে আরও কয়েকজন চলে আসল। এভাবে মুহূর্তেই প্রায় ১৫-২০ জন চলে আসে।

এর কিছুক্ষণ পরে একটি বড় ইরানিয়ান ফিশিং বোট নিয়ে আরও জলদস্যু চলে আসে। ইরানিয়ান ওই ফিশিং বোটটি এক মাস আগে তারা জিম্মি করেছিল। এটি দিয়ে তারা এক মাস ধরে নতুন কোনো জাহাজ জিম্মি করার জন্য সাগরে ঘোরাঘুরি করছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সামনে পড়ে গেলাম।

এই ফিশিং বোটের তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের জাহাজে থাকা পাম্প দিয়ে কিছু ডিজেল নিয়ে ওই বোটে দিয়েছে তারা। তেল দেওয়ার পর আমাদের জাহাজে উঠে জিম্মি করা ফিশিং বোটটিকে ছেড়ে দেয়।

তারপর ওরা আমাদের সেকেন্ড ও থার্ড অফিসারকে নিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন রুমে যায়। তাদের নিয়ে গিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কারো কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জাহাজের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে সবাই ভয়ে আছি। ওরা খুব ভয় দেখাচ্ছে।

আমাদের জাহাজে ২০-২৫ দিনের খাবার পানি আছে। প্রায় ২০০ মেট্রিক টনের মতো। সবাইকে বলেছি, এগুলো একটু সাবধানে ব্যবহার করতে। শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব আমরা। তবে, একটা সমস্যা হচ্ছে আমাদের জাহাজে কিছু কোল্ড কার্গো আছে। প্রায় ৫৫ হাজার টন। এগুলো একটু ডেঞ্জারাসও। ফায়ারেরও ঝুঁকি আছে। মিথেন বাড়ে। লাস্ট যখন অক্সিজেন মেপেছি তখন ৯-১০ শতাংশ লেভেল পেয়েছি। এটি নিয়মিত মনিটরিং করতে হয়। কোনো কারণে অক্সিজেন লেভেল বেড়ে গেলে বিশেষজ্ঞের মতামত নিতে হবে। এটার একটু ব্যবস্থা করবেন, স্যার।

আমাদের জন্য দোয়া করবেন, স্যার। আমাদের পরিবারকে একটু দেখবেন, স্যার। সান্ত্বনা জানাবেন, স্যার। আসসালামুলাইকুম।


আরও খবর



দু’দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ, উৎকণ্ঠায় জিম্মি নাবিকদের পরিবার!

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

সোমালি জলদস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি ছিনতাই করার পর প্রথম দিকে জিম্মি নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিলেও গত দুই দিন ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে। শনিবার (১৬ মার্চ) থেকে রবিবার (১৭ মার্চ) পর্যন্ত জিম্মি নাবিকদের কাছ থেকে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু সাইদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শনিবারের পর থেকে আজ পর্যন্ত জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই নাবিকরা এখন কেমন আছেন, জাহাজে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা এসব বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পাচ্ছি না।’

জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাদের স্বজনরা। তারা বলছেন, প্রথম দিকে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিলেও এখন কেন দিচ্ছে আমরা বুঝছি না। এটি নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। এটি ভারতীয় নৌবাহিনীসহ ইইউর অভিযানের কারণে নয়তো? অন্যদিকে ছিনতায়ের পর ছয়দিন পার হতে চললেও এখনও মুক্তিপণ চেয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি জলদস্যুরা। তাই জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে তৎপরতাও শুরু করতে পারছে না মালিকপক্ষ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম গত শনিবার (১৬ মার্চ) জানান, সোমালিয়ার জলদস্যুরা যখন বাংলাদেশি জাহাজ জিম্মি করে সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ অভিযান চালানোর জন্য বাংলাদেশের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু জাহাজটিতে থাকা নাবিক, ক্রু এবং অন্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার অভিযানের অনুমতি দেয়নি।

এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রীর ভাই শিবলি মাহমুদ বলেন, মঙ্গলবার সর্বশেষ আমাদের সঙ্গে তৌফিকুল ইসলামের যোগাযোগ হয়। তখন জানিয়েছিল সোমালিয়ান জলদস্যুরা জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে। এরপর গত পাঁচদিন ধরে তার সঙ্গে আমাদের আর যোগাযোগ হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, যোগাযোগ না হওয়ায় আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। বিশেষ করে যখন শুনেছি ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে, হাইজ্যাক হওয়া মালটার একটি জাহাজ উদ্ধারের সময় ৩৫ জন জলদস্যুকে আটকের ঘটনা আমাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলদস্যুরা এখন জিম্মি নাবিকদের নির্যাতন করতে পারে।’

একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের থার্ড অফিসার তারিকুল ইসলামের বড় ভাই আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার যে যোগাযোগ হয়েছে এরপর আমাদের সঙ্গে আমার ভাইয়ের আর যোগাযোগ হয়নি। গত দুই দিন তার কাছে থেকে কোনো বার্তা পাইনি। তাই জিম্মি অবস্থায় এখন তারা কেমন আছে সেটি উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় আছি। খবর শোনার পর থেকে আমার মা অনবরত কাঁদছেন। ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় ঠিক মতো খাওয়া দাওয়াও করছেন না। জিম্মি জাহাজ উদ্ধারের খবর শুনে আমরা আরও বেশি দুশ্চিন্তায় আছি।’

গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে জাহাজ থেকে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এরপরপরই জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় জাহাজটি। এরপর সেখান থেকে জাহাজটিকে চালিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সোমালিয়ার গারাকাদ বন্দরের কাছে নোঙর করে। এরপর শুক্রবার জাহাজটির নোঙর তুলে ফেলা হয় এবং দুপুর থেকে সেটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

সন্ধ্যা পর্যন্ত জাহাজের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) পক্ষ থেকে এমভি আব্দুল্লাহর সর্বশেষ অবস্থান জানানো হয়েছে।

বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, গতকাল জাহাজটি যেখানে নোঙর করা ছিল, সেখান থেকে আজ ৪৫-৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তর দিকে সরিয়ে সোমালিয়ার গদবজিরান উপকূলে নেওয়া হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি বর্তমানে গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়েছে।’

জিম্মি নাবিকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই জাহাজে থাকা ২০ জন জলদস্যু জাহাজের ক্যাপ্টেনকে বাধ্য করেছে নোঙর পরিবর্তন করে নতুন জায়গায় গিয়ে নোঙর করতে। অবস্থান পরিবর্তনের সময় জাহাজ পরিচালনা করেছেন জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং নাবিকরা। কিন্তু তাদের জাহাজ মুভ করতে হয়েছে জলদস্যুদের কথা অনুযায়ী।

বাংলাদেশ থেকে শনিবার দুপুরে জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা একজন ক্যাপ্টেন বলেন, এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি নতুন জায়গায় গিয়ে নোঙর করার আগে আমরা সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। এরপর পুনরায় যোগাযোগ করার কথা থাকলেও নতুন অবস্থানে যাওয়ার পর থেকে নাবিকদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গত দুই দিন নাবিকদের কাছ থেকে আর কোনো সাড়া পাইনি।’

অন্যদিকে গত ছয়দিনে মুক্তিপণ চেয়ে জলদস্যুরাও যোগাযোগ করেনি। এ সস্পর্কে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা মুক্তিপণ চেয়ে যোগাযোগ করেনি। তাই জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জলদস্যুরা যোগাযোগ না করলেও আমরা বসে নেই। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি, জলদস্যুরা যোগাযোগ করলে যাতে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে নেওয়া যায়।


আরও খবর



ইফতার পার্টি না করে নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনীতিতে আসে চরম ধাক্কা। যার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমরা এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেছি। আমাদের সরকারি কর্মকর্তা এবং দলীয় নেতাদের বলেছি, ইফতার পার্টি না করে নিম্নআয়ের মানুষকে সহযোগিতা করতে। ইফতার পার্টি করে খাওয়া বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াই বড় কথা। আমরা সেটাই করছি।

সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্বউদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরও অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরও লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীণতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেনো এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিতে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি করায় অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাবার কাছ থেকে তার স্বপ্ন জনতাম বলে সে আলোকে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। আমরা বাংলাদেশের সে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, বাংলাদেশে ভাগ্য পরিবর্তনে। এখানে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। সবাই খাদ্য, চিকিৎসা পাবে, সেই ব্যবস্থা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা দেশে এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছে, আমরা বিজয়ের কথা বলতে পারিনি। মু্ক্তিযোদ্ধা নিজের পরিচয় দিতে পারেনি। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। একদিকে খুনি, আরেকদিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজত্ব ছিল। জাতির পিতা চেয়েছিলেন, একটি স্বাধীন জাতি। যে জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ভুখণ্ড পাবে। তিনি এজন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি অল্প সময় পেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনি একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। এটা এত সহজ ছিল না। কিন্তু জাতির পিতা শেখ মুজিবের মতো নেতৃত্ব ছিল বলে সম্ভব হয়েছে। তিনি মাত্র তিন বছরের মধ্যেই দেশকে স্বল্পোন্নোত দেশের স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘুনে ধরা সমাজ তিনি ঢেলে সাজাবেন। তাই করেছেন। কিন্তু সেই সময়ই আসল আঘাত। স্বপরিবারে তাকে জীবন দিতে হলো। দুর্ভাগ্য আমাদের।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় এতে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিতে পুরস্কার পাওয়া মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান প্রতিক্রিয়া জানান।

এবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তিনজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একজন, চিকিৎসাবিদ্যায় একজন, সংস্কৃতিতে একজন, ক্রীড়ায় একজন এবং সমাজসেবায় তিনজনকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ এ পদক দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর)।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এবং ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজসেবা/জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী এবং এস এম আব্রাহাম লিংকন পুরস্কার পেয়েছেন।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।


আরও খবর



ঈদে গার্মেন্টস কারখানায় ৮ দিন ছুটির দাবি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন ঈদুল ফিতরে গার্মেন্টস কারখানায় আট দিন ছুটি ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় কমিটির সভাপতি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকার ও বিজিএমইএ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, যাতায়াতের বিড়ম্বনা এড়াতে গার্মেন্টস কারখানায় আট দিন ছুটি ঘোষণা করলে ৩৫ লাখ শ্রমজীবী মানুষ ধাপে ধাপে বাড়ি যেতে পারবে। তাই এ সুপারিশ বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতি ঈদে প্রায় এক কোটি মানুষ বৃহত্তর ঢাকা ছাড়ে। এর মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিক প্রায় ৩৫ লাখ। ঈদের আগে মাত্র এক সপ্তাহে ঘরমুখী এক কোটি যাত্রী পরিবহণের সক্ষমতা সড়ক, রেল ও নৌপরিবহণ খাতে নেই। এর ফলে প্রতি ঈদেই সড়ক ও রেলপথে বিশৃঙ্খলা এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।


আরও খবর