প্রস্তাবিত ২০২২-২৩
অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানির জন্য সাব-কন্ট্রাক্টের বিপরীতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া ও নগদ
সহায়তাগুলো চলমান রাখাসহ ৯ ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যা ব্যবসা গতিশীল ও ব্যবসায়ীক
সক্ষমতা বাড়াবে বলে মনে করে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদের বাজেট পেশ করেন। তার প্রতিক্রিয়ায় বিজিএমইএর পক্ষ
থেকে এই মতামত ব্যক্ত করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)।
তিনি বলেন, আমাদের
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রপ্তানির জন্য সাব-কন্ট্রাক্টের বিপরীতে ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান
করা হয়েছে। নগদ সহায়তাগুলো চলমান রাখা হয়েছে। টেক্সটাইল বা বস্ত্র খাতের কর্পোরেট
কর হার ১৫ শতাংশ আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এস এম মান্নান
বলেন, ম্যান মেড ফাইবার ও অন্যান্য কৃত্রিম আঁশের তৈরি সুতার ওপর ভ্যাটের পরিমাণ ৬
টাকা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা প্রতি কেজি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পলিপ্রপাইলিন স্ট্যাম্পল
ফাইবার উৎপাদনের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি ও এর প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর আগাম কর অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে। টেক্সটাইল গ্রেড পিট চিপস উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় টেরিপ্যাথিলিক অ্যাসিড
ও ইথেলিন গ্লাইকোল আমদানির ওপর আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং এই পণ্যটি তৈরির ক্ষেত্রে
ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া এবং সিউএজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে
৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এছাড়াও মোবাইল
ফাইন্যানসিয়াল সার্ভিসের সার্ভিস চার্জসমূহ আয়করের বাইরে রাখার প্রস্তাব করা প্রতিবন্ধী
বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান করা হলে কর রেয়াতের ব্যবস্থা পূর্বে ১০ শতাংশ
বা ১০০ জনের অধিক ছিল, এটি আরও সহজ করে ১০ শতাংশ বা ২৫ জন করা হয়েছে।
এগুলো নিঃসন্দেহে
আমাদের ব্যবসাকে গতিশীল করবে, আমাদের ব্যবসায়ীক সক্ষমতা বাড়াবে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে
পোশাক রপ্তানির ওপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ করার প্রস্তাব
করা হয়েছে, যা বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শিল্পের জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে।
কারণ হিসেবে বলা
হয়, এই বাজেটের লক্ষণীয় দিক হলো, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা,
মূল্যস্ফীতি ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যা এসব কিছু সামাল দিয়ে সরকার দেশের উন্নয়নের
ধারা অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট, যা প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়েছে। বাজেটের মূল বিষয়ই
হলো উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন এনে দেশকে আরও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করা। আর
এটি করতে হলে অর্থনীতিতে অবদান রাখা শিল্পগুলোর প্রতি, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের প্রতি
বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।
টালমাটাল বিশ্ব
বাণিজ্য পরিস্থিতি আমাদের পোশাক শিল্পের জন্যও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন
যুদ্ধের ফলে একদিকে যেমন জ্বালানি তেলসহ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপসহ
বিশ্বের বেশ কিছু দেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি
তীব্র আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে। এটি
আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।