জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতীয়তাবাদ
ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের (হলুদ দল) উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যায়
ষড়যন্ত্রের কালো হাত’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চবি ব্যবসায়
প্রশাসন অনুষদ অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও চবি সাবেক উপাচার্য
প্রফেসর আবদুল মান্নান। চবি আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুকের সভাপতিত্বে
এবং চবি জিনপ্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. নাজনীন নাহার ইসলামের
সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ
আবদুল্লাহ মামুন।
এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি ইসলামের
ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ ও চবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম। সেমিনারে প্রফেসর আবদুল মান্নান এর জীবনী
পাঠ করেন চবি সমাজতত্ব বিভাগের প্রভাষক জনাব সদরুল আলম কনক। অনুষ্ঠানের শুরুতে ৭৫ এর
১৫ আগস্টে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
প্রফেসর আবদুল মান্নান তাঁর ভাষণের শুরুতে
মহাকালের মহানায়ক স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত
নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বর্বর হায়েনাদের
হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫
আগস্ট বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের একদল বিপথগামী সেনা সদস্য ধানমন্ডির ৩২নং সড়কে অবস্থিত তাঁর
নিজ বাসভবনে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড
শুধুমাত্র কয়েকজন সেনা সদস্যের পরিকল্পনায় অনুষ্ঠিত হয়নি; এ বর্বর ও নির্মম হত্যাকাণ্ড
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা
বিরোধী দেশ ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের যৌথ পরিকল্পনা, পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতায়
দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের তৈরিকৃত ছক মোতাবেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কু-পরিকল্পনায় খন্দকার
মোশতাক, জিয়াউর রহমানসহ অনেকেই জড়িত ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “সেদিন বঙ্গবন্ধুর
দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে ছিলেন বলে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী, একজন বিশ্বনন্দিত রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর
নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে একটি উদীয়মান অর্থনীতি, উন্নয়নের রোল মডেল।”
ইউজিসি’র সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, “শেখ হাসিনা পিতা
ও পরিবার হারানোর পর ২১ বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের
পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হয়ে পড়েছিল নেতৃত্ব শূণ্য। জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে
ফেরার পর তাঁকেও ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৯৭৫ এর ষড়যন্ত্রকারী,
কুশীলব ও তাদের প্রেতাত্মারা আজও বসে নেই, তারা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে বারংবার প্রাণ নাশের অপচেষ্টাসহ দেশের গণতান্ত্রিক
ও সাংবিধানিক ধারাবাহিক ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি থামিয়ে দিতে
চায়।”
প্রফেসর মান্নান তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ
করেন যে, “এতকিছুর পরও জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব, অসীম সাহস, দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে
বাংলাদেশের জনগণের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
যার ফলশ্রতিতে বাংলাদেশ আজ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের চেয়েও বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে রয়েছে।
পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশ এখন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার
কার্যক্রমকে অনুসরণ করছে।”
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির
ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে
এবং দেশকে নিরাপদ রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায়
আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত
শিক্ষকবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।