কয়েক সপ্তাহ
দখলের পর রুশ সেনারা অবশেষে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এনপিপি)
নিয়ন্ত্রণ ছেড়েছে। শুক্রবার (১ এপ্রিল) পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কর্মকর্তাদের
বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয়
পারমাণবিক সংস্থা বলেছে, চেরনোবিলের কর্মীরা জানিয়েছেন যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূখণ্ডে
আর কোনো বাহিরাগত নেই। এর আগে সংস্থটি জানিয়েছিল, ছোট একটি বাহিনী রেখে রুশ সেনারা
বেলারুশ সীমান্তের দিকে রওনা হয়েছিল।
এনারগোটম এক বিবৃতিতে
জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে দখলদাররা চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
ছেড়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা দেয়।
সংস্থাটি আরও
জানিয়েছে, রাশিয়ার কিছু সেনা চেরনোবিলের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে দূষিত পদার্থ দ্বারা
আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বেলারুশে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও তাদের কাছে খবর
রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত না।
এ তথ্যের সত্যতা
নিশ্চিত করতে পারেনি বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি এজেন্সি
(আইএইএ)। তবে সংস্থটি জানিয়েছে, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে রুশ বাহিনী চেরনোবিল
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেছে। পাশাপাশি সেনাদের সরিয়ে নিয়েছে মস্কো।
জাতিসংঘের পরমাণু
পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তারা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চেরনোবিল পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তাদের প্রথম সহায়তা পাঠাবে।
রাশিয়ান সেনারা
ইউক্রেন অভিযানের শুরুতে চেরনোবিল দখলে নেয়। তবে সম্প্রতি রাশিয়া বলেছে, উত্তর ইউক্রেনে
তাদের কার্যক্রম কমিয়ে দেবে এবং পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে তারা তৎপরতা চালাবে। আর চেরনোবিল
কিয়েভের উত্তরে অবস্থিত।
এ দিকে চলমান
এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে,
রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ১৭৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধে ইউক্রেনের
১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৭ হাজার ৩০০ সৈন্য
নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা
নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সাবেক
সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৯৮৬ সালেল ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ
পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিনটি ‘চেরনোবিলের বিপর্যয়’ হিসেবে পরিচিত।
সোভিয়েতের পতনের
পর চেরনোবিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমান ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই পারমাণবিক দুর্ঘটনাকে
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।