আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

ছেলেদের মারপিটে ঘর ছাড়া প্রতিবন্ধী মা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

একটা মাত্র মাটির কুঁড়ে ঘর, সে মাটির কুঁড়ে ঘরটিতেও আবার পুরাতন ফোঁটো টিনের চাল। পলিথিনের কাগজ দিয়ে ঢেকে কোন রকমে শীত ও বৃষ্টির পানি ঠেকানোর চেষ্টা। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান সাথে যুদ্ধ করে কোন রকমে বেঁচে থাকার জন্য অসহায় জীবনযাপন করছে শ্রবণ প্রতিবন্ধী অসহায় এক বৃদ্ধা মা। তারপরও বসবাসের অনুপযোগী সেই কুঁড়ে ঘর থেকে নির্যাতনের পর দুই ছেলে তাড়িয়ে দিলেন গর্ভধারিণী মাকে। তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে কয়েক দিন ধরে ঘর ছাড়া অবহেলিত মা। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রায়েরচালা এলাকায়। ওই অসহায় শ্রবণ প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা মা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের রায়েরচালা এলাকার মৃত আবুল কাশেম আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম (৯০)। তিনি একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, যখন মা বৃদ্ধ অসহায় হয়ে পরে, তখন থেকে ছেলেরা মাতার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেননি। এমন কি মায়ের সাথে সব সময় দুর্ব্যবহারসহ করতে থাকে নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও।

এসব রোধে যদিও পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ না করলে সন্তানদের জেল ও জরিমানার বিধিমালা রয়েছে। এরপরও থামছে না পিতা-মাতার ওপর অন্যায় অত্যাচার ও নির্যাতন। জানাচ্ছিলাম কালিয়াকৈর উপজেলার রায়েরচালা এলাকার শ্রবণ প্রতিবন্ধী অসহায় বৃদ্ধা রহিমা বেগমের অবহেলিত জীবন কাহিনীর কথা। শুধু মাত্র সরকারী সুবিধা বলতে কয়েকটি টাকা বয়স্ক ভাতা পান তিনি। এছাড়া তার স্বামী মারা গেছেন অনেক আগেই। স্বামীর মৃত্যুর পর ভরসার জায়গায়টা ছিল আব্দুল আজিজ ও খোকন মিয়া গর্ভে ধরা দুই সন্তান। তাদের আকড়ে ধরেই শেষ জীবনটা পারি দিতে চেয়েছিলেন মা রহিমা। বড় আদরের ছেলে গুলোকে অনেক যাচাই বাছায়ের মাধ্যমে সখ করেই বিয়ে দিয়ে ছিলেন ভাল মেয়ে দেখে।

আশা ছিল সন্তান, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় হাসি খুশিতেই পার করবেন। কিন্তু কে জানতেন এত আশা বাঁধা মায়ে জীবনে নেমে আসবে অসহায় জীবন-যাপনের কালো অন্ধকার। শেষ সময়ে সন্তানদের নির্যাতনের শিকার হতে হবে তাকে! কে জানতো? তার ছেলেদের ছলনার কথা। কৌশল ও চুরি করে তার শেষ সম্বল মাথা গোজার কুঁড়ে ঘর নির্মিত জমি টুকু লিখে নিবে ছেলে খোকন। সেই কুঁড়ে ঘরটি আজ কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও ঘরে খাবার নেই, টিনের চালের মর্চা ও ফোঁটোতে পলিথিন কাগজ দিয়ে ঢেকে কোনো রকমে শীত ও বৃষ্টির পানি ফেরানোর চেষ্টা করছেন বৃদ্ধা মা রহিমা বেগম। কিন্তু গত সোমবার সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রবণ প্রতিবন্ধী সেই বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ছোট ছেলে খোকন ও তার বউ শাহিদা বেগম। এমন কি বসবাসের অনুপযোগী মায়ের সেই কুঁড়ে ঘরটিও ভাংচুর করা হয়। শীত ও বৃষ্টির পানি ফেরানোর সেই টিনের চালের পলিথিনের কাগজও ছিড়ে ফেলা হয়েছে। কুঁড়ে ঘর থেকে বৃদ্ধা মাকে তাড়িয়ে দিলে বাধ্য হয়েই তিনি পাশের হাটুরিয়াচালা এলাকায় তার বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এখানেই যেন শেষ নয় তার ওপর নির্যাতন, মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের খবর পেয়ে ছুটে যান বড় ছেলে আজিজ। সেও অত্যাচারী কম নয়, এর পূর্বে মাকে  উল্টো পাল্টা বুঝিয়ে ভরণ পোষণের লোভ দেখিয়ে মাকে দিয়ে জমি বিক্রি করান। পরে বিক্রিত জমির টাকা হাতিয়ে নেন বড় ছেলে আজিজ। এখন দরদ যেন উতলিয়ে পড়েছে। মাকে জোর পূর্বক ছোট ভাইয়ের নামে থানায় অভিযোগ দেয়ার জন্য চাপ দেন। ছোট ছেলের নামে থানায় অভিযোগ দিতে অস্বীকার করলে মাকে গালিগালাজসহ চরথাপ্পর দেন বড় ছেলে আজিজ। পরে বাধ্য হয়েই পরের দিন মঙ্গলবার কালিয়াকৈর থানা একটি অভিযোগ করেন শ্রবণ প্রতিবন্ধী অসহায় মা।

অসহায় মায়ের সাথে কথা বললে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধা মা রহিমা বেগম বলেন, আমি কেস করেছি, তারে (ছোট ছেলেকে) ধইরা নিবা কিন্তু পোলাডারে মাইরো না, বাবা। আমার বোনের জায়গা লিখে নেওয়ার সময় ছোট পোলায় চুরি কইরা আমার জমিও নিয়ে নিছে। আরেক পাশে জমি বিক্রি কইরা টাকা-পয়সা বড় পোলায় নিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, এখন আমি অন্যের কাছে চায়া-চুয়ে খাই। সেই মানুষে কিছু কিছু টাকা দিলে ঘরে রাখি। হেই টাকা ছোট পোলা ও তার বউ চুরি কইরা নিয়া যায়। টাকার কথা কইছি দেইখা আমার ঘর ভেঙ্গছে, আমারে বের কইরা দিছে। আমি কয়দিন মানুষের বাড়ি দৌড় পারুম। কেমনে দিবা বাবা, আমি তা বুঁঝি না, আমার জমি ও ঘর ফেরত চাই।

অভিযুক্ত ছোট ছেলে খোকন মিয়া বলেন, আমার হার্ড ও লিভারে সমস্যা, চিকিৎসায় অনেক খরচ হচ্ছে। মায়রে কেমনে দেখভাল করুম। আমারে ও বউরে চোর কইছে বলে মায়ের লগে এমন ঘটনা ঘটেছে। মায়ে যে ঘরে থাকে, সেটা আমার ঘর। আর আমি জমি ফেরত দিবো না।

ছোট ভাই চুরি করে মায়ের পৌনে ৩ শতাংশ জমি নিয়েছে জানিয়ে বড় ছেলে আব্দুল আজিজ বলেন, আমি মায়রে মারি নাই, তারে ধাক্কাইয়া নিয়া আইছি। আর অপর পাশের পৌনে ৩ শতাংশ জমি বেঁচে মা নিজেই দু-ভাইরে ভাগ করে দিয়েছে।

কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, আমরা জানতে পারলাম যে ওই বৃদ্ধ মাকে তার সন্তান জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এ বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্ব সহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজ ট্যাগ: গাজীপুর

আরও খবর



চুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

বাসচাপায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করল প্রশাসন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ২২ এপ্রিল মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আজ ২৫ এপ্রিল উপাচার্য মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ছাত্রদেরকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদেরকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ক্যাম্পাস থেকে শহর গমনাগমন করবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাস্তায় একটি বাসে আগুনও দেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চুয়েট শিক্ষার্থী বলেন, এই সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের দমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে। আন্দোলন বন্ধ করার জন্য কেউ হল ছাড়বে না, সবাই ক্যম্পাসে অবস্থান করবে।

এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন ও একজন আহত হন। নিহতরা হলেন- চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসেন। এ ঘটনায় আহত জাকারিয়া হিমু পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় ১০ দফা দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা টানা চতুর্থদিন আন্দোলন করছেন। গাছ ও বেরিকেড দিয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছেন তারা।


আরও খবর



শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে এমভি বাঙালি লঞ্চের তৃতীয় তলায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের প্রায় ৫০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।

এর আগে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে এমভি বাঙালি লঞ্চের তৃতীয় তলায় আগুন লাগে।

তালহা বিন জসিম বলেন, রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে এমভি বাঙালি লঞ্চের তিন তলায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সদরঘাট নদীর ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ও পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিটসহ মোট পাঁচটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি।


আরও খবর



তীব্র তাপের মধ্যেও উন্নয়নের নামে বৃক্ষশূন্য করা হচ্ছে ঠাকুরগাঁওকে

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

বৈশাখী প্রখর রোদের তেজে তীব্র গা-জ্বলা খরতাপে পুড়ছে জনপদ। ঠাকুরগাঁওয়ে আজকে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। ভয়ংকর  দাবদাহে মানুষ যখন এক প্রকার মরতে বসেছে, সেই সময় আবার বিক্রির জন্য গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে বন বিভাগ। তীব্র তাপপ্রবাহ ও কম বৃষ্টিপাতের কারণে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এসবের পরও উন্নয়নের নামে প্রায় বৃক্ষশূন্য করে ফেলা হচ্ছে ঠাকুরগাঁওকে।

গেল বছরে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী, আমজানখোর ও চাড়োল ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তার ৫ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ওই রাস্তাগুলোর মধ্যে ৮ কিলোমিটার রাস্তায় নতুন গাছ লাগালেও বাকি রাস্তাগুলোতে গাছ লাগানোর কোন অগ্রগতি চোখে পড়েনি।

এর মধ্যেই দরপত্রের মাধ্যমে আবারও একই উপজেলার ধনতলা ও পাড়িয়া ইউনিয়নের ৩৭ কিলোমিটার রাস্তার ৪ হাজার গাছ কাটা শুরু হয়েছে। তাপদহের এই দুঃসময়ে গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

বন বিভাগের ভাষ্য, নিয়ম অনুযায়ী আয়তনের তুলনায় ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও ঠাকুরগাঁও জেলা রয়েছে ২ ভাগের কম বনভূমি রয়েছে। এসব গাছপালা কেটে ফেলা হলে শূন্যের কোঠায় পৌছাবে বনভূমি। সবকিছু জানার পরেও গেল মাসে ৮ ইউনিয়নে রাস্তায় থাকা অবশিষ্ট গাছগুলো কেটে ফেলার জন্য দরপত্র দিয়েছে বন বিভাগ। এর মধ্যে দুটো ইউনিয়নে শুরু হয়েছে গাছ কাটা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দরপত্র পাওয়া দিনাজপুরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা শ্রমিকরা রাস্তার গাছ কাটছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে এ কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা। দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী ৪ হাজার গাছ কাটবেন তারা। এক সপ্তাহে ৩ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।

বন বিভাগের আহবান করা দরপত্র অনুযায়ী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের লোহাগাড়া হইতে তিলকরা সরাকন্দি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও ধনতলা ইউনিয়নের পাঁচপীর থেকে ফুটানী হাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার, তিলময় বাবুর বাড়ী হতে এনামুল চেয়ারম্যানের বাড়ী হয়ে বাহার জিলা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও সিন্দুরপিন্ডি হইতে খোঁচাবাড়ী হয়ে তীরনই নদীর শেষ সীমানা ও দলুয়া হয়ে পান্তা ভিটা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারসহ ৩৭ কিলোমিটার রাস্তার পাশের বিশাল আকৃতির গাছগুলোর গায়ে সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হয়েছে কাটার জন্য।

মশালডাঙ্গী গ্রামের সমারু মাঠে কাজ করে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি জানান, রাস্তার ধারে থাকা গাছগুলোর ছায়ায় কৃষক ও শ্রমজীবি শ্রেণির মানুষেরা মাঠে কাজের ফাঁকে একটু বিশ্রাম নেয়। এ তীব্র তাপদাহের মধ্যে এখন রাস্তার দু'পাশের বিশালাকৃতির গাছগুলো কাটা হলে মরুভুমিতে পরিনত হবে এলাকাটি। তাই এলাকাবাসীর দাবি প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে এই মুহূর্তে গাছগুলো না কেটে কিছুদিন পরে কাটলে এলাকাবাসী উপকৃত হতো।

ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অফিস না থাকলেও রংপুর আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, শুক্রবার ঠাকুরগাঁও জেলায় দুপুরে তাপের প্রখরতা ছিল ৩৭ ডিগ্রী, শনিবার ৩৪ ডিগ্রী ও আজ রবিবার ৩৯ ডিগ্রী ছুইছুই। গরমের তীব্রতায় মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির জন্য ইশতেশকার নামাজ আদায় করেছে মুসল্লিরা। এ অবস্থায় গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার লোকজন।

শিক্ষক আমানুল্লাহ জানান, রাস্তার পাশের গাছগুলো এই এই মুহূর্তে যেমন মানুষের জন্য প্রয়োজন, তেমনী পশু-পাখিদের জন্যও প্রয়োজন। অনেক পাখি এখন গাছগুলোতে বাসা বানিয়ে ডিম দিয়েছে। প্রচন্ড তাপদাহের সময়ে পাখিগুলোর জন্য হলেও কিছুদিন পরে গাছগুলো কাটা উচিত।

পাড়িয়া ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী জানান, দরপত্র হয়েছে গাছ কাটবে ঠিকাদার। এতে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে গ্রামবাসীর দাবি গরমের দিনগুলো পার করে গাছ কাটা হউক। এটা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগকে প্রয়োজনে লিখিত আকারে জানানো হবে।

ঠাকুরগাঁও বনবিভাগের বন কর্মকর্তা শফিউল আলম মন্ডল জানান, গাছগুলো কাটার উপযোগী এবং যারা লাগিয়েছেন তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে দরপত্র আহবান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদার ও বন বিভাগকে জানিয়েছি। তাপদাহ কমে গেলে দরপত্র অনুযায়ী ঠিকাদার কাটবেন।


আরও খবর



জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি আর নেই

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি আর নেই। ক্যানসার আক্রান্ত এ শিল্পী সোমবার (২২ এপ্রিল) ভোর ৩টা ৫৮ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতার ভাগিনা ফয়সাল আহমেদ। সব শেষ তিনি ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

রুমির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অভিনেতা অগ্ন্যাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ভারতের চেন্নাইয়ে তার প্রাথমিক চিকিৎসাও হয়। পরে দেশে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

অভিনয় জীবনের তিন দশকেরও বেশি সময় পার করেছেন রুমি। দীর্ঘ এ পথচলায় অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমায়। অভিনয় নৈপুণ্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

গত কয়েক বছর এই অভিনেতা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষাতে বেশি অভিনয় করে আসছিলেন। রুমির জন্ম বরগুনায়। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক ও মা হামিদা হক। পরিবারে তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট রুমি।

তার অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের এখনও ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে। সেটা ১৯৮৮ সালে। একই বছর কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তার। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। ২০০৯ সালে দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন।

এরপর থেকে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন রুমি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হলো- সাজেশন সেলিম, বোকাসোকা তিনজন, মেকাপ ম্যান, ঢাকা টু বরিশাল, ঢাকা মেট্রো লাভ, বাপ বেটা দৌড়ের উপর, আমেরিকান সাহেব, জার্নি বাই বাস, বাকির নাম ফাঁকি, রতনে রতন চিনে, আকাশ চুরি, চৈতা পাগল, জীবনের অলিগলি, মেঘে ঢাকা শহর ইত্যাদি।

এছাড়া তিনি জমজ’ নাটকে অভিনয় করে বেশ দর্শক প্রশংসা লাভ করেন।

তার মৃত্যুতে শোবিজ পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশেষ করে নাটক পাড়ায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে বেশ।

অভিনেতা জিয়াউল হক অপূর্ব নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অলিউল হক রুমির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে শোক প্রকাশ করেছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভিনেতার প্রথম জানাজা সকাল ৯টায় শহীদবাগ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাদ আছর দ্বিতীয় জানাজা হবে তার গ্রামের বাড়ি বরগুনায়।


আরও খবর



তফসিল ঘোষণা

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব জাহাংগীর আলম।

তিনি বলেন, ৫৪টি উপজেলা পরিষদে ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোটগ্রহণ ২১ মে। এছাড়া তৃতীয় ধাপের ১১২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ ২৯ মে।


আরও খবর