সিলেট (দক্ষিণ সুরমা) প্রতিনিধি:
গ্রামীণ জনপদে উন্নত সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দক্ষিণ সুরমার বেশির ভাগ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সার্বিক অবকাঠামোর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি, নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসাপাতালের সেবা নিয়েও এলাকার মানুষ বেশ সন্তোষ্ট। জানা যায় একত্রিশ (৩১) শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসক মোট ১৩ জন, সেবিকা ৭ জন নিয়ে রোগীদের নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর বহির্বিভাগে। উপজেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রতিদিন কমবেশী প্রায় ৩০০ জন রোগীর সেবা নিয়ে থাকে।
প্রতিদিন জরুরী বিভাগে প্রায় চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ (৪০-৪৫) জন রোগী সেবা নিয়ে থাকে। প্রতিমাসে কমবেশী ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ জন গর্ভবতী মায়ের নরমাল ডেলিভারী করা হয়। তাছাড়াও জ্ঞাত যে জরুরী প্রয়োজনের দিক বিবেচনায় ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে ডেলিভারীর ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তাছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সেবা দেওয়া হয়।
নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের রোগীর খাবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, সুবিধা-অসুবিধা, ফুল-ফলাদির বাগানসহ সার্বিক বিষয়ে নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাছাড়াও রাত অবধি এই কর্মকর্তাকে হাসপাতালের কর্মব্যস্থ সময় পার করতে দেখা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান কিভাবে আরো সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায় এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তাদের সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করেন। এখানের স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের কর্মকর্তার সৃজনশীল ভাবনা, শৃঙ্খলা ও যুগান্তকারী উদ্যোগের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মঈনুল আহসান কে কৃতজ্ঞতা জানান।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে করোনাকালে এখানে মোট ২,৩৪৪ (দুই হাজার তিনশত চুয়াল্লিশ) জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে করোনা আক্রান্ত ৬৩১জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১১ জন রোগী মারা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা যায় নিয়মিত করোনা টিকা দান কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গণটিকা এবং প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ১৭৫৮জনকে বিশেষ টিকা প্রধান করা হয়েছে। এখানে করোনা টিকা প্রধানের লক্ষ্য মাত্রায় রেজিষ্ট্রেশন করেছেন ৭৮৯৪৮জন তার মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ লক্ষমাত্রা অর্জন হয়েছে ৯১,২৫২ জন। তন্মধ্যে ৫৫,৯৩৫ জন কে প্রথম ডোজ এবং ৩৫,৩১৭ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রধান করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ মঈনুল আহসান বলেন, সকল চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সার্বিক সহযোগিতায় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন সিলেটের ১২টি উপজেলায় আউটসোর্সিং জনবল আছে শুধু আমার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১ জন ওয়ার্ড বয় পরিচ্ছনতা ২ জন ও আয়া ১ জন আছে। এম্বেুালেন্স আছে কিন্তু ড্রাইভার নেই, খাবার দেওয়ার জন্য কোন বার্বুচী নেই বিভিন্ন হাসপাতালে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ৫ জন কিন্তু আমার হাসপাতালে ১ জন কোভিড হাসপাতাল করা হয়েছে কিন্তু সেন্টাল অক্সিজেন নেই। এই বিষয় গুলো যদি আমার উর্দতন কর্মকর্তা সহযোগিতা করেন তাহলে আরো ভাল জায়গায় এই দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নিয়ে যেতে পারব।