২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক পণ্য বিক্রি ৫০ হাজার কোটি ইয়েনে (৩৮৩ কোটি ডলার) উন্নীত করতে চায় ক্যাসিও কম্পিউটার। এ বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা ৩১ মার্চ শেষ হওয়া অর্থবছরের প্রায় দ্বিগুণ। উচ্চমূল্যের ঘড়ি এবং উদীয়মান বাজারগুলোয় নতুন গ্রাহকদের কাছে ব্যবসা বিস্তৃত করার লক্ষ্য জাপানি বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির। খবর নিক্কেই এশিয়া। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অনুসারে, ক্যাসিওর অর্ধেক রাজস্ব আসবে টাইমপিস বিভাগ থেকে। যেখানে গত অর্থবছরে এ বিভাগ থেকেই সংস্থাটির বেশির ভাগ আয় এসেছে। সংস্থাটির লক্ষ্য সামগ্রিক পরিচালন মার্জিন ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করা। ক্যাসিওর কৌশল হলো বিদ্যমান ব্যবসার প্রতিযোগিতাপূর্ণ সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা এবং উদীয়মান বাজারে ব্যবসা আরো প্রসারিত করা। বিশেষ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকা দেশগুলোকে লক্ষ্য করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ঘড়ি নির্মাতা হিসেবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি দশকের মধ্যে টাইমপিসগুলো সংস্থাটির বার্ষিক আয়ে ২৫ হাজার কোটি ইয়েন অবদান রাখবে। এ বিক্রির পরিমাণ ২০২১ অর্থবছরে বিক্রির তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। জাপানের বাইরে বিশ্বজুড়ে সংস্থাটির জি-শক ব্র্যান্ডের তুমুল চাহিদা রয়েছে। সংস্থাটির মোট রফতানির প্রায় ৯০ শতাংশ অবদান রাখে এ ঘড়িগুলো।
প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য, উদীয়মান বাজারে মধ্যম আয়ের লোকদের কাছে উচ্চমূল্যের জি-শক ঘড়ি বিক্রি করা। ক্যাসিও নারী ভোক্তাদের আকর্ষণ করতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। নারীরা সংস্থাটির মোট আয়ে ১০ শতাংশ বা তার কিছুটা বেশি অবদান রাখে। বিদ্যমান পণ্যের পাশাপাশি সংস্থাটি আরো বেশি পণ্য যুক্ত করবে। বিশেষ করে সংস্থাটি এমন ঘড়ি তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে, যেগুলো নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ব্যবহার করতে পারে। এজন্য সংস্থাটি ঘড়িতে ব্যবহূত ধাতুর উজ্জ্বলতা কমিয়ে আনবে।
ক্যাসিও কম্পিউটারের লক্ষ্য, শিক্ষা সম্পৃক্ত পণ্যগুলোর বিক্রি ৮০ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটি ইয়েনে উন্নীত করা। এর অংশ হিসেবে সফটওয়্যার ব্যবসা প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে তোলা হবে। এ বিভাগ হার্ডওয়্যারের তুলনায় অধিক লাভজনক। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সুপরিচিত ইলেকট্রনিক অভিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে অভিধানগুলো সহজলভ্য করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের জন্য সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক অনলাইন শিক্ষার প্লাটফর্মও তৈরি করছে ক্যাসিও। গত বছরের মাঝামাঝিতে সংস্থাটি ২০২৩ অর্থবছরে ৩২ হাজার ৫০০ কোটি ইয়েন বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিল। তবে কভিড-১৯ মহামারীসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে লক্ষ্যের তারিখটি ২০২৩ কিংবা তার পরের অর্থবছরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ক্যাসিও নতুন কার্যক্রম থেকে ৩০০ কোটি ইয়েন বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে সংস্থাটি গত অর্থবছরের এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধানত বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) কার্যক্রমে পিছিয়ে গেছে সংস্থাটি। ক্যাসিওর প্রেসিডেন্ট কাজুহিরো ক্যাশিও বলেন, অভিজ্ঞতার অভাবে আমরা বিটুবি কার্যক্রম ভালো করতে পারিনি। এক্ষেত্রে আমরা আমাদের সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা এখন দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করার কাজ করছি। ফলে আগামীতে আমরা এ বিভাগেও ভালো করতে পারব বলে আশা করছি। পাশাপাশি আমরা এখন বিদ্যমান অঞ্চলে নতুন ব্যবসা বিকাশের মাধ্যমে মুনাফা বাড়াতে জোর দিচ্ছি।