দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে চতুর্থবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন এম এ লতিফ। তিনি পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত। ওনার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও চসিক ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। তিনি নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাদের সমর্থন পেযেছেন।
এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৯ জন। স্থানীয়দের মতে এবার বর্তমান সংসদ সসদ্য এমএ লতিফ এবং বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের মধ্যেই হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সম্প্রতি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকেও প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন।
পরপর তিনবার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এমএ লতিফ হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেন ডিপ্লোমা ইন লেদার টেকনোলজি (জার্মানি)। তিনি নগদ টাকায় এগিয়ে থাকলেও আয়-সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি সুমনের।
এম.এ লতিফ নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। লতিফের কাছে নগদ রয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৬১ টাকা। তার স্ত্রীর রয়েছে ৫২ লাখ ১৯ হাজার ২৩০ টাকা। এমএ লতিফের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমা আছে ৪২ লাখ ৪২ হাজার ৬২৩ টাকা, স্ত্রীর জমা ৭৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪৫৭ টাকা।
এছাড়া বন্ড ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিতে নিজের শেয়ার আছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫০ টাকার এবং স্ত্রীর ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩২৫ টাকা। তার রয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ২৫০ টাকার গাড়িও।
অন্যদিকে, জিয়াউল হক সুমনও হলফনামায় নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখিয়েছেন। তার নগদ রয়েছে ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৩ টাকা। যা এমএ লতিফের তুলনায় কম। সুমনের স্ত্রীর নামে নগদ রয়েছে ১ লাখ টাকা। ব্যাংকে তার রয়েছে ১৫ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৯ টাকা। স্ত্রীর রয়েছে ৯৮ লাখ ৪১ হাজার ১০০ টাকা।
এ ছাড়া বন্ড ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন ১০০ টাকা মূল্যের এভেন্স রয়েছে ৫ হাজারটি। তার স্ত্রী ও নিজের নামে গাড়ি আছে মোট ৪টি। যারমধ্যে ৩টিই স্ত্রীর নামে।
এছাড়াও এমপি লতিফের কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৭ টাকা। পেশায় ব্যবসায়ী এই এমপির ব্যবসা থেকে বছরে আয় ২০ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৪ টাকা। এছাড়া শেয়ার থেকে ২ হাজার ৩৬৫ টাকা, চাকরি এবং সম্মানি বাবদ ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয় করেছেন তিনি। অন্যান্য খাত থেকেও আয় করেছেন ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৪১১ টাকা।
কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী সুমনের আয় বেশি কৃষি থেকেই। এই খাত থেকে তার বাৎসরিক আয় দেড় কোটি টাকা। ব্যবসা থেকে ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৫ টাকা। এছাড়া শেয়ার থেকে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৩১০ টাকা, বাড়ি ভাড়া হিসেবে ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং সম্মানি বাবদ তিনি আয় করেন ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী সংসদ সদস্য এমএ লতিফের কোনো ঋণ বা দায়-দেনা নেই। অন্যদিকে জিয়াউল হক সুমনের ঋণ আছে মোট ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ২৩৯ টাকা। এর মধ্যে লোন বাবদ ব্র্যাক ব্যাংকের পাওনা ৩৫ লাখ ২২ হাজার ২৩৯ টাকা। বাকি ৩ লাখ টাকা পাবে বনফুল এবং ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা ওয়ালটন কোম্পানি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।