নগরীর ড্রেনেজ প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এতে সেতু, কালভার্ট ও রাস্তার পাশের ড্রেন ও নতুন ড্রেনের কাজ শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শেষ হলে বাকি কাজও শেষ হবে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা মনে করেন যে এটি চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে বেশিরভাগ নগরবাসীকে বন্যা থেকে মুক্তি দেবে।
অনুষ্ঠানে সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাসুদ রহমান, প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী, সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, নির্বাহী প্রকোশলী আহম্মদ মইনুদ্দিন, কাজী কাদের নেওয়াজ, সিডিএর বোর্ড মেম্বারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাসুদ রহমান বলেন, খালের কাজ শেষ পর্যায়ে। বর্ষার আগে যাতে পানি প্রবাহে কোনো সমস্যা না হয়। সিডিএ খালি জমি উদ্ধারে সহায়তা করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কারণে কাজে সমস্যা হচ্ছে। বহদ্দারহাটে একটি ইউটিলিটির কাজ করতে সময় লাগে ছয় থেকে দেড় মাস। খাল ডুবে না গেলে এলাকা ডুবে যায়। সেজন্য ড্রেন পরিষ্কার করা জরুরি। রেগুলেটর অপারেটর না থাকলে এটি চালু করা যাবে না। যাদের ময়লা পরিষ্কার করা দরকার তাদের করা উচিত।
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম ধোবাস বলেন, সেনাবাহিনীর পরিবর্তে অন্য কাউকে এই চাকরি দেওয়া হলে আরও সময় লাগত। সিডিএ ও পানি উন্নয়নসহ কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে। সিটি করপোরেশনের কিছু কাজ আছে, জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে আশা করি এই বর্ষায় বন্যা হবে না। স্লুইস গেট প্রায় শেষের দিকে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের নিচু এলাকা ডুববে না। জমি অধিগ্রহণ শেষ হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। আগে সিটি করপোরেশনের অধীনে টেন্ডারের মাধ্যমে খাল পরিষ্কারের কাজ হতো, এখন সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করা হচ্ছে। বাকি ১৬টি খাল সংস্কার করবে সিটি করপোরেশন।
মঙ্গলবার বিকেলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী এ তথ্য জানান। সরেজমিনে জানা যায়, সেতু, কালভার্ট ও রাস্তার পাশের ড্রেনের কাজ শেষ হলেও খালের মুখে রেগুলেটর বসানোর কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া রিটেনিং ওয়াল নির্মাণের ৬৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, পলি ফাঁদ নির্মাণের ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ, খাল পাড়ের সড়ক নির্মাণের ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং ফুটপাথ নির্মাণের ১১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী শাহ আলী জানান, এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলো বাকি সময়ে শেষ করা যাবে।
বিগত বছরগুলোতে নগরীতে যে জলাবদ্ধতা ছিল এবার তা কমবে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ খাল বা ড্রেনের কাজ শেষ হয়েছে। বর্ষার আগে খালগুলো পরিষ্কার করা হলে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।
তিনি বলেন, শুধু খাল বা খাল চওড়া করলে চলবে না, নগরবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে। বিভিন্ন ধরনের গৃহস্থালির বর্জ্য, বিশেষ করে পলিথিন সামগ্রী ফেলা যাবে না। কারণ এ ধরনের বস্তু পানি চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তাই এই বিষয়ে আপনার সচেতন হওয়া উচিত।
এতে উল্লেখ করা হয়, ৯ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর ড্রেনেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সর্বশেষ এ প্রকল্পে ৪ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হলেও নির্মাণ কাজ করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।