চট্টগ্রামে ইআরডিএফবির আয়োজনে উপাচার্যদের মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন করলে হবে না, সংস্কৃতি ও উন্নয়ন করতে হবে। ইউরোপের রোমান, গ্রীক সাম্রাজ্য, রোম এরা আমাদের চেয়ে অধিক সমৃদ্ধ ছিলো, তবুও আমরা এগিয়ে গিয়েছি। আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনকে পিছনে ফেলে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সিভাসুর সহযোগিতা ও "এডুকেশন রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশে (ইআরডিএফবি) এর আয়োজনে "অপরাজনীতিমুক্ত, দারিদ্রমুক্তও শিক্ষা সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক" আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহদাত হোসেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।
ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের। আছে ওয়ারী বটেশ্বর, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। পশ্চিমারা যতই বলুন কোন ভাবেই তারা আমাদের চেয়ে উন্নত নয়।বাংলাদেশ বারবার পশ্চিমাদের অপরাজনীতির স্বীকার হয়, পূর্বেও হয়েছে। যার জন্য জাতি বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছে। কিন্তু আমরা প্রধানমন্ত্রীকে হারাতে চাইনা। শেখ হাসিনা এক বিরল নেতৃত্ব। নতুন নতুন উদ্বাভনী প্রযুক্তি আমাদের উৎপাদন বাড়াবে, গবেষণা বাড়াবে। কেস লেস, পেপার লেস সোসাইটি পারবে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সকল অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
স্বাগত বক্তব্য প্রদানকালে অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় শিক্ষা ও গবেষণাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন।তাই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কুদরাত-ই -খুদা কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, বেতবুনিয়া ভূ উপগ্রহ কেন্দ্র সহ সৃষ্টি করেছিলেন আরও অনেক গবেষণার স্বর্ণদার। তারই হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা।তিনি প্রতিটি বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।
সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফল আহসান বক্তব্য কালে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ হতে হলে প্রতিটি নাগরিককে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে স্মার্ট হতে হবে। জনগণ হবে প্রযুক্তি নির্ভর। শিক্ষা ব্যবস্থা হবে যুগোপযোগী তবেই স্মার্ট বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।অপরাজনীতি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে হবে, এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রচুর ভূমিকা রয়েছে।
চবি পালি বিভাগের প্রফেসর ড. জীবনবোধী ভিক্ষু বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতির বটবৃক্ষ। আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। আমাদের সকলের সংশোধন হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে একীভূত হতে হবে। যেভাবে আমরা মুক্তিযদ্ধের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম।
চবি উপাচার্য প্রফেসর ড.শিরীন আখতার বলেন, শিক্ষকরা সমাজের আয়না।দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এটি একটি চমৎকার আয়োজন। আমরা দেখেছি একটি জনপদ কিভাবে সম্মানের জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, জাতিকে সাহস যুগিয়েছিলেন।যার বিনিময়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। আজও শেখ হাসিনা নানান দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাচ্ছেন।সব বাঁধা পেরিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. জাহিদ হোসেন শরীফ বলেন, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ও আমাদের দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছেন,এখনো করছেন, এসব অপরাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবেনা।
প্রফেসর মো: মোজাম্মেল হক বলেন, মূলত আমরা যাই করি তার পিছনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা একটি বড় ভূমিকা পালন করে।তাই সুস্থ রাজনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
ড. সেলিনা আখতার বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পাই।বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ভাতা চালু করেছেন।জাতি আজ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে পা রেখেছেন।এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভূমিকাও অনেক।
ডা. ইসমাইল খান বলেন, তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন কেউ কেউ আসে ইতিহাস হয়ে।বঙ্গবন্ধুও এসেছিলেন,ভালো স্বাস্থ্য না থাকলে ভালো শিক্ষা অর্জন করা যায় না।তবে অভাব ও দূর করা সম্ভব নয়।
বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ অভিন্ন শব্দ। এদের ছাড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীকে আবারো জয়যুক্ত করি এবং তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
প্রফেসর ড. মো: রফিকুল আলম বলেন, পরাশক্তিরা যতই চোখ রাঙিয়ে যাক,আমাদের মাথা নোয়ালে চলবে না। তাই আগামী নির্বাচনে সকলের অংশগ্রহনে নৌকাকে জয়যুক্ত করে উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।
এছাড়া ও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর আকিবা রুবি, মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: মুজাহিদুল ইসলাম, প্রাক্তন ছাত্র ড. রাকিব, ড.সুমন গাঙ্গুলি, চবি বাংলা বিভাগের, ড.আনোয়ার সাইদ, মেরিন সাইন্সের ড. ওয়াহিদ, মেরিন সাইন্সের শিক্ষক সাইদুল ইসলাম, ড. মোরশেদ, ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিউটের সাবেক সভাপতি মো: শহীদ, ড. নূর হোসেন, প্রফেসর ড. সজীব কুমার, প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আখতার, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মোহাম্মদ রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা.ইসমাইল খান, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, চট্টগ্রাম ভেটিরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এএসএম লুৎফুল আহসান, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক,ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেক নোলজি চিটাগাং এর উপাচার্য প্রফেসর ড. জাহেদ হোসেন শরীফ। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিলো প্রেস এক্সপ্রেস অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেন।