আবহমানকাল ধরে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার পশ্চিম দেওগ্রামে বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে লাঠিখেলা। কিন্তু কালের বিবর্তনে মানুষ ভুলতে বসেছে এসব বিনোদন। তারপরও পূর্ব পুরুষদের এ পেশাকে বুকে আঁকড়ে ধরে এখনো মানুষকে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন কয়েকটি পরিবার।
লাঠি খেলাকে ঘিরে দুদিন ব্যাপী চলে লাঠি খেলার মেলা। হারিয়ে যেতে বসা এ খেলা উপভোগ করতে দূর দুরান্ত থেকে মেলায় এসেছেন সব বয়সী মানুষ। আর মেলাকে ঘিরে আশপাশের কয়েকটি গ্রামে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ।
বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এ বিনোদন নিয়ে মানুষের অনেক আগ্রহ রয়েছে। লাঠি খেলার নতুন করে কোনো সংগঠন বা দল তৈরি না হওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই খেলা।
ঐতিহ্যবাহী এই খেলা নিয়ে খেলোয়াড় মারুফ হোসেন বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা আজ বিলুপ্ত প্রায়। তাই লাঠি খেলা ছাড়া মেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলা দেখিয়ে মানুষদের আনন্দ দেন লাঠিয়ালরা। অনেকাংশে আবার শিশু থেকে শুরু যুবক ও বৃদ্ধ পুরুষেরাই লাঠি খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। লাঠিখেলার আসরে লাঠির পাশাপাশি যন্ত্র হিসেবে ঢোল, কর্নেট, ঝুনঝুনি ও বিভিন্ন প্রকার বাশি ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া সংগীতের পাশাপাশি এ খেলার সঙ্গে নৃত্য দেখানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষেরা তাদের নৈমিত্তিক জীবনের উৎসব হিসেবে আনুমানিক প্রায় দেড়শ আগে থেকে দুর্গা পূজা মেলার দুদিন পরেই শুরু হয় এই লাঠি খেলার মেলা। এই মেলা উপলক্ষে দেওগ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়।
দেওগ্রাম মেলার আয়োজক ও ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, ‘বিগত দশকেও গ্রামাঞ্চলের লাঠি খেলা অল্প হলেও কিছু জায়গায় আনন্দের খোরাক জুগিয়েছে। সাধারণ মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছিল এ খেলাটি। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসত এ খেলা দেখার জন্য। বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মধ্যে এ লাঠিখেলা দেখা গেলেও তা খুবই সীমিত।’