চলমান বন্যায়
গবাদিপশু ও হাঁস- মুরগির খাদ্য এবং অন্যান্য পশুখাদ্য বিনষ্টসহ এই খাতে এখন পর্যন্ত
আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ ফরিদা আখতার৷
রোববার (২৫
আগস্ট) আকস্মিক বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ উপলক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
উপদেষ্টার ব্রিফিং শেষে এসব কথা বলেন তিনি৷
তিনি বলেন,
দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি
ও দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, জাতীয়
অর্থনীতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টির
মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের
গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি বলেন,
চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগে সাম্প্রতিককালে আকস্মিক বন্যায় ১২টি জেলার ৮৬টি উপজেলা
বন্যা কবলিত হয়। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় জানমালের ক্ষতিসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে
ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। ফলে অনেক গবাদি পশুর মৃত্যু এবং ভেসে যাওয়াসহ অবকাঠামোর ব্যাপক
ক্ষতি হয়। তাছাড়া, গবাদিপশু ও হাঁস- মুরগির খাদ্য এবং অন্যান্য পশুখাদ্য বিনষ্ট হয়।
এই খাতে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দুধ, ডিমসহ প্রায় ৪১১ কোটি টাকা। ক্ষতি
কাটিয়ে উঠতে, জরুরি পশুখাদ্য সরবরাহ ও বিতরণ, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির রোগ প্রতিরোধে
টিকা প্রদান এবং ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন,
একইভাবে মৎস্য খাতেও চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ১২টি জেলার ৮৬টি উপজেলায় আকস্মিক
বন্যার কারণে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর/দিঘি/খামারের সংখ্যা ১
লাখ ৮০ হাজার ৮৯৯টি, ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ও চিংড়ি পরিমাণ ৯০ হাজার ৭৬৮ টন, ক্ষতিগ্রস্ত
মাছের পোনা ও চিংড়ির পোস্ট লার্ভা ৩ হাজার ৭৪৬ লক্ষটি, অবকাঠামোগতসহ মোট ক্ষয়ক্ষতির
পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৩৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
ক্ষতিগ্রস্ত
মৎস্যচাষিদের জন্য পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সহজ শর্তে
ঋণ প্রদান, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নয়ন, মৎস্যচাষিদের জন্য বন্যা পরবর্তী
পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো, মৎস্য খামারগুলোকে
সুরক্ষিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহায়তা প্রদান করা মুক্ত জলাশয়ে পোনা অবমুক্ত
কার্যক্রমের অব্যয়িত অর্থ ব্যয়ে বন্যাকবলিত এলাকার চাষিদের মাঝে পোনা বিতরণ করা যেতে
পারে।