সাকিব আহম্মেদ বাপ্পি, মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে ভাসমান মুদি দোকান এখন চোখে পড়ার মতো। একটি কাঠের ট্রলারে ছোট্ট ইঞ্জিনের মাধ্যমে চলে নৌকা। আর সেই নৌকাই হচ্ছে মুদি দোকান। ভাসমান মুদি দোকানে লক্ষ্য করে দেখা যায়, তারা ধলেশ্বরী নদীর মোহনায় নোঙর করা জাহাজ গুলো ও নদীর মাঝ পথে চলাচল করা বালুর বাল্কগেট, বিভিন্ন কোম্পানির বড় বড় লাটারেজ জাহাজ, পাথর বোঝাই জাহাজে গিয়ে বিক্রি করছে কোমল পানি, তীব্র দাবদাহে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে ঠান্ডা বরফ।
জানা গেছে, ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনায় নোঙর করা বড় বড় লাইটারেজ জাহাজ গুলোকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ভাসমান মুদি দোকান। নদীতে বসবাসরত নৌ শ্রমিকদের জন্য তাদের এই ভাসমান মুদি দোকান।
ভাসমান মুদি দোকানি দুঃখ মিয়া বলেন, আমি আগে খেয়া পারাপার করতাম এখন সেই খেয়া পাড়াপাড় করা নৌকা দিয়ে নদীতে কমল পানি, সিগারেট, জুস, বরফ, ইস্পিড পানি, বিস্কুট, আলু, পেয়াজ, মুড়ি, চানাচুর সহ মুদি দোকানের বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি।
এদিকে আরো কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ইষ্টিল বডি ট্রলার নদীতে ঘুরছে ছইয়া নৌকার কালু মিয়া জানান, আমরা ট্রলারে করে নদীতে মুদি দোকানদারি করি, যেমন এলপি গ্যাস থেকে শুরু করে লবন, শাকসবজি এবং কি মাছ মাংস বিক্রি করে থাকি জাহাজে তারা আমাদের থেকে কিনে রাখে, আবার ফোনে ওয়ার্ডার করলে আমরা সেই সব পন্য সামগ্রিই নিয়ে দিয়ে আসি মানুষের দৈনিন্দন জীবনের সব প্রয়োজনীয় মুদি মালা মাল। দৈনিক ১০০০- ১৫০০ টাকা ব্যবসা হলে আমরা চলে যাই বাড়ীতে। সকালে ৬ টায় মুদি দোকান নিয়ে বের হলে সন্ধ্যা নামার সাথে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই আমার মতো আরো অনেক মুদি দোকান ট্রলারে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে।
একজন বাল্কগেট শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি যানান, এই আমরা নদী পথে চলা ফেরা করি নদীতে তো আর কোন বাজার বসে না অনেক সময় দেখা যায়, জাহাজ এ রান্না করার সময়ে এলপিজি গ্যাস ব্যাবহার করি শেষ হয়ে যায় মাঝ পথে তখন আমরা বিপাকে পড়ে যাই তখন আমাদের উপকরারে আসে এই ধলেশ্বরী নদীতে ভাসমান মুদি দোকান ।
তাদের কাছ থেকে এলপিজি গ্যাস, লবণ, আলু, ডাল, মশার কয়েল, রান্না করার মশলা থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পএ কিনে থাকি আমাদের সুবিধা হয়। তা না হলে আমরা মাঝ পথে বসে বাজার, ঘাট খুজে জাহাজ নোঙর করে পরে নদী থেকে পাড়ে গিয়ে বাজার সদাই করতে হয়।
লাইটারেজ জাহাজে মাষ্টার রবিউল জানান, ধলেশ্বরী নদীর মোহনায় নোঙর করা থাকে আমাদের জাহাজ গুলো অনেক সময় দেখা জায় বাজার করে নিয়ে আসলাম কিন্তু কিছু কিছু জিনিস অনতে ভুলে জাই তখন তো আর বার বার সম্ভব নয় পাড়ে জাওয়ার যখনি প্রয়োজন হয় ভাসমান ট্রলারের মুদি দোকান গুলো কে ডাক দিলে তারা এসে জরুরী পন্য গুলো দিয়ে জায় তাই আমরা নদীতে বসবাস করি। তাই এই ভাসমান ট্রলারে মুদি দোকান আমাদের খুব উপকারে আসে আবার কখনো জাহাজ থেকে ঘাটে বা নদীর পাড়ে যাওয়ার জন্য মুদি দোকান ট্রলার গুলো খুব প্রয়োজন হয়। ট্রলারে মুদি দোকান গুলো বর্তমানে পঞ্চসার ইউনিয়নের চর মুক্তারপুর ও সদর উপজেলার মোল্লারচর, চর কিশোরগঞ্জের ১৫ - ২০ টি পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে গড়ে উঠেছে নদী পথে ট্রলারের ভাসমান মুদি দোকানদারী করে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন।