আজঃ মঙ্গলবার ৩০ মে ২০২৩
শিরোনাম

ধর্মপাশায় উমেদ্দিয়ার খালের উপর দৃষ্টিনন্দন সেতু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ মে 20২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ মে 20২৩ | অনলাইন সংস্করণ
শহীদুল ইসলাম, ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

Image

এক-দুই দিনের নয়, বছরের পর বছর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাদে হরিপুর, বাগাউছাসহ আশেপাশের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের। সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। বর্ষাকালে এ দুর্ভোগ পৌছায় আরও চরমে।

উমেদ্দিয়ার খালের ওপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সেতুই বদলে দিচ্ছে এলাকাটিকে। সেতু নির্মাণের ফলে যাতায়াতের সুব্যবস্থা, অল্প সময় গন্তব্যে পৌঁছানো, জমির দাম বৃদ্ধি, দোকানপাট স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে এলাকার চিত্র।এ সেতু অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধান দিয়েছে। এতে স্থানীয় কৃষক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।

উপকারভোগীরা জানান, সেতু ও রাস্তার অভাবে আশেপাশের ২০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে ছিল।ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সবদিক থেকে পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল।খালের উভয় পাশে ছিল আইলের মত কাঁচা সড়ক। বর্ষা এলেই ডুবে যেত। বর্ষার পানি সড়ে গেলে কাদামাটি মাড়িয়ে স্থানীয় বাজারে যেতে হত।

জানা যায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে হাওরাঞ্চলের বন্যা ব্যাবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন (হেমলিপ) প্রকল্পের অর্থায়নে ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু ও ৭২০ মিটার সড়কটি ৬ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। এতে করে জয়ল্রী বাজারের সাথে অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার অগ্রগতি হয়েছে।

সেতুর পাশেই এক সবজি বিক্রেতা আজকের দর্পণকে বলেন, মাশাল্লাহ অনেক সুবিধা হইছে। আগে যাইতে গেলে অনেক কষ্ট হইত। ভাঙ্গা ব্রিজ আছিন। ভাঙ্গা ব্রিজের পরে বাঁশের সাঁকো দিছিল। এখন এটা(সেতু) ওহনের পড়ে আমরার অনেক কিছুর সুবিধা হইছে। আগে যদি দশ মিনিট লাগতো এখন মাশাল্লাহ দুই মিনিটে বাজারে যেতে পাড়ি।

বাদে হরিপুর গ্রামের কলেজ পড়ুয়া আরাফাত সানি ইমন বলেন, ব্রীজটি হওয়াতে আমাদের অনেক সুবিধা হইছে। বড়ইর দিকে অনেকগুলো গ্রাম আছে তাদের যাতায়াত ব্যবস্থাটা অনেক সুন্দর হইছে। আশেপাশের গ্রামগুলো সহ বড়ই বাজারের যত পণ্য সবই জয়শ্রী বাজার থেকে আনা নেওয়া করতে হয়। এখন এই ব্রিজ হওয়াতে পন্য আনা নেওয়া করতে অনেক সুবিধা হইছে।

মোটরবাইক চালক সেলিম বলেন, আগে অন্য রাস্তা দিয়ে চলতাম। মাঝে মাঝে গাড়ি ধাক্কাইয়া নিতাম। কাঁদা রাস্তা আছিন, গাড়ি ছাড়া চলতে হইত। এখন তো আমরা যেকোনো মুহূর্তে যাইতে পারি গাড়ি নিয়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক ইউপি সদস্য (বিএনপি সমর্থিত) বলেন, বাদে হরিপুর, বাগাউছা ও বরই সহ জয়শ্রী ইউনিয়নের অনেক মানুষ ভীষণ কষ্ট করছে এই ব্রীজ ও রাস্তার জন্য। এখন এই ব্রিজ ও সড়ক হওয়ার ফলে কষ্ট দূর অইছে।ব্রীজটি হওয়ার ফলে গাড়ি-ঘোড়া সবকিছুই আসতে পারে, ধান নিয়ে আসতে পারে, কৃষকের মালামাল নিয়ে আসতে পারে। রাস্তাঘাট হইলে এলাকার উন্নয়ন হয়।এখন জায়গা সম্পত্তির দামও বাড়ছে। এজন্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে ধন্যবাদ।

মুরুব্বি আঃ হাসিম বলেন, ব্রিজটা হওয়াতে আমরার অনেক সুযোগ সুবিধা হইছে আগে পয়সা দিয়া পার হইতে হইত এখন পয়সা লাগে না। আইট্টা (হেঁটে) পার অইতে পারি। এলাকার অনেক ছাত্র আছে, বড় মাদ্রাসা আছে, মাদ্রাসার ছাত্ররা কষ্ট থাইক্কা বাঁচছে। বর্ষাকালে আগে ফেরি দিয়া যাওয়া আসা করতাম। বিশ টাকা লাগতো যাইতে যাইতে। আল্লাহর রহমতে এখন আর লাগেনা।

সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এতে জয়শ্রী বাজারের সংগে উপজেলার অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এছাড়া বাদে হরিপুর থেকে মধ্যনগর উপজেলা সদরের সাথে সাবমারসিবল রাস্তা ও উড়াল সড়ক প্রকল্পের কিছু কাজও চলমান। এছাড়া আগে হাওর এলাকার কৃষকরা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারতেন না। আমরা সেখানে সাবমারসিবল রাস্তা করেছি। এখন কৃষকেরা পানি আসার আগেই ধান কেটে তাদের বাড়িতে পৌঁছাতে পারছেন।

নিউজ ট্যাগ: সুনামগঞ্জ

আরও খবর