নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের মা ও তার আত্মীয়রা দাবি করেছেন, শুধু জমির বিরোধ নয়, পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার জের ধরে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে
কক্সবাজারের চকরিয়ায় এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নোবেলকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ৯ জন।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর পর তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের মুবিনপাড়ায় এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারীর পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকাণ্ড হয় বলে দাবি নিহতের পরিবারের।
নিহত নোবেল পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সিকদারপাড়ার আবদুল খালেক সিকদারের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম ওমর গণি এমইএস কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে পূর্ববড় ভেওলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে গত দুই বছর ধরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার বাসিন্দা মো. ফেরদৌসের ছেলে আজিজুল হক (৫০), আবু তাহেরের ছেলে মিজানুর রহমান (৩১), ওমর মিয়ার ছেলে সরওয়ার হোসেন (৪২), আকবর আহমদের ছেলে আবুল কালাম ইয়াসিন (২১), সিরাজ মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে মো. শফি (৩৮), গোলাম উল ইসলামের ছেলে নুরুল কাদের (৪৬), আজাহার আহমদের ছেলে জাফর আলম (৫০) ও মন্নু আলমের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৪)। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের মা ও তার আত্মীয়রা দাবি করেছেন, শুধু জমির বিরোধ নয়, পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার জের ধরে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এলাকায় নোবেলের জনপ্রিয়তা রয়েছে। জনপ্রিয়তাই কাল হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে নাছির উদ্দিনের জমিতে চাষ করতে গেলে এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি আকতার আহমদকে মারধর করে জমি থেকে উঠিয়ে দেন। পরে খবর পেয়ে নাছির উদ্দিন দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই এনামুল হক, রুবেল ও আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল বন্দুকধারী অতর্কিত গুলি ছোড়ে।
এ সময় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নাছির উদ্দিন নোবেল। আহত হন আরও ১২ জন। স্থানীয় লোকজন নোবেলসহ আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সবাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ঘটনা শুনেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দিলে মামলা নেয়া হবে। এর আগেই জড়িতদের ধরতে পুলিশের কয়েকটি টিমকে অভিযানে পাঠানো হয়েছে। অভিযান চালিয়ে স্থানীয় নাদের হোসেনের পুত্র হেলাল উদ্দিন (৩৬) ও আলী হোসেনের পুত্র নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।