আজঃ শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দক্ষিণ আফ্রিকায় শান্তা ইসলাম (২২) নামে এক বাংলাদেশি গৃহবধূকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে ওই গৃহবধূর স্বামী সুমন মিয়া তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। নিহত শান্তা ইসলাম টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের আব্দুস ছালাম শিকদারের মেয়ে।

নিহতের পরিবার বলছে, টাঙ্গাইলের পার্শ্ববর্তী বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মাস্টারের ছেলে সুমন মিয়া প্রায় ৮ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। সেখানে লাইটেনবার্গ শহরে ব্যবসা করেন তিনি। গত বছর পারিবারিকভাবে সুমন মিয়ার সঙ্গে শান্তা ইসলামের মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ে হয়।

প্রায় ছয় মাস আগে স্ত্রী শান্তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় তার কাছে নিয়ে যান সুমন মিয়া। এর কয়েক দিন পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। ব্যবসার ধরন বাড়ানোর জন্য সুমন শান্তাকে তার বাবার (শ্বশুর) কাছ থেকে টাকা চাইতে বলেন। কিন্তু শান্তা অসম্মতি জানালে একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতনও চালান সুমন। বিষয়টি জানার পর কয়েক দফায় সুমনকে সাত লাখ টাকা দেন শান্তার বাবা ছালাম শিকদার।

পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল রোববারও শান্তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন সুমন। এদিন বিকেলের দিকে শান্তার মোবাইলে কল করা হলে তাকে না পেয়ে ছালাম শিকদার আফ্রিকায় বসবাসরত তাঁর আত্মীয়দের বিষয়টি জানান। স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত একটা) আফ্রিকায় বসবাসরত কয়েকজন আত্মীয় সুমনের বাসায় যান। বাসায় গিয়ে দরজায় তালা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে ভেতরে শান্তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম ও পেটে ১৪টি ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ মরদেহের পাশ থেকে চাকু, হাতুড়ি ও রেঞ্জ উদ্ধার করেছে।

স্থানীয় পুলিশ শান্তার আত্মীয়দের জানিয়েছেন, স্বামী তাঁকে পিটিয়ে ও চাকু দিয়ে আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত শান্তার ফুপা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে শান্তাকে চাপ দিত সুমন। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও করত। মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে বিভিন্ন এনজিও এবং লোকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কয়েক দফায় সুমনকে সাত লাখ টাকাও দিয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আগামী বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার শান্তার মরদেহ দেশে আসতে পারে বলে আফ্রিকায় বসবাসরত আত্মীয়রা তাদের জানিয়েছেন।

নিউজ ট্যাগ: গৃহবধূকে হত্যা

আরও খবর



ট্রেনে ঈদ ফিরতি যাত্রা শুরু

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদুল ফিতরের পর বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সাত দিনব্যাপী ট্রেনে ফিরতি যাত্রা ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর জন্য আরও ১০ দিন আগে এই যাত্রার আসন বিক্রিও করেছিল রেলওয়ে। সেই যাত্রা শুরু প্রথম দিন শনিবার (১৩ এপ্রিল)।

এদিন সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে যাত্রী নিয়ে ট্রেনগুলো স্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে আসছে। তবে ট্রেনগুলো থেকে যথেষ্ট যাত্রী নামতে দেখা যায়নি। যারা এসেছেন তারা জানিয়েছেন, আজ ট্রেন অনেকটাই ফাঁকা ছিলো। আগামীকালও ছুটি, হয়তো পরশুদিন থেকে ট্রেনে চাপ বাড়বে।

ভোর থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে পঞ্চগড় থেকে আসা একতা এক্সপ্রেস (৭০৬) ট্রেনটি সকাল ৮টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ওই ট্রেনের যাত্রী হামিদুর রহমান বলেন, আমি ঈদের তিন দিন আগেই বাড়ি গিয়েছিলাম। যদিও কালকে বন্ধের দিন, কিন্তু কাজ থাকায় আজই ঢাকায় ফিরেছি। পরিবারে অন্য সদস্যরা আরো কয়েকদিন পরে ফিরবেন।

তিনি আরও বলেন, ঢাকায় ফিরতে ট্রেনে তেমন কোনো চাপ ছিল না। ট্রেন অনেকটা ফাঁকাই লেগেছে। হয়তো কালকের পর থেকে চাপ বাড়বে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ১৩ এপ্রিলের ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হয় ৩ এপ্রিল; ১৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৪ এপ্রিল; ১৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৫ এপ্রিল; ১৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৬ এপ্রিল; ১৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৭ এপ্রিল; ১৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৮ এপ্রিল এবং ১৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৯ এপ্রিল। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর ২ ঘণ্টা আগে থেকে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে।


আরও খবর
চাকরি ছাড়লেন দুদকের ১৫ কর্মকর্তা

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




মেহেরপুরে ট্রাকচাপায় দুই বাইসাইকেল আরোহী নিহত

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আব্দুল আলিম, মেহেরপুর

Image

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের চাঁদবিল নামক স্থানে ফ্রেস কোম্পানির সিমেন্ট বোঝায় ট্রাক চাপায় এক কলেজ ছাত্রসহ দুই বাইসাইকেল আরোহীর নিহত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান আলী সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের লিটন আলীর ছেলে। নিহত অপর একজনের নাম ও ঠিকানা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

এ ঘটনায় ট্রাকচালক বাবুল আলীকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি মাগুরা জেলার শালীকা গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে। তিনি ফ্রেশ সিমেন্ট কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল করিম জানান, সকালে দুই যুবক বাইসাইকেল নিয়ে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের চাঁদবিল গ্রাম থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। এ সময় ফ্রেশ কোম্পানির সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকও মেহেরপুরের দিকে আসছিল। ট্রাকটি একটি তেলপাম্পের আগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই দুই বাইসাইকেলের আরোহীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ওই দুইজন।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থলে আসে। সেখান থেকে ট্রাকচালক বাবুলকে আটক করে পুলিশ। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা লাশ উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সড়ক পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।


আরও খবর



প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক আজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বাংলাদেশ ও কাতারের দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকের পর দেশ দুটির মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) সই হবে।

এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৫টার দিকে বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন কাতারের আমির। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

জানা গেছে, আমিরের সফরে কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন।

সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।

এদিন বিকেলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে কাতারের আমির সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তারপর সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবেন শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হবে। এ ব্যাপারে গত ২১ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিরপুরের কালশী এলাকার বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়ালসড়ক পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমিরের নামে নামকরণ করা হবে।

২০০৫ সালের পর এবারই প্রথম ঢাকায় সফরে এলেন কাতারের কোনো আমির।


আরও খবর
চাকরি ছাড়লেন দুদকের ১৫ কর্মকর্তা

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর



জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে পৃথক শোক বার্তায় তারা প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নারায়ণ দাস। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে, স্ত্রী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নং কক্ষে রাত ১১টার পর পুরো পতাকার নকশা শেষ করেন শিব নারায়ণ দাস। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১ এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার পরিবর্তে শিব নারায়ণ দাশের নকশা করা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

শিব নারায়ণ দাসের জন্ম কুমিল্লায়। তার পিতা সতীশচন্দ্র দাস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। শিব নারায়ণ দাসের স্ত্রীর নাম গীতশ্রী চৌধুরী এবং তাদের সন্তান অর্ণব আদিত্য দাস।


আরও খবর
চাকরি ছাড়লেন দুদকের ১৫ কর্মকর্তা

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪