দক্ষিণ আফ্রিকার
পূর্ব উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাতে দেখা দেওয়া বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৬ জনে
দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবারের ওই
ধ্বংসযজ্ঞের পর বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি চার সন্তান হারানো এক পরিবারসহ প্রিয়জন
হারানো অনেক পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের সান্ত্বনা ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, আপনারা একা নন,
আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব সব করবো আমরা, শোকগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দেন তিনি।
বুধবার রাতে কোয়াজুলু-নাটালের
কোঅপারেটিভ গভর্নেন্স বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, মৃতের সংখ্যা ৩০৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ,
পানি সরবরাহ ফের সচল হয়েছে এবং আবর্জনা অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
ক্ষতিগ্রস্তদের
উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে রামাফোসা বলেছেন, আমাদের দেখা অন্যতম বড় দুর্যোগের মোকাবেলা
করছেন আপনারা। এতদিন আমরা ভাবতাম, এসব ঘটনা মোজাম্বিক বা জিম্বাবুয়ের মতো অন্য দেশগুলেোতেই
শুধু ঘটে।
দক্ষিণ আফ্রিকার
উত্তরের প্রতিবেশী মোজাম্বিক গত দশকে একের পর এক প্রলয়ঙ্করী বন্যার শিকার হয়েছে। গত
মাসেও দেশটিতে বন্যা, ভূমিধসে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় সন্তান
হরানো মেরি সোকেলা জানান, সোমবার রাতে যখন তাদের এলাকাটি ডুবে যায় তখন ছাদে বজ্রপাতের
মতো প্রবল শব্দ শুনতে পান তিনি, এরপরই তার বাড়ির দেয়ালগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান,
আমার প্রতিবেশীরা আমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে, এতে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। দুই ঘণ্টা
পর আমি বাঁচলেও আমার সন্তানটি মারা যায়,বলেন তিনি।
রামাফোসার জলবায়ু
কমিশনের একজন কমিশনার এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রাইটসের প্রধান মেলিসা ফৌরি বলেন,
এগুলোর কোনোটাই আশ্চর্যজনক না, কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংসাত্মক। কতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে,
ভাবতে পারেন? রাস্তা, বন্দর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায়
আমরা এখনও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসা নিয়ে আলাপ করছি যেন এটা ইচ্ছিক। আমাদের অবশ্যই
তা বন্ধ করতে হবে আর যে জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছি তার জন্য প্রস্তুতি শুরু
করতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার
মণ্ড ও কাগজ প্রস্তুতকারক সাপ্পি বুধবার জানিয়েছে, বন্যার কারণে তাদের কর্মীরা কাজে
আসতে পারছে না, মালামাল সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটেছে, এতে তিনটি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার ডারবান
বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার ধীরে ধীরে কার্যক্রম আবার শুরু করা
হয়েছে বলে দেশটির সরকারি উদ্যোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।