সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় স্কোয়াশ চাষে সফল হয়েছেন প্রবাস ফেরত কৃষক জহির উদ্দিন। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নে বাড়ির পাশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ২ বিঘা জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছেন তিনি। দু’একদিন পর পর জমি থেকে ফলন তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। অনেকে এসে জমি থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের রায়খাইলের জহির উদ্দিনের জমিতে আবাদকৃত স্কোয়াশ গাছে ফলন এসেছে। প্রতি পিস ফলনের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত। দুজন শ্রমিক নিয়ে জমিতে পরিচর্যা করছেন তিনি। পাশের জমিতে চাষ করেছেন টমেটো, কাঁচা মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও বেগুনসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি।
কৃষক জহির উদ্দিন জানান, প্রবাস থেকে ফিরে আর কিছু করতে না পেরে স্থানীয় কিছু পতিত জমিতে সবজি চাষ শুরু করি। প্রাথমিক ভাবে সফলতা লাভ করায়
৪ বছর ধরে কৃষি কাজ করছি। কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমার এ সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই আজ কৃষি কাজে এগিয়ে এসেছে পাশাপাশি পতিত জমি গুলো ও চাষাবাদের আওতায় চলে এসেছে। আমি এবার প্রথমবারের মতো ২ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক স্কোয়াশ চাষ করেছি। বাজার থেকে বীজ নিয়ে বপন করেছি। প্রথমবারই সফল হয়েছি। জমিতে আগে থেকে মালচিং করা ছিল। তাই তেমন খরচ হয়নি। মাত্র ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আরও ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’
তিনি আরো বলেন, একটি গাছে ১০-২০ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়। ঢাকার কয়েকটি সুপার শপের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা আগামীতে আমার কাছ থেকে স্কোয়াশ কিনে নেবেন। তাই আগামীতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি চাষের পরিধি আরও বাড়াবো।
এছাড়া ৪ বছর ধরে আগাম সবজি চাষ করে যাচ্ছি। প্রথমে সামান্য জায়গায় আগাম টমেটো চাষ শুরু করি। এবছর ৩ শতক জমিতে টমেটো, ২ শতকে শসা,১ শতকে তাল বেগুন,২ শতকে জালি কুমড়াও ২ শতকে ঢেড়স চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, আশা করি আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারবো।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গৌতম পাল বলেন, উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জহির উদ্দিন খুবই পরিশ্রমী একজন কৃষক। তিনি সব সময় আগাম সবজি চাষ করে ভালো লাভবান হয়ে থাকেন। এবার স্কোয়াশ চাষ করে সফল হয়েছেন। তাকে সব সময় কৃষি অফিস থেকে পরামর্শসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করা হয়।
উল্লেখ্য, জহির উদ্দিন গত বছর তার জমিতে মরুভূমির ফসল সাম্মাম চাষ করে বেশ সাড়া জাগিয়েছিলেন। তার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দেখতে বিভাগ ও জেলার কৃষি কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছিলেন।