দাম নির্ধারণের
এখতিয়ার ব্যাংকগুলোর হাতে ছাড়ার পরই বাড়ছে ডলারের দাম। বিপরীতে মান হারাচ্ছে দেশীয়
মুদ্রা টাকা। গতকাল সোমবারও ডলারের বিপরীতে টাকার দাম ৫০ পয়সা কমিয়ে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা
করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে একদিনের ব্যবধানে
ডলারের বিপরীতে টাকার দাম বেড়েছে ১৩ পয়সা। মঙ্গলবার (১৪ জুন) আন্তঃব্যাংকে প্রতি এক
ডলার ৯২ টাকা ৩৭ পয়সা বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট সূত্রে
এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, করোনার পরে আমদানি ব্যয় অধিক
হারে বেড়ে গেছে। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বাড়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। বাড়তি
চাহিদা সামালাতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের
দাম নির্ধারণ করছে না। ব্যাংকগুলো যে দামে লেনদেন করে, তার মধ্যে একটি দর বিবেচনায়
নেওয়া হয়। আজ ৯২ টাকা ৩৭ পয়সাকে বিবেচনায় নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত ৭ জুন ডলারের
দাম ৫ পয়সা বাড়িয়ে ৯২ টাকা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এক মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার মান
৫ টাকা ৪১ পয়সা কমেছে। আর চলতি বছরে শুধু ডলারের বিপরীতে অন্তত ১১ বার মান হারিয়েছে
টাকা।
গত ২ জুন কেন্দ্রীয়
ব্যাংক প্রতি মার্কিন ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। যা তার আগে
ছিল ৮৯ টাকা। পরে ডলারের বেঁধে দেওয়া দাম থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দাম নির্ধারণ
ব্যাংকগুলোর হাতেই ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজার বিশ্লেষণে
দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের (২০২১ সালের) আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক
মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের
আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
২০২১ সালের আগস্টের
শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে
বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে
এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল।
পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আরও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে ৮০ পয়সা এবং ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা।