ঢাকার দোহার উপজেলায় বিচারে সালিশদারদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার নারিশা খালপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার নারিশা খালপাড় এলাকায় আবুল কাশেম ওরফে কাশি ও তার ভাতিজা ওয়াজ উদ্দিনের সাথে গাছ কাটা নিয়ে বিচার বসে পাশের বাসা আলম খালাসির বাড়ির উঠোনে।
বিচারে প্রধান বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দোহার উপজেলা যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লা ও স্থানীয় মুরব্বিগণ। সেখানে আবুল কাশেমের পক্ষ নিয়ে বিচারে আসে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাফা ইসলাম সম্রাট মোল্লা ও তার নিজস্ব কিশোর গ্যাং। বিচার চলাকালীন এক পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লার সাথে কথা কাটাকাটি হয় সম্রাট মোল্লার সাথে। উগ্র মেজাজে বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লার সাথে খারাপ আচরণ করেন কিশোর গ্যাং লিডার সম্রাট মোল্লা। তখন রাগান্বিত হয়ে বিচার ছেড়ে চলে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লা।
বিচারে উপস্থিত দোহার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আতাউর রহমান সানি তার ব্যক্তিগত মোবাইল হাতে নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন। তখন চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাফা ইসলাম সম্রাট মোল্লা ও তার কিশোর গ্যাংয়ের লোকজন সাংবাদিক আতাউর রহমান সানির কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয় এবং সালিশির ভিডিও করছিলেন এমন মিথ্যা অভিযোগ করে তার উপর হামলা করে। পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়লে উপস্থিত থাকা সাপ্তাহিক নববাংলার প্রকাশক বিল্লাল হোসেন সাংবাদিককে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তার উপর হামলা করে সম্রাট ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। পরে বিল্লাল হোসেনকে রক্ষা করতে তার মা ও চাচাতো ভাই ফারুক এগিয়ে এলে তাদেরকেও মেরে রক্তাক্ত করে আহত করে সন্ত্রাসী সম্রাট ও তার বাহিনী। এসব ঘটনা ঘটে সেখানে উপস্থিত থাকা দোহার থানার সদস্য এসআই দেলোয়ারের সামনেই। এ হামলার ঘটনা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন এসআই দেলোয়ার।
এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লা বলেন, সম্রাট মোল্লা আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে এলাকাবাসিকে জিম্মি করে রেখেছে। ছোট ছোট উঠতি বয়সি ছেলেদের দিয়ে চাঁদাবাজি, ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক বিক্রি ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করছে। সম্রাট মোল্লা এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ওর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
তিনি আরো বলেন, আজকে ছোট একটা ঘটনা নিয়ে পক্ষ পাতিত্ব করে হামলা ও মারধর করেছে সে। এলাকাবাসিকে এর হাত থেকে মুক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসআই দেলোয়ার জানান, অভিযোগটা আমার কাছে ছিলো। তারা স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টা মিমাংসা করবে বলে আমাকে ফোন দিলে আমি সেখানে যাই। বিচারের সিদ্ধান্ত সম্রাট মোল্লা না মেনে বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব মোল্লার সাথে বেয়াদবি করে। তখন রজ্জব মোল্লা চলে যায়। সেখানে সাংবাদিক সানি ভাই মোবাইল হাতে নিলে সম্রাটের লোকজন তার উপর ও বিল্লাল হোসেনের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আমি ফেরানোর চেষ্টা করেছি। সেখানে আর কোনো পুলিশ সদস্য ছিল না। আমি একা ছিলাম।
এ বিষয়ে আহত বিল্লাল হোসেন দৈনিক আজকের দর্পণকে বলেন, আবুল কাশেম ও তারই ভাতিজা ওয়াজ উদ্দিনের সাথে গাছ কাটার বিষয় নিয়ে বিচার হচ্ছিলো। হঠাৎ বিচারের শেষ দিকে সম্রাটসহ তার কিশোর গ্যাং বাহিনী নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব মোল্লার উপর চড়াও হয়ে উঠলে পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পরে। বীর মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব মোল্লা চলে যাওয়ার পরেই সম্রাটের সন্ত্রাসী বাহিনী হঠাৎ করে সাংবাদিক আতাউর রহমান সানির হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। আমি পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে গেলে আমার উপরও হামলা করে রক্তাক্ত করে ফেলে ওরা। এমনকি আমার বৃদ্ধ মা ও চাচাতো ভাই ফারুক এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা করে রক্তাক্ত করে ফেলে এবং আমার গলায় থাকা স্বর্ণের একটি চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বিচারে আমিও একজন বিচারক হিসেবেই উপস্থিত ছিলাম।
অভিযুক্ত সম্রাটের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।
দোহার থানার ওসি তদন্ত আজহারুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে সোমবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।