আজঃ বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

দুই শিক্ষক নেতার কর্মকাণ্ডে বারবার অস্থিতিশীল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির পদে থাকা অবস্থাতেই বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অভিযোগ অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় এবারও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়েই উপাচার্যের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তারা।

সম্প্রতি ১৯ ফেব্রুয়ারি কুবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ের পরই ঐদিন বিকালে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন তারা। এছাড়া উপাচার্যকে নব্য আলী জিন্নাহ বলেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান। ৬ মার্চ উপাচার্যকে সবার সামনে পদত্যাগ করতে বলেন ও ডাস্টবিন বলেও সম্বোধন করেন।

এর আগেও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলী আশরাফের সময়ে ২০১৭ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেট সভায় যোগ দিতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। এ সময় সিন্ডিকেট সভাস্থল ভিসি বাংলোর মূলফটকে গাড়িসহ প্রবেশে চেয়ারম্যানকে বাধা দেওয়া এবং সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে জড়িত ছিলেন তিনি। এতে তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানসহ তৎকালীন শিক্ষক সমিতির আরো সাত সদস্যকে ইউজিসির চিঠির প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

একই বছরের শেষে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম এনে ইউজিসি বরাবর চিঠি দেয় তৎকালীন শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতির বিচারসহ ১৪ দফা দাবিতে ১৫ অক্টোবর উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষক সমিতি।

নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উপাচার্য ওই দাবি পূরণ করেননি অভিযোগ এনে পরদিনই (১৬ অক্টোবর) উপাচার্যের দপ্তরে তালা দেন তারা। প্রায় তিন সপ্তাহ উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসায় অস্থিতিশীলতা শুরু হয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে। এছাড়া একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ও একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করার ঘটনাও রয়েছে তার কর্মজীবনে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সিমেন্ট কোম্পানি থেকে আয়ের এক-চতুর্থাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তিনি জমা দেননি।

সর্বশেষ ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশীপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে এক বছরে নির্ধারিত সংখ্যক কোর্স শেষ করতে না পারায় বাতিল করা হয় মেহেদী হাসানের ফেলোশিপ। সম্প্রতি বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে জানা যায়, তিনি দেড় বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রথমে দুই বছরের ছুটি ভোগ করেন। পরবর্তীতে বিনা বেতনে এক বছরের ছুটি ভোগ করেন। সর্বশেষ ১০ মাস ২৬ দিনের অসাধারণ ছুটি কাটান তিনি। পরবর্তীতে তিনি আরও ছুটি চাইলে কুবির সিন্ডিকেট সভায় তা নাকচ হয়। এরপর থেকেই ছুটি ভাগিয়ে নিতে উঠেপড়ে লাগেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, শিক্ষক সমিতিকে বারবার উপাচার্য পতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সাধারণ শিক্ষকদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। নানা কাজে বিতর্কিতরা এবার সবাই এক ছাদের নিচে এসেছে। মেহেদী হাসানকে যদি ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় তিনি আর শিক্ষক সমিতি নিয়র ভাববেন না। তখন আর আন্দোলন, সংগ্রাম হবে না। সবাই সবার ব্যক্তিস্বার্থ উদ্বারের জন্য এক হয়েছে।

এ বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন জানান, আমরা মাস্টার্সের জন্য দুই বছর শিক্ষা ছুটি দিয়ে থাকি। তারপরও তার সমস্যার কথা বিবেচনা করে আরও প্রায় দুই বছর ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন উনি আরও যে ছুটি চাচ্ছেন তা নিয়মানুযায়ী দেয়া যায় না বলেই আমি সিন্ডিকেটে পেশ করি। সিন্ডিকেট তা বাতিল করে দিলে আমার এখানে কিছু করার থাকে না। এজন্য সে এখন আমার নামে আজেবাজে কথা বলে বেড়ায়।

এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রায় এক বছর পর শিক্ষক সমিতি গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সাধারণ সভায় মেহেদী হাসান উপাচার্যকে নব্য জিন্নাহ সম্বোধনে বক্তব্য দেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের এক শিক্ষক জানান, উপাচার্য থেকে অযাচিত ছুটি বাগিয়ে নিতে না পারায় এখন কিছু শিক্ষকদের সাথে একত্রিত হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন তিনি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু তাহেরের নামেও আছে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ ও বিতর্ক।

২০১১ সালে ৪৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮ দশমিক ৪ কিলোওয়াটের একটি সোলার প্যানেল স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার ড. তাহের। ঐ বছরই সোলার প্যানেলটি অকেজো হয়ে পড়লেও ড. আবু তাহের তাদের দিয়ে তা মেরামত না করিয়ে বাকি অর্থ দিয়ে দেয়। তখনই বাংলাদেশ অল্টারনেটিভ এনার্জি সিস্টেম লিমিটেড নামে নিম্নমানের একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে এ প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরেজমিন অভিযানেও প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে ২০২৩ সালে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।

এছাড়াও ২০২২ সালের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ১১ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে সেনাবাহিনীর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের। কিন্তু দুর্নীতি করার সুবিধার্থে কোষাধ্যক্ষকে এই প্রকল্পের বাইরে রাখার অংশ হিসেবে রেজিস্ট্রার নিজেই আইনবহির্ভূতভাবে এ স্বাক্ষর করেন বলে তখন অভিযোগ করছিলেন সংশ্লিষ্টরা।

বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, প্রায় ১ হাজার ৭ শত কোটি টাকার এই প্রকল্পকে ঘিরে উপাচার্য ড. এমরান কবির চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের দুর্নীতির সুবিধার্থে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজে নিজের গ্রুপের ঘনিষ্ঠ লোকজনকে যুক্ত করেছেন। এর অংশ হিসেবেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বেআইনীভাবে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার। এছাড়া রেজিস্ট্রার থাকাকালীন অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার ঘটনা সামনে আসে।

এছাড়া পছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিজ কোরামের শিক্ষকদের পদোন্নতি দ্রুত দিলেও অপছন্দের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতিতে গড়িমসি করতেন। এছাড়াও ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ড. আবু তাহের ইউনিট কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সে বছর ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, সে সময় ঐ উপাচার্য যেসব ভবনগুলো প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনায় শুরু করেছিলেন তা তো ৬-৭ বছরেও হস্তান্তর হচ্ছে না। তখন সেগুলো নিয়েই তো কথা বলেছিলাম। এদিকে ঐদিন (৬ মার্চ) উপাচার্য সবার সামনে শিক্ষকদের বলেন তারা রিসার্চ করতে পারেন না। এটা তো শিক্ষকদের জন্য চূড়ান্ত অপমান। এসব করলে তো দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছেন। আর ২০১৭ সালে ও এবারের কমিটিতে হতে পারে আমি ও তাহের স্যার কমিটিতে আছি, সেটা তো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছি। পূর্বের ঘটনা আর এবারের ঘটনা আলাদা বিষয়। আগের বারও আমি আর তাহের স্যার ছিলাম এটা হতেই পারে।

অভিযোগের বিষয়ে সভাপতি ড. মো. আবু তাহের বলেন, আগের ঘটনার সাথে এ ঘটনা মিলালে তো হবে না। উপাচার্য অনিয়ম, দুর্নীতি করলে আমরা সচেতন শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ তো জানাবোই। আমরা সাধারণ শিক্ষকদের ম্যান্ডেট নিয়েই এসেছি। এক বছর কমিটি না থাকায় তাদের দাবি-দাওয়া যে তারা বলতে পারছেন না সেটা তারা এখন আমাদের মাধ্যমে জানাচ্ছেন। এখন উপাচার্য যদি এসব অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করেন তাহলে আমরা তার সাথে থাকবো।


আরও খবর



ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ১টা ০৮ মিনিটের দিকে ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেওয়া হয়।

থাইল্যান্ডের মিনিস্টার ইন অ্যাটেনডেন্স পুয়াংপেত চুনলাইয়েদ, বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর এবং থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর। ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।


আরও খবর



সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। যা অব্যাহত থাকতে পারে। এজন্য তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়, শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলা সমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর



সমুদ্রপথ নিরাপদ করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যাতে বিভিন্ন সংকটের সময়ে নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌসংস্থার (আইএমও) নির্বাচিত সি ক্যাটাগরির সদস্য। ১৭৪টি দেশ আইএমওর সদস্য। কীভাবে সমুদ্রপথ  নিরাপদ করা যায় সেলক্ষ্যে আমরা একটি প্রস্তাব তৈরির কাজ করছি।

রবিবার (১৫ এপ্রিল) ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শিগগিরই সেটি (প্রস্তাব) আইএমওতে পাঠানো হবে। কারণ বাণিজ্যিক জাহাজগুলো যদি সংকটের সময়ে চলাচল করতে না পারে তাহলে বিশ্ব বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, অস্থিরতা বেড়ে যায়।

ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ২৩ জন নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। এবং সেটি সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় এ বিষয়ে সজাগ ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক নৌ উইংগুলো কাজ করেছে। দ্রুত আমরা নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি। এ ক্রেডিট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

ব্যাগে করে মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি দেখা গেছে-দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা কোন সিনেমার ছবি আমি তো জানি না। ‌ এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কিভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।

তিনি বলেন, জানতাম পরিত্যক্ত জিনিস পানিতে ফেলে। এত দামি জিনিস পানিতে ফেলে জানা ছিল না।

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজটি এখন দুবাইয়ের উদ্দশে যাচ্ছে জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, সেটি ১৯ বা ২০ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে। এরপরের পুরো বিষয়টি জাহাজ এবং নাবিকদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়। নাবিকরা কত দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছে, সেই চুক্তি তারা বহাল রাখবে, না কি তারা ফিরে আসবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, তবে মালিকরা গতকালকে খুব ভালো একটি কথা বলেছে। আমি শুনেছি, তারা যদি চায় বাংলাদেশে ফিরে আসবে। তাদেরকে বিমানযোগে বাংলাদেশের নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাদের রিপ্লেস যারা হবে। সেটা নিয়েও হয়তো তারা কাজ করছে।

ঈদের দিন ঢাকার সদরঘাট লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সার্ভেয়ারদের দুর্বলতা থাকলে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে।  অভ্যন্তরীণ নৌপথে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেটা সদরঘাট হোক, ভোলায় হোক, চাঁদপুরে হোক, বরিশালে হোক, মাঝ নদীতেই হোক না কেন- প্রত্যেকটার আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিভিন্ন ধরনের পানিশমেন্টগুলো হয়।

তিনি বলেন, ঈদের দিন আমরা উৎসবমুখর ছিলাম। ‌ সেখানে এই ধরনের একটি ঘটনা ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। জাহাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল অনেকে কিন্তু পালিয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একটা মামলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এই জায়গাটায় খুবই শক্ত আছি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক লঞ্চ গতি ও শক্তি নিয়ে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করে। এটা সব লঞ্চ করে, ব্যাপারটা তা নয়। বিশেষ বিশেষ কিছু লঞ্চ করে, শক্তিশালী কোন মালিক থাকলে তাহলে এটা করে। আমরা সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এই জায়গাটায় আমাদের জিরো টলারেন্স।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে ৪ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত, আহত ৪

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের শার্লট শহরে বন্দুক হামলায় ৪ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় এ বন্দুক হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে এক ব্যক্তিকে আটক করতে গেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের শার্লটে ওয়ারেন্ট বাস্তবায়নের সময় ৪ জন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় অন্য আরও ৪ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় দুই বন্দুকধারী জড়িত ছিলেন। আহত অফিসাররা ইউএস মার্শাল সার্ভিসের নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের অংশ।

শার্লট-মেকলেনবার্গ পুলিশ প্রধান জনি জেনিংস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অফিসাররা সামনের উঠানে একজন আততায়ীর দিকে গুলি চালায়, তারপর বাড়ির ভেতরে থেকে তাদের ওপর পাল্টা গুলি চালানো হয়।

পুলিশ প্রধান বলেন, আজ আমরা কিছু বীরকে হারালাম যারা আমাদের সবাইকে নিরাপদে রাখতে কাজ করছিল।

তিনি আরও বলেন, এটি তার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে পুলিশ অফিসারদের ওপর সবচেয়ে খারাপ হামলা।

শার্লট শহরের মেয়র ভি লাইলস এক বিবৃতিতে বলেছেন, আজকে শার্লট-মেকলেনবার্গ পুলিশ অফিসার এবং ইউএস মার্শালদের ওপর গুলির ঘটনায় তিনি গভীরভাবে দুঃখিত।


আরও খবর



বনের জমিতে দেড় শতাধিক কারখানা, উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা কী

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম লিমিটেড (বিবিএস) কেবলের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। ২০১৭ সালে কারখানা নির্মাণের জন্য গাছপালা কেটে সাতখামাইর ফরেস্ট বিটের তেলিহাটি মৌজার আরএস ২৯২৩, ২৯২৪ ও ২৯২৫ দাগের ১.৬১ একর সংরক্ষিত বনের জমি দখল করে নামি এই কেবল প্রতিষ্ঠানটি। দখল করা ওই জমির বর্তমান বাজারমূল্য অন্তত আড়াই কোটি টাকা। বন বিভাগ দখল করা ওই জমি এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এরই মধ্যে নতুন করে কারখানার মূল ফটকের সামনে প্রতিষ্ঠানটির  প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হাসনাইন ওরফে হাসান বনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন মার্কেট। ওই মার্কেট থেকে মাসে ভাড়া তুলছেন ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, গাজীপুর সদরের নলজানী এলাকার অভিজাত ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার মাসিক আয় কোটি টাকার বেশি। শীত, গ্রীষ্ম এমনকি হরতাল-অবরোধেও এই রিসোর্টের ভিলা খালি থাকে না। ৯-১০ বছর আগে নির্মাণের সময় ভাওয়াল রিসোর্টের পাশে থাকা সংরক্ষিত বনের বাড়ইপাড়া মৌজার এসএ সিএস ৩, ২৭৯ ও ২৭১ দাগের ৩.৬৮ একর জমি দখল করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় বন বিভাগ গ্রিনটেক রিসোর্টের দখল থেকে জমি উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলা করে। কিন্তু সেই জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। এভাবে গাজীপুরে সংরক্ষিত বনের জমিতে কারখানা, খামার, আলিশান রিসোর্ট, পিকনিক ও শুটিং স্পট নির্মাণ করে বছরে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করছে পৌনে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তিগত প্রভাব এবং অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যক্তিগত জমির সঙ্গে থাকা বনের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। সংরক্ষিত বনে বা বন ঘেঁষে তৈরি করা এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বন বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর ও সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩২১ একর বনের জমি অবৈধ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৫০০ একর জমি। গত এপ্রিল মাসে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে মাত্র ৮.৭৯ একর বনভূমি। অবশিষ্ট ভূমি রিসোর্ট, বাড়িঘর-দোকানপাট, হাটবাজার ও কৃষিজমি হিসেবে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িঘর তৈরি করে ২৩ হাজার ব্যক্তি দখল করেছে ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি। এতে বনভুমি উজাড় হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। অথচ এই আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বন বিভাগের। বরং নানা ফন্দিতে নতুন করে দখল হচ্ছে বনভূমি।

বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শ্রীপুরে ধনুয়া মৌজায় আরএকে সিরামিকস চার একর, রশোওয়া স্পিনিং মিল চার একর, ডিবিএল সিরামিকস আট একর, অটো স্পিনিং মিলস ২.২০ একর, সাতখামাইর মৌজায় আকন্দ গার্ডেন ১৬ একর, রিফাত ব্যাগ ২৫ শতক, পটকা মৌজায় ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ৭.৬৪ একর, কেওয়া মৌজার মিতা টেক্সটাইল ২.২০ একর, মেঘনা কম্পোজিট ৪০ শতাংশ, জোবায়ের স্পিনিং এক একর, ওমেগা সুয়েটার এক একর, সোলার সিরামিকস ৯০ শতাংশ, ইকো কটন ৪.৮৬ একর, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ দুই একর, অনটেক লিমিটেড ৪.৯৪ একর, হাউআর ইউ টেক্সটাইল এক একর, অরণ্যকুটির ২.২২ একর, উইষ্টেরিয়া টেক্সটাইল ৫.৩৩ একর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল দুই একর, এপেক্স নিট কম্পোজিট ১১.৬২ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৭.৩৮ একর, টেপিরবাড়ি মৌজায় ডিবিএল গ্রুপ ছয় একর, তেলিহাটি মৌজায় কুঞ্জু বিথি এক একর, আলিফ অটো ব্রিকস ৭০ শতাংশ, টেপিরবাড়ী মৌজায় চায়না বাংলা প্যাকেজিং এক একর, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস ৭৬ শতাংশ, এইচ এস অ্যাগ্রো দেড় একর, রেক্স অটো ব্রিকস এক একর ৭০ শতাংশ, টেংরা মৌজায় শিশুপল্লী প্লাস সাড়ে ১২ একর, মম পোলট্রি ৭০ শতাংশ ও ওয়ারবিট স্টিল বিল্ডিং দুই একর বনের জমি দখল করেছে। পেলাইদ মৌজায় সিসিডিভি পাঁচ একর, সাইটালিয়া জামান পোলট্রি দুই একর, মাওনা মৌজার মনো ফিড ২.২৫ একর, এইচ পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ শতাংশ, হোম ডিজাইন ১.২২ একর ছাড়াও বিবিএস কেবল, দি সোয়েটার, ইকো কটন মিলস, সিটিসেল লিমিটেডও বনের জমি দখল করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলায় বনভূমি দখলে সবচেয়ে এগিয়ে পারটেক্স গ্রুপ। পারটেক্স কটন লিমিটেড সদর উপজেলার ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাহাদুরপুর মৌজায় সিএস ২৫৪, ২৮৯, ২৯৪ ও ৩০০ নম্বর দাগে ১১.৬৭ একর, পারটেক্স হোল্ডিংস লিমিটেড একই মৌজার সিএস ২০৮, ৫৮৫, ২০৮ ও ৫৮৬ নম্বর দাগে ৫.০৯ একর, আম্বার ডেনিম লিমিটেড আড়াইশ প্রসাদ মৌজায় আরএস ৮ থেকে ১৮ এবং ২৮ থেকে ৩২ নম্বর দাগে ২৬.২৪ একর মিলিয়ে ৪৩ একর বনভূমি দখলে রেখেছে। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি পারটেক্স গ্রুপের কোনো কর্মকর্তা। মণিপুর এলাকায় বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৪২৮ ও ৫৯৮  নম্বর দাগে ৬.৫৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি দখল করেছে সান পাওয়ার সিরামিকস লিমিটেড। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে উচ্ছেদ মামলা করা হয়।

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে সান পাওয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম ভূঞা বলেন, কারখানার জমির এসএ ও আরএস রেকর্ড আমাদের নামে। কিন্তু শুধু গেজেটে নাম থাকায় বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করছে। কারখানাটি বিদেশি বিনিয়োগে স্থাপিত। বনের দাবি করা জমির সমপরিমাণ জমি অন্যত্র কিনে বনায়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৫৯৮ নম্বর দাগে ফু-ওয়াং সিরামিক ও ফু-ওয়াং ফুডের দখলে রয়েছে ৪.৪০ একর সংরক্ষিত বনভূমি। ২০০৭ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উচ্ছেদ মামলা করে বন বিভাগ। কিন্তু ওই সময় দায়সারা মামলা করায় আজও জমি উদ্ধার হয়নি। এ প্রসঙ্গে ফু-ওয়াং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বনের কোনো জমি নেই।’

এ ছাড়া প্যানাস অটোক্রিয়েশ গার্মেন্টস, ম্যাগডোনালস বাংলাদেশ, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এনএজেড গার্মেন্টস বাংলাদেশ, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস, বেন্টলী সুয়েটার, ওয়ান ডেনিম, ওয়ান স্পিনিং মিলস, এমআই ইয়ার্ন ডাইং, শরীফ বাড়ি খামার ও রেস্ট হাউস, ইপিলিয়ন স্টাইল, এটলাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এবি সিদ্দিক পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ, বেন ফিক্সস্টীল বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট, এসএম নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি কালেকশন, বাংলাদেশ মেইজপ্রডাক্ট, ইভিল টেক্স, তিতাস স্পিনিং, বেঙ্গল গার্মেন্টস, মালা পোলট্রি ফার্ম, মাসকাত পোলট্রি ফার্ম, টিএস ট্রান্সফরমার, ন্যাশানাল ফিড, মডার্ন ফিড, লিথি গ্রুপ, প্যারাগন পোলট্রি, স্কিন গ্রাফ, গর্ডন স্টিল মিলস, মোশারফ কম্পোজিট, প্যাকলাইন, আর্টিসান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বিটি লিমিটেড, মিলেনিয়াম স্টিল মিলস লিমিটেড, কুইন্স পোলট্রি ফার্ম লিমিটেড, অমনী অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, ঢাকা ফিশারিজ, রেডিয়াম এক্সেসরিজ, নির্জনা অ্যাপারেলস, গোলাম কিবরিয়া মৎস্য খামার, ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন, সাহাবা ইয়ার্ন, এটিআই সিরামিক, গিভেন্সি ডেনিমস, খোরশেদ আলম অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, বেঙ্গল হরিকেন ডাইং প্রিন্টিং লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ এবং আদি অ্যাগ্রো ফার্মের দখলে রয়েছে কোটি কোটি টাকার বনভূমি।

কালিয়াকৈর সোহাগ পল্লী রিসোর্ট, চন্দ্রা বিটের কালামপুর এলাকার রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট ও চন্দ্রার শিল্পী কুঞ্জ, কোকোলা ফুড প্রডাক্টস, কৌচাকুড়ি মৌজায় সিএস ৯৪২ নম্বর দাগে ১৫.০৫ একর বনভূমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হাজার হাজার একর বনভূমি জবরদখল হয়েছে। বন বিভাগ উচ্ছেদ মামলা করলেও নানা কারণে অভিযান এগোয়নি। বন বিভাগের পক্ষ থেকেও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ১৭ এপ্রিল থেকে উচ্ছদ অভিযান শুরু হয়েছে। শ্রীপুর ও সদর উপজেলায় ৮.৭৯ একর বনভূমি উদ্ধার হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

বন বিভাগের বক্তব্য

বিবিএস কেবলের বনভূমি দখল প্রসঙ্গে শ্রীপুর ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, বনভূমি দখলে বন বিভাগের নতুন যে তালিকা করা হয়েছে সেটিতে বিবিএস কেবলসও রয়েছে। সেখানে উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ করে জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।’

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হোসেন বলেন, এসব জমি অনেক আগে দখল হয়েছে। গত কয়েক বছরে নতুন করে কোনো দখল হয়নি। এরই মধ্যে বন বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে শতাধিক বিঘা জমি উদ্ধার করে বনায়ন করেছে। তা ছাড়া দখল করা জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যৌথভাবে উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হবে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালিকা ধরে উচ্ছদ কার্যক্রম চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’


আরও খবর