দুই যুগের বেশী সময় ধরে জরাজীর্ণ টিনসেডে ঘরে স্বাস্থ্য সেবা চলছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেন্দি ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। দুই কক্ষবিশিষ্ট টিনসেড ঘরটির চাল বর্তমানে মরিচা পরে বড় বড় ছিদ হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছিদ্র দিয়ে পানি পরে ওষুধসহ আসবাবপত্র ভিজে যাচ্ছে।
এছাড়াও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দরজা- জানালার অবস্থাও জরাজীর্ণ। যে কোনো সময় এটিতে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেনোও নিরুপায় হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন গজারিয়ার হোসেন্দি ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
এদিকে সেবা নিতে আসা রোগাীরা থাকে আতঙ্কে। ফলে অনেকে সেবা প্রার্থীরা ভয়ে নিজ ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে সেবা না নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৪মে) সরেজমিন গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায় গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী বাজারের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির।
সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ পিয়ড থেকে টিনসেড ঘরে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। ইউনিয়নের সব বয়সের নারী পুরুষকে জ্বর, সর্দি, কাশি, চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ছাড়া শিশু, গর্ভবতী নারী, কিশোর কিশোরীরদের জন্য রয়েছে বিশেষ সেবা। প্রতিদিন ৯০-১০০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নেন।
ইউনিয়নের রঘুরচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, এটি এমন একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র যেটি গত ৮৮ বছরেও টিনের চাল গুলো পরিবর্তন হয়নি।
হোসেন্দী বাজারে স্থানীয় স্টিল আলমারি ব্যবসায়ী সুমন খান জানান, এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল। অসহায় মহিলা ও গরিব লোকজন এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সেবা নিয়ে থাকেন।
হোসেন্দী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা: মো: শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের অফিসে জনবলের সংকট রয়েছে। অফিস সহকারি এবং আমি ব্যতিত আর কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। অনেক কষ্টসাধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৯০-১০০ জন রোগীদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুবাশ্বির বিনতে আলম জানান, হোসেন্দী উপ-স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি ঝুকিপূর্ণ টিনসেড ঘরটির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হয়। এখন পর্যন্ত টিনসেড ঘর ছাড়া নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। এই ইউনিয়নে রোগীরা নদী পথে নৌকাযোগে দুরবর্তী গ্রাম থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন সাধারণ শ্রেণি পেশার মানুষ। কিন্তু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘরটি এতোটাই জরাজীর্ণ অল্প বৃষ্টি হলেই টিন চুয়ে পানি পড়ে। তাছাড়া দরজা-জানালা গুলোও নড়বড়ে। চালের টিনে মরিচিকার আক্রমণে লৌহচূর্ণ হয়ে খসে পরছে নিয়মিত। রোগীদের বসার জায়গা নেই। সব মিলিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীর্ণ ঘরে বসেই স্থানীয় বাসিন্দাদের চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে মুন্সীঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: মঞ্জুরুল আলম জানান, অনেক আগে থেকেই জরাজীর্ণ। তবুও স্বাস্থ্য সেবা দিতে হচ্ছে। কিন্তু নতুন ভবন করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।