আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় কমিশনের ১৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
জাহাংগীর আলম বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনে ব্যালট পেপার এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ মেশিন মেরামতের জন্য যে ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল, সে অর্থ প্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার চলমান থাকবে বলে জানান ইসি সচিব।
তিন কারণে সরে আসা একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট হলেও এবার একটি আসনেও হচ্ছে না।
ইসি সচিব বলেন, ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবও নেওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পটি আর গৃহীত হয়নি। ইভিএমের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফ ১ লাখেরও বেশি ইভিএমের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ প্রস্তাব করে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে আগামী অর্থবছরে পাওয়া যেতে পারে বলে নিশ্চয়তা দেয়। এ অবস্থায় ইভিএমগুলো কিউসি (কোয়ালিটি চেকিং) করে কাজ করার মতো অর্থ ইসির হাতে নেই এবং সময়সাপেক্ষ বিষয়। রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে বিরোধিতাও কমিশনের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে বলে জানান তিনি।
জাহাংগীর আলম বলেন, নির্বাচনের আগে সময় স্বল্পতা ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ পেতে নিশ্চয়তা না পাওয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে যে ঐকমত্যের অভাব রয়েছে– সব বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এসময় আরও পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। এসব সিটি করপোরেশন হলো, গাজীপুর, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও খুলনা।
আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, রাজশাহী ও সিলেটে ২১ জুন, খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে ইসি কর্মকর্তারা জানান, গত ১১ মার্চ থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ গত ১১ মার্চ থেকে পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে এই সিটির ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ভোট হয় ২০১৮ সালের ২৭ জুন।