আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

ঈদে চলবে গণপরিবহন, খোলা থাকবে শপিংমল

প্রকাশিত:সোমবার ১২ জুলাই ২০২১ | হালনাগাদ:সোমবার ১২ জুলাই ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

চলমান কঠোর লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৫ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন শিথিল করে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

কুরবানি ঈদের মানুষের চলাচল ও পশুরহাটে কেনাবেচার বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহণ। খোলা থাকবে শপিংমল ও দোকানপাট। তবে বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। আর সরকারি অফিসের কার্যক্রম ভার্চুয়ালি চলবে।  

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন আরোপ করে সরকার। পরে সময়সীমা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। 


আরও খবর



ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুরের মামলা হাইকোর্টে স্থগিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ মামলার বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচ উল মাওয়া।

এর আগে, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে দায়ের করা মামলা স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

২০২১ সালে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রংপুর শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র খামার ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নুর জাহান বেগম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শামসুদ দোহা, বোর্ড সদস্য ইমামুস সুলতান, রতন কুমার নাগ ও শাহ জাহান।

মামলার বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আল মামুন জানান, মামলার বাদী অবসর গ্র্যাচুইটি ও অর্জিত ছুটি বাবদ নয় লাখ ৭৫ হাজার ১২৫ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ড. ইউনূসসহ আরও ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন ইউনিট কার্যালয়ের খামার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়ে বাদীর অবসর গ্র্যাচুইটি এবং অর্জিত ছুটি নগদায়ন বাবদ পরিশোধ না করে তাকে অবসরে যেতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া, পাওনা পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানটি টালবাহানা করে আসছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।


আরও খবর



ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক নিতে (আমদানি) ব্রাজিলকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (এপ্রিল ৮) সকালে গণভবনে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ সীমিত আকারে তৈরি পোশাক রফতানি করছে। ব্রাজিল যদি বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করে সেটা তাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী হবে। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য বিশেষ করে পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে ব্রাজিলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আসন্ন জি টুয়েন্টি সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা দেশটির প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ব্রাজিল সফরে সম্মত হন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ব্রাজিল তার আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ব্রাজিল উভয় দেশই ক্ষুধা-দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে বিভিন্ন ইস্যুতে একই পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

বৈঠকে প্যালেস্টাইন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে নৃশংসতা চালাচ্ছে সেটা গণহত্যা।

বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্রাজিলের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম সংবলিত ব্রাজিলের একটি জার্সি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাক্ষাতকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

আরও খবর



তীব্র গরমে প্রাথমিকে অ্যাসেম্বলি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশজুড়ে বইছে তীব্র থেকে মাঝারি তাপদাহ। সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

শনিবার (২০ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশজুড়ে বহমান তাপদাহের ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এদিকে শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর



ডিজির অনুপস্থিতিতে এডিজি সাত দিনে হাতিয়ে নিলেন সাড়ে ৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অসুস্থতার কারণে গত বছরের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। সেই ৯ দিন অধিদপ্তরের শীর্ষপদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পালন করেন সাত দিন। আর এটুকু সময়েই আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালে এক দিনেই ছাড় করেন মাল্টিপল পাসপোর্টের ৫০০ ফাইল। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা প্রতিটি ফাইল অনুমোদনের জন্য নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। সব মিলিয়ে এই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) সরাসরি কর্মকর্তা সেলিনা বানু পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা এডিজির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসন বিভাগের এডিজির পদটি শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই বিভাগের এডিজির দায়িত্বও পালন করছেন। পুরো অধিদপ্তরে তার ওপরে শুধু প্রেষণে আসা মহাপরিচালক রয়েছেন। অধিদপ্তরে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তার কথাতেই চলে সবকিছু। অনিয়ম-দুর্নীতিতে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের নির্দেশনাও অমান্য করে নিজের মতো ডিআইপির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পেয়েই দীর্ঘদিন আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের ফাইলগুলো ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করেন। অধিদপ্তরে তার সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইলগুলো অনুমোদন দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পাঠানো হয়। প্রতি পাসপোর্ট থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়ে তা সিন্ডিকেটে ভাগবাটোয়ারা হয়। কথিত আছে, ওই সময়ে পাসপোর্ট ভবনের তলায় তলায় কোরবানি ঈদ’ চলেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হলেও বিষয়টি রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন।

এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্টকে মাল্টিপল পাসপোর্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। অনেকেই বিদ্যমান পাসপোর্টের তথ্য গোপন রেখে নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করেন। তবে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মেলানোর সময় তা আটকে যায়। আবার অনেকে প্রকাশ্যেই তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। তখন কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অন্তত ১২ হাজার আবেদন তদন্তের জন্য জমা পড়ে আছে। এসব আবেদন যাচাই করে পুলিশের বিশেষ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে আবেদনকারীর বিপরীতে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে সে ধরনের নির্দেশনাও রয়েছে; কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এডিজি সেলিনা বানু অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিপত্র জারি করে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের আবেদনের বিষয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এরপর নিজের ক্ষমতাবলে টাকার বিনিময়ে পছন্দমতো ফাইল ছাড় করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের হাজার হাজার ফাইলের মধ্যে ৫০০ ফাইল অনুমোদন দেওয়া নিয়ে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেলিনা বানু প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তার রোষানলে পড়তে হয়। পরে টার্গেট করে কর্মকর্তাদের বদলি বা ন্যূনতম কারণেও বিভাগীয় মামলা ও বদলির মতো হয়রানিতে পড়তে হয়।

অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। বদলিজনিত চাকরি হলেও তিনি ঢাকার বাইরে খুব বেশি দায়িত্ব পালন করেননি। এ সুযোগে তিনি একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে তার নিজস্ব বলয়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী রয়েছেন। বিদেশি মিশনগুলোর কয়েকটিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরেও কর্মী রয়েছে। সেলিনা বানু অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় সবাই তাকে অতি সমীহ’ করে চলেন। বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস থেকে তার অনুগতরা মাল্টিপল আবেদনগুলো বাছাই করে দিয়েছেন। সেগুলোই মূলত তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে ছাড় করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ওই সূত্রটি জানায়, প্রতিটি মাল্টিপল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সেলিনা বানু ও অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট নিয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। তবে দালাল চক্র ও অন্যান্য জেলা অফিসে তার অনুগত কর্মীরা আবেদনকারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে নেন। বছরজুড়েই সেলিনা বানু টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেন। তবে ডিজির অনুপস্থিতিতে একসঙ্গে ৫০০ আবেদন অনুমোদন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাল্টিপল আবেদনের সবকিছু ঠিক থাকলেও একজন আবেদনকারী টাকা না দেওয়ায় পাসপোর্ট পাননি। এরপর ওই আবেদনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সূত্র জানায়, শুধু মাল্টিপল পাসপোর্টই নয়, সেলিনা বানু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) সিল দেওয়ার জন্যও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাদিরা আক্তারকে ভিসা শাখার দায়িত্বে রেখেছেন। এই কর্মকর্তা সেলিনা বানুর অনুগত হওয়ায় তাকে পার্সোনালাইজেশন সেন্টার থেকে ভিসা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংযুক্ত করে রেখেছেন। প্রতিটি পাসপোর্টের এনভিআর দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো বিদেশি পাসপোর্টধারী দেশে এসে নো ভিসা রিকোয়ার্ডের আবেদন করলে তার আর বাংলাদেশে আসতে কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না।

ওই সূত্রটি জানায়, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে দেশে বসবাসকারী বিদেশিদেরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে ভিসা এক্সটেনশন বা মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা টাকার বিনিময়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেশে মাদক কারবারসহ না অনিয়ম করছে।

মাল্টিপল পাসপোর্ট ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে এডিজি সেলিনা বানুর দপ্তরে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়; কিন্তু তিনি সময় দেননি। পরে তাকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে টেলিফোনে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে অভিযোগ থাকলেও আমি তো বক্তব্য দিতে পারব না, আমি তো পত্রিকায় বক্তব্য দিতে পারি না।’

বেনামি চিঠিতে গুরুতর তথ্য সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে:

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ তুলেছেন, সেলিনা বানুর অপকর্ম নিয়ে কথা বললেই তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসে। এ জন্য মুখ না খুলে আতঙ্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দেশের প্রায় সব পাসপোর্ট অফিসে বেনামি চিঠি দিয়ে এই কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য থেকে নিস্তার চেয়েছেন। এসব চিঠিতে সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৩০ বছর ধরে চাকরি করলেও তিনি ৬৪ জেলার কোথাও বদলি হননি। একবার অনিয়মের কারণে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও বেশি দিন থাকতে হয়নি। তার স্বামী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এ কে এম মাসুদুল হক রিজভী জামায়াতের পদধারী। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কামারুজ্জামান তাদের স্বজন। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি।

চিঠিতে বলা হয়, এডিজি সেলিনা বানুর বাড়ি জামালপুরে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরে রেলে নাশকতার ঘটনায় তার স্বজনরাও জড়িত।

ওই চিঠির সূত্র ধরে সেলিনা বানুর গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পরিবারের কেউ সরকার সমর্থক নয়। তার স্বামী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরিচিত কয়েক শিক্ষক এবং সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক মাসুদুর রহমান কখনো স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলয়ে ছিলেন না। তবে প্রকাশ্যে তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায় না।

সেলিনা বানু আতঙ্কে পুরো পাসপোর্ট অধিদপ্তর:

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই বছরে এডিজি সেলিনা বানু আইফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে কর্মকর্তাদের কয়েকটি প্রাইজ পোস্টিং দেন। তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে বদলি হতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তার ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়েছে ময়মনসিংহসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন সময়েই কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিতে হয়। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার অনুগত করতে সামান্য ভুলেও বিভাগীয় মামলা, নানা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার ভয় দেখানোসহ নানাভাবে হুমকি দেন। উড়ো চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অনিয়ম থেকে রক্ষা পেতে আবেদন জানিয়েছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সেলিনা বানুর নানা অনিয়ম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। তবে কেউ গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। সবাই নাম প্রকাশ না করে তার অপকর্ম তুলে ধরেন।

সরকার সমর্থক না হয়েও সেলিনা বানু এত প্রভাবশালী কীভাবে? সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা সব সময়েই কৌশলে চলেন। যখন যে মহাপরিচালক দায়িত্বে আসেন, তিনি কৌশলে তার লোক হয়ে যান। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে প্রচার চালায় তার অধিনস্তরা। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগেও কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তিনি পুরো অধিদপ্তরই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন।


আরও খবর



কোটি টাকার মাদক আইসসহ সংগীতশিল্পী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

কোটি টাকা মূল্যের মারাত্মক ক্ষতিকর মাদক আইসসহ সংগীতশিল্পী এনামুল কবির রেবেল ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রামপুরা থানাধীন মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদ এলাকা থেকে রেবেলকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক কেজি আইস উদ্ধার করা হয়; যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি টাকা।

মশিউর রহমান বলেন, শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে রামপুরা থানায় এ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারকৃত রেবেল জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী পপগুরু আজম খানের দলের সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।


আরও খবর