ঈদ আসতে খুব বেশি আর দেরি নেই। ঈদের আগে থাকে নানা কাজের চাপ। তা ছাড়া এক মাস রোজা থাকার ছাপ চেহারাতেও দেখা যায়। তাই তো ঈদের আগে ত্বকে প্রয়োজন যত্ন। ঈদের আগে কয়েক দিন ত্বকের যত্ন নিন। এতে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব, চোখের নিচে কালো দাগ, ত্বকে যেকোনো কালো ছোপ, মলিনভাব কিছুটা হলেও কমে আসবে। এ ছাড়া ঈদের দিন ও ঈদের পরে যেকোনো দাওয়াতে গেলে ত্বকে মেকআপ বসাতেও সুবিধা হবে। সঙ্গে খাবারের দিকেও সতর্ক হতে হবে। চলুন জেনে নিই কোন ধরনের ত্বকে কেমন যত্ন নেওয়া উচিত।
স্বাভাবিক ত্বক: স্বাভাবিক ত্বক মসৃণ ও সুন্দর হয়। আর্দ্রতা থাকার কারণে খুব শুষ্ক বা তৈলাক্ত হয় না। তবে এ ধরনের ত্বক বয়সের সঙ্গে শুষ্ক হতে শুরু করে। এমন ত্বকে নরম ব্রাশে সাবান বা ফেসওয়াশ লাগিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লাগান। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে রক্ত চলাচল খুব ভালো হয়। চোখের চারপাশে কাঠবাদামের তেল লাগাতে পারেন। ত্বকেও কাঠবাদামসমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার করুন। পাকা পেঁপে এ ধরনের ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এক টুকরা পাকা পেঁপে নিয়ে সেটা মুখে ও গলায় ঘষে নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কমলা লেবুর খোসার বাটা, কয়েক ফোঁটা জলপাই তেল, খাঁটি মধু একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখমণ্ডলে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন। স্বাভাবিক ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। মসুর ডালের বাটা, মধু, কাঁচা দুধ, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হবে মসৃণ ও সুন্দর।
তৈলাক্ত ত্বক: এ ধরনের ত্বক পরিষ্কার করার কিছুক্ষণ পরই আবার তৈলাক্ত হয়ে যায়। তাই প্রয়োজন একটু যত্নের। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি বেশ উপকারী। গোলাপজলের সঙ্গে মুলতানি মাটি ও এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য এটি বেশ ভালো একটি মাস্ক। পরিষ্কার মুখে মাস্ক লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে। পরে হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস বেশি হয়। তাই নিয়ম করে স্ক্রাবিং করুন। চিনি ও মধুর স্ক্রাব তৈরি করে নিতে পারেন। হালকা ভেজা ত্বকে হাত ঘুরিয়ে আলতো হাতে মালিশ করতে হবে। সপ্তাহে দুবার এ স্ক্রাব ব্যবহারে ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস কমে যায়। তবে ব্রণের সমস্যা থাকলে স্ক্রাব না করাই ভালো। খাদ্যাভ্যাসে নজর দিন। ত্বক ভালো রাখতে টকজাতীয় ফল বেশ সাহায্য করে। লেবুর শরবত, মাল্টা বা কমলার রস, পেয়ারা, আমলকী ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখুন। শসার সালাদ খাওয়া যেতে পারে। ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলুন। টক দই খেতে পারেন। এতে তৈলাক্ত ভাব কমবে, ত্বক ভালো থাকবে।
শুষ্ক ত্বক: শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রেও ঘরোয়া বিভিন্ন উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করা যায়। এ ধরনের ত্বকে অসময়ে বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া মৃত কোষের স্তরও পড়ে দ্রুত। তাই নিয়মিত যত্ন নেওয়া উচিত। এ ধরনের ত্বক প্রাণহীন দেখায়। তাই এমন মাস্ক ব্যবহার করুন, যা ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। দুধের সরের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ ও কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে ওপরের দিকে হাত ঘুরিয়ে মালিশ করুন পাঁচ মিনিট। এরপর পানির ঝাপটা দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে এই মিশ্রণ প্রতিদিন ব্যবহার করুন। টানা সাত দিন ব্যবহারে ত্বকের শুষ্ক ভাব অনেকটাই কমে আসবে। এ ধরনের ত্বকে গরমে নানা সমস্যা হতে পারে। খাদ্যতালিকায় পানি রাখতে হবে, সঙ্গে তরল খাবার। ফলের রস খেতে পারেন। ভিটামিন এ, ই রয়েছে, এমন খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। পাশাপাশি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট খেতে হবে। স্যুপ খাওয়া যেতে পারে।