
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ৩য় বর্ষের রেজাল্ট তৈরি হয়নি ১১ মাসেও ৷ ফলে ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা আটকে আছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। একদিকে চাকরির চিন্তা, অন্যদিকে পরিবারের চাপে অস্থির হয়ে পড়েছেন স্নাতক শেষ করতে না পারা এমন অনেক শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসে। এখন মে মাসের প্রায় শেষের দিকে অর্থাৎ ১১ মাস হয়ে গেছে কিন্তু রেজাল্ট তৈরিই হয় নি।
এ প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে এই বিভাগের ৫ জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলা হয়। সকলেই সমস্যার কথা বলেছে, কিন্তু কেউ ভয়ে নামপ্রকাশ করতে চায় নি।
এসব শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সাথে পড়ুয়া সকলেরই স্নাতক শেষ কিন্তু তারা আদৌ চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কবে দিবে সেটাই জানে না। এখনো রেজাল্ট তৈরি হয় নি। বিভাগে রেজাল্টের কথা জিজ্ঞেস করলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের গাফলতির কথা বলে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর বলে সেকেন্ড এক্সামিনারের কথা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন এক শিক্ষার্থী বলেন, বাসা থেকে অসুস্থ বাবা-মা যখন ফোন করে বলে বাবা কবে শেষ হবে তোর অনার্স। তোর সাথে বাকিদের অনার্স তো শেষ। তোর কামাই খেয়ে কী মরতে পারবো না! তখন কোনো জবাব দিতে পারি না! পৃথিবীর নিকৃষ্ট সন্তান মনে হয় নিজেকে। সবকিছু দেখে মনে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদেরকে দয়া মায়া করে ভর্তি নিছে। তাই তারা আমাদের সাথে যা ইচ্ছে তাই করছে। সেদিনও এক বন্ধু এই চরম হতাশা থেকে গলায় ফাঁস দিতে গেছে। যদি এমন অঘটন ঘটেই যায় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে? আচ্ছা আমাদের এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করার মতো কী কেউ নাই?
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, সেকেন্ড এক্সামিনার খাতা নিয়ে জাপানে চলে যায়। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নানা কথা বলেন। পরে আমরা যেখানে খাতা জমা দিয়েছিলাম (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণক দপ্তর) সেখানে যোগাযোগ করলে তিন মাসের পর তারা অন্য একজনকে খাতা দেখতে দেয়৷ আমরা ঐ খাতার রেজাল্ট পেয়েছি। আশাকরি দুই এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা রেজাল্ট পাবলিশ করতে পারব।
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর স.ম. ইমানুল হাকিম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত না। আমায় এসএমএস করে বিষয়টি জানালে আমি কোয়ারি করে দেখতাম। তিনি বলেন, আমি যোগদান করেছি ছয় মাস হলো। আমার যোগদানেরও আগের বিষয় এটা। ছয় মাসেও বিষয়টি আপনার নজরে আসেনি বললে তিনি বলেন, আমাকে এসএমএস করে দিলে বিষয়টি আমি কোয়ারি করে দেখতাম।
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, ১১ মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো রেজাল্ট হয়নি এটা সম্পর্কে আমি অবগত না। আমাকে ঐ বিভাগের সাথে কথা বলতে হবে। তবে রেজাল্ট তৈরিতে ১১ মাস সময়টা কোনো স্বাভাবিক সময়ের মধ্যে পরে না।