আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল যেসব জেলা

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
Image

১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ, মাগুরা ও নোয়াখালী জেলা পাকিস্তানি হানাদারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিদেনটি করা হলো।

 

গোপালগঞ্জ

আজ সোমবার, ৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ শহর হানাদার মুক্ত হয়। গোপালগঞ্জ মুক্ত হওয়ার আগে এই অঞ্চলে হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

 

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদাররা গোপালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মিনি ক্যান্টনমেন্টে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে হত্যা করে গণ-কবর দেয়। ৬ ডিসেম্বর সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরের দিকে আসে। পাকিস্তানি সেনাদের আস্তানায় চারিদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ বলয় রচিত হয়।  গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানা, উপজেলা পরিষদ (বর্তমানে) সংলগ্ন জয় বাংলা পুকুর পাড়ের মিনি ক্যান্টমেন্ট ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর ভোরে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করে মুক্তিযোদ্ধারা। সেই সঙ্গে মুক্ত হয় গোপালগঞ্জ শহর ও এর আশপাশ এলাকা।

 

প্রতিবছর দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হলেও এবছর করোনার কারণে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সীমিত আকারে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

 

আজ ভোর ৭টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বদ্ধভূমিতে শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। বেলা ১১টায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সভাকক্ষে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর।

 

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, করোনায় সব সরকারি-বেসরকারি কর্মসূচি সীমিত করা হয়েছে। তাই ৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবসের কর্মসূচিও সীমিত করে শুধু শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। 

 

মাগুরা

৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিন মাগুরা পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়।

 

মাগুরার মুক্তিযোদ্ধারা তৎকালীন মাগুরা ও ঝিনাইদহ মহকুমার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ফরিদপুর জেলার একটি অংশকে শত্রুমুক্ত করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যশোর থেকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি অংশ তাড়া খেয়ে মাগুরায় পালিয়ে আসে। এক পর্যায়ে মাগুরায়ও তারা তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। মিত্রবাহিনীর সঙ্গে মাগুরার মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা প্রবল আক্রমণে শত্রুবাহিনীকে মাগুরা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা মাগুরা ত্যাগ করে ফরিদপুরের কামারখালী অভিমুখে চলে যেতে বাধ্য হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় আকবর হোসেন মিয়া এবং মোল্লা নবুয়ত আলীর নেতৃত্বে শ্রীপুর বাহিনী মাগুরায় প্রবেশ করে প্রশাসনিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে।

 

বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম আবুল ফাত্তাহ বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের মাগুরা ত্যাগ করলে স্বাধীনতাকামী জনতার মাঝে স্বস্তি আর শান্তি ফিরে আসে। এ সময় মুক্তিপাগল জনতা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। এভাবেই ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ মাগুরা হানাদার মুক্ত হয়।

 

মাগুরা মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মাগুরা জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তযোদ্ধা সংসদ, মাগুরা পৌরসভাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিনভর কর্মসূচির পালন করবে। যার মধ্যে রয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা, লাঠি খেলা, সন্ধ্যায় ব্ল্যাক আউটের মাধ্যমে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে মোমবাতি প্রজ্বলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল  আলম বলেন,  এবার মাগুরা মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে সবই এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে।

 

নোয়াখালী

৭১ সালের এই দিনে নোয়াখালী মুক্ত হয়। এদিন জেলা শহর মাইজদী প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) এ রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটি দখলের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর মাটিকে মুক্ত করে লাল সবুজের বিজয় নিশান উড়িয়েছিল মুক্তিসেনারা।

 

৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানিরা। এসময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনীর হামলায় অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা ও মিলিশিয়া মারা যায়।

 

মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তযুদ্ধকালীন সি-জোন কমান্ডার এবং বর্তমান সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন বলেন, ৭ ডিসেম্বর ভোররাত থেকে মুক্তিযোদ্ধারা নোয়াখালীকে শত্রুমুক্ত করার চূড়ান্ত অপারেশন শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে সব মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে চারদিক থেকে আক্রমণ চালিয়ে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা সংলগ্ন টেকনিক্যাল হাইস্কুলে অবস্থিত রাজাকার ক্যাম্প মুক্ত করে এবং একই দিন জেলা শহর মাইজদি বাজার ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, নাহার মঞ্জিল, রৌশনবাণী সিনেমা হল, দত্তেরহাট ও সোনাপুর কোল্ড স্টোরেজের রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। এভাবে শত্রুমুক্ত হয় নোয়াখালী। বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠে মুক্তিকামী জনতা। শহরের কোর্ট বিল্ডিং এ উড়ানো হয় জাতীয় পতাকা।

 

নোয়াখালী মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিরন বলেন, দিবসটি উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর মাইজদি পিটিআই সংলগ্ন মুক্ত স্কয়ারে বিকাল ৩ টায় পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

 

সাতক্ষীরা

আজ ৭ ডিসেম্বর, সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৬টি যুদ্ধ জয়ের পর এদিন সাতক্ষীরার মাটিতে মুক্তিযোদ্ধারা ফিরে আসতেই পিছু হটে যায় পাকিস্তানি বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারা ঘিরে ফেলে সাতক্ষীরার ডাকবাংলোয় ঘাঁটি করা জঙ্গি পাকিস্তানি সেনাদের।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহিত খান দুলুর নেতৃত্বে ধুলিহর বেজেরডাঙ্গা থেকে একটি দল এবং ক্যাপ্টেন হুদা ও আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আরও দুটি মুক্তিযোদ্ধা দলের ত্রিমুখী আক্রমণের মুখে শত্রু বাহিনী বেনেরপোতা ও বেত্রাবতী ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে পিছু হটে যায়। বীর যোদ্ধারা সাতক্ষীরা থানা ভবনে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ঘোষণা দেন সাতক্ষীরা মুক্ত দিবসের। নানা আয়োজন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে পালিত হবে সাতক্ষীরামুক্ত দিবস।

 

৩০ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভীত সন্ত্রস্ত করে ফেলে পাতিস্তানি সেনাদের। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানে সেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বেনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।

 

শেরপুর

৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহায়তায়  মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করেন। এইদিন মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সর্বাধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে হাজারো জনতার এক স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে  শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে  তিনি মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পাতাকা উত্তোলন করেন।

 

শেরপুর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান তালাফতুপ হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৩০-৪০টি খণ্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এসব যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৫৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার আহম্মদনগর উচ্চবিদ্যালয়সহ বিভিন্নস্থানে গড়ে তোলা ঘাটিতে  চলে তাদের  নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। এসব ঘাটিতে রাজাকার, আলবদর আর দালালদের যোগসাজসে হানাদাররা চালাতে থাকে নরহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের নৃশংস ঘটনা। ১১ নং সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের বেশ কবার কামালপুর দুর্গে আক্রমণ চালান। ১১ দিন অবরোধ থাকার পর ৪ ডিসেম্বর এ ঘাটির পতন হয়। জাতীয়ভাবে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়  দিবস উদযাপিত হলেও এই দিনটি শেরপুর জেলা বাসীর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

 

শেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে  জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা ।

 

বাগেরহাট

৭ ডিসেম্বর মোংলা ও সুন্দরবন এলাকা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে এ এলাকা শক্রু মুক্ত করেন।

 

মোংলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শেখ আব্দুর রহমান জানান, ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিল ও সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন আহমদ এবং কবির আহমেদ মধুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধার মোংলা ও সুন্দরবন এলাকা সম্পূর্ণভাবে শক্রু মুক্ত করেছিলেন। বিশেষ করে সুন্দরবনে স্থাপিত ৫টি ক্যাম্পে সেনা কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। আর সুবিধা মতো সেখান থেকে আক্রমণ করা হতো মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ ও পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পগুলোয়। দীর্ঘকাল পরে হলেও মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষ থেকে পৌর পার্ক এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি যুদ্ধ জাহাজ সম্বলিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য।



আরও খবর
আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস

সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪




টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলি, আতঙ্ক

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে টানা কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে  শনিবার দুপুর পর্যন্ত গোলাগুলির আওয়াজ অনেকটা বেশি শুনা যায়। ফলে এ পাড়ের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, টানা কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আজ মধ্যরাতের পর থেকে শব্দ অনেকটা বেড়ে যায়। মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংস ঘটনায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা মৌলভিপাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যায়। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের ওপারের মিয়ানমারের কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামগুলোতে যুদ্ধ চলছে।

উনছিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা দিলদার আহমেদ বলেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে উনছিপ্রাং সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ হয়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হলেও মনে হচ্ছে- এগুলো আমাদের ঘরে পড়ছে। গুলি-মর্টার শেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙে আমাদের।

লম্বাবিল এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়। এতে আমাদের সীমান্তে বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙে। আমরা অনেক আতঙ্কে আছি।

হোয়াইক্ষং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে ভারী অস্ত্রের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের কাছাকাছি বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বেশিরভাগ জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এদিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছে।


আরও খবর



আগামী বছরে ট্রেনের ৮০০ বগি আমদানি করা হবে: রেলমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

দেশেই ট্রেনের বগি তৈরির কারখানা নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। তিনি বলেছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে ৮০০ বগি আমদানি করা হবে। নতুন ইঞ্জিনও আনা হবে। রেলের আধুনিকায়নে নতুন প্রকল্প নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জিল্লুল হাকিম বলেন, রেলের বগির সংকট রয়েছে। পুরনো বগি মেরামত করে আসন্ন ঈদ পার করা হবে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই নতুন বগি এবং কিছু ইঞ্জিন কেনা হবে।

শিগগিরই নতুন ট্রেন চালু করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নতুন বগি এসে গেলেই পাকশী থেকে গোয়ালন্দ একটি শাটল ট্রেন চালু করা হবে। আগে যেভাবে গোয়ালন্দে ট্রেন চলাচল করত। এখন একটি ট্রেন গোয়ালন্দে চলাচল করছে। অবহেলিত সূর্যনগর রেলস্টেশনের টেন্ডার হয়েছে। অচিরেই এর কাজ শুরু হবে।

এ সময় আরও বক্তৃতা করেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল মোর্শেদ আরুজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আলী, ফকির আব্দুল জব্বার, হেদায়েত আলী সোহরাব প্রমুখ।

এর আগে রবিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এরপর অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে শিশু দিবসের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।


আরও খবর



ভক্তের আবদারে সেলফি ‍তুলতে গিয়ে বিব্রত কাজল

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

সম্প্রতি এক স্টোর লঞ্চ ইভেন্টে হাজির হয়েছিলেন ভারতের দক্ষিণী নায়িকা কাজল আগারওয়াল। সঙ্গে ছিলেন তার বাবা বিনয়। সেখানেই এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন অভিনেত্রী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) ভাইরাল হয়েছে কাজলের একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, সেলফি তোলার বাহানায় এক ব্যক্তির স্পর্শে অপ্রস্তুত অনুভব করেন তিনি।

কাজল সম্প্রতি হায়দ্রাবাদে একটি স্টোর লঞ্চে অংশ নেন। সে সময় এক ব্যক্তি তাকে সেলফি তোলার অনুরোধ করেন। তবে ছবিটি তোলার সময় ওই ব্যক্তি কাজলের কোমর স্পর্শ করেন। অভিনেত্রীকে বেশ আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল সে সময়।

ইভেন্টের ভিডিও এক্স প্ল্যাটফর্মে শেয়ার হতেই ওই নেটিজেনের ভিডিওতে দৃশ্যটি নজরে আসে। অভিনেত্রী যদিও অনুষ্ঠান স্থলে কোনো বাধা দেননি। এরপরই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে যোগ দেন তিনি।

দুর্ভাগ্যবশত, কাজল প্রথম নারী অভিনেত্রী নন যিনি এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। সারা আলি খান, অপর্ণা বালামুরালি, অহনা কুমার, মালাইকা আরোরাসহ এমন কয়েকজন অভিনেত্রী আছেন, যারা গত বছর নানা রকমের ইভেন্টে যোগ দেওয়ার সময় এই ধরণের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন।

নিউজ ট্যাগ: কাজল আগারওয়াল

আরও খবর



টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

প্রথম ম্যাচে অল্পের জন্য পাওয়া হয়নি জয়। পাহাড়সম রান তাড়ায় বাংলাদেশ অবশ্য দিয়েছে সাহসিকতার পরিচয়। সেই আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে আজ বুধবার (৬ মার্চ) দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে টস জিতে বোলিং বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইতোমধ্যে পিছিয়ে পড়েছেন শান্ত-লিটনরা। সিরিজে টিকে থাকতে আজ জয়ের বিকল্প নেই স্বাগতিকদের।

টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, আমরা আগের ম্যাচে দারুণ খেলেছি। সবার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। জিততে পারলে অবশ্যই ভালো হতো। আজ ভুলগুলো শুধরে জয়ের জন্যই নামব।

শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা বলেন, টস জিতলে আমরাও ব্যাটিংই নিতাম। আগের ম্যাচে আমাদের কিছু ভুল ছিল। যে কারণে প্রায় হেরে যাচ্ছিলাম। তবে, সেসব নিয়ে ভাবছি না। আজকের ম্যাচে নজর দিচ্ছি।

প্রথম ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ভরসা রেখেছে সেই ১১ জনের ওপর। যাদের নিয়ে আজ লড়াইটা সিরিজ বাঁচানোর।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




এবার গাজা ইস্যুতে সামরিক ইউনিফর্মে আগুন দিলেন মার্কিন সাবেক সেনারা

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

গাজা ইস্যুতে গায়ে আগুন দেওয়া মার্কিন বিমান বাহিনীর আত্মহননকারী সদস্য অ্যারন বুশনেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের সামরিক পোশাকে আগুন দিয়েছেন আমেরিকার কিছু সাবেক সেনা সদস্য।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যে বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে বুশনেল গত রবিবার ওয়াশিংটন ডিসির ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার এই পদক্ষেপের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মার্কিন সাবেক সেনারা নিজেদের পোশাকে আগুন দেন। এর মধ্যদিয়ে মূলত তারা ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রতিবাদ জানালেন।

শুক্রবার (০১ মার্চ) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়- কয়েক ব্যক্তি একটি ট্র্যাশ ক্যানের ভেতরে পেট্রোল ঢেলে তার মধ্যে নিজেদের সামরিক পোশাক ফেলে আগুন ধরিয়ে পোড়াচ্ছেন। সেখানে অবস্থান করা লোকজনকে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান দিতে শোনা যায়। ট্র্যাশ ক্যানের ভেতরে বেশ কয়েক ব্যক্তি নিজেদের সামরিক পোশাক ফেলে পুড়িয়ে দেন। যেখানে সামরিক পোশাকে আগুন দেওয়া হয় সেখানে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান সম্বলিত ব্যানার দেখতে পাওয়া যায়।

অ্যারন বুশনেল আত্মহত্যা করার আগে ফিলিস্তিন মুক্ত করার পক্ষে স্লোগান দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, আমাদের শাসক শ্রেণি ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়।’


আরও খবর