
শহীদুল ইসলাম, ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
হাওর এলাকায় একটি প্রবাদ আছে ‘বর্ষায় নাও হেমন্তে পাও’। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা, আর হেমন্তে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়।আর এ থেকে মুক্তি পাচ্ছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের চকিয়াচাপুর গ্রামের হাজারো মানুষ।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ আওতায় প্রায় ৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ রাস্তা নির্মাণের ফলে গ্রামের পুরো চিত্র পাল্টে গেছে।
রাস্তা নির্মাণের আগে বর্ষা মৌসুমে পানি ও কাদা মাড়িয়ে এলাকার লোকজন যাতায়াত করত চরম দুর্ভোগে মধ্য দিয়ে। ঐ গ্রামের স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাওর পাড়ি দিয়ে নৌকা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করতো। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হত। আর এ জনদুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেল হাজারো মানুষ একটি রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে।
এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসা এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে সে জানায়, ওই রাস্তা নির্মাণের ফলে ভালো উপকার হইছে। স্কুলে যাওয়া আসায় অনেক উপকারই পাইতেছি। আগে তো কাদা মাদা (কাদামাটি) টানিয়া যাওয়া লাগত। আগে সু গুলো ফিনতে (পড়তে) পারতাম না। এখন তো সু টু ফিইন্দা গাছতলা বাদশাগঞ্জ যাওয়া যায়। অনেক সুবিধা হইছে।এখন সরাসরি বাড়ি থেকে অটোরিকশা কিংবা সিএনজি করে যেকোনো জায়গায় যাওয়া যায়।
চকিয়াচাপুর গ্রামের যুবক নোমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা এই রাস্তার কারণে আগে হাঁটাচলা করতে পারতাম না রাস্তার পেক কাদার কারণে। এখন রাস্তা হওয়াতে অনেক সুযোগ-সুবিধা হইছে । আমরা গাড়ি ঘোড়া মানে সবকিছু নিতে পারি। হাওর থেকে ধান নিতে পারি বাড়িতে। অনেক সুবিধা হয়েছে এই রাস্তার কারণে। আগে তো সাঁতরাইয়া পাড় হইতে অইত। রাস্তার সুযোগ সুবিধা ছিল না এখন আমাদের এলাকা উন্নত হইছে।
পার্শ্ববর্তী উপজেলা মোহনগঞ্জ থেকে আসা এক ভাংগারী ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রাস্তা হওয়াতে তো উন্নতই হইছে।আগে গাড়ি ঘোড়া নিয়ে আসতে পারছিনা সমস্যা অইত।কাদাকোদা ছিল এখনতো ভালই হইছে।এখন গাড়িঘোড়া নিয়া আসা যায়। গ্রামবাসীরও উন্নত অইছে (হয়েছে)।
চকিয়াচাপুর গ্রামের মুরুব্বি সজল মিয়া প্রতিনিধিকে জানান, রাস্তা হওয়াতে আমরা গ্রামবাসীর খুব উপকার হইছে। পাইকুরাটি থেকে আমরার গ্রামের ভিতর দিয়া বালিজুরি পর্যন্ত এই রাস্তাটা এমপি সাহেবের বরাবরে হইছে। এতে কইরা আমরা গ্রামবাসী সকলেই খুশি। এখন আমরা চাইযে দিন দিন আরও উন্নত হউক।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন মহোদয়ের নির্দেশে আমরা বাস্তবায়নকৃত প্রকল্প গুলোর উন্নয়নে সার্বিকভাবে তদারকির মাধ্যমে শতভাগ কাজ ঠিকাদারদের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছি।