বাংলাদেশ প্রকৌশল
বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেছে
ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঘাতজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু
হয়েছে। মাথায় ও বুকের পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মূলত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের
ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ বৃহস্পতিবার
দুপুরে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও শেখ ফরহাদ এই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জেলা
সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেন।
সিভিল সার্জন
এএফএম মশিউর রহমান বলেন, ‘ফারদিনকে দেশীয়
অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাঁর বুকের দুপাশে দুই-তিনটি ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন
আমরা পেয়েছি। পাশাপাশি তাঁর মাথায় চার-পাঁচটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের
কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন চনপাড়ায় নয়, ফারদিনকে অন্য কোথাও
হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছে ডিবি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের
(বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশকে সর্বশেষ যাত্রাবাড়ীতে দেখা গেছে। ৩ থেকে ৪ জন যুবক
তাকে লেগুনায় উঠিয়ে নিয়ে যায় তারাবোর দিকে। ওই লেগুনার চালক ও আরোহীদের খোঁজা হচ্ছে।
হারুন অর রশীদ
সাংবাদিকদের বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টার দিকে ফারদিনকে
যাত্রাবাড়ীতে দেখা গেছে। সাদা পোশাক পরা এক ব্যক্তির সাথে কথা বলে লেগুনায় ওঠে সে।
এরপর লেগুনা তারাবো বিশ্বরোডের দিকে চলে যায়। ওই লেগুনায় আরও চার ব্যক্তি ছিলেন।
হারুন বলেন, সাদা
পোশাক পরা ব্যক্তি, লেগুনার চালক ও লেগুনায় আগে থেকে থাকা চারজনকে শনাক্তের চেষ্টা
করা হচ্ছে।
সময় ও দূরত্ব
বিবেচনায় ওই রাতে যাত্রাবাড়ী থেকে ফারদিনের চনপাড়ায় যাওয়া সম্ভব নয় মন্তব্য করে ডিবি
প্রধান বলেন, ওখান থেকে চনপাড়ার দিকে রওয়ানা দিলেও রাত আড়াইটার মধ্যে পৌঁছানো সম্ভব
নয়। তাই খুন চনপাড়ায় নয়, অন্য কোথাও হতে পারে বলে ধারণা করছি আমরা। রহস্য উদঘাটনে ডিবি
কাজ করছে বলে জানান তিনি।
তিন দিন নিখোঁজ
থাকার পর গত ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার
করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন
পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মরদেহ উদ্ধারের
দুই দিন পর ১০ নভেম্বর ফারদিনের বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ
বুশরাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন
রানা।
এ মামলায় বুশরাকে
গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি পুলিশ। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। রিমান্ডে
বুশরার কাছ থেকে কী তথ্য পাওয়া গেছে বা আদৌ কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি না তা এখনো জানায়নি
ডিবি।