আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গোপসাগরে পরীক্ষামূলক টুনা মাছ ধরার উদ্যোগ মৎস্য অধিদপ্তরের

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২০ ডিসেম্বর ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বঙ্গোপসাগরের এক্সক্লুইভ ইকনোমিক জোন (একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল) ও আন্তর্জাতিক জলসীমায় টুনাসহ অনুরূপ পেলাজিক মাছ ধরা শুরু করার পরিকল্পনা করছে মৎস্য অধিদপ্তর।

বঙ্গোপসাগরের ১.১৯ লাখ বর্গকিলোমিটার এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন থাকলেও বাংলাদেশ ১০০ মিটার গভীরতায় মাত্র ২৪ হাজার বর্গ কিলোমিটারের চারটি অঞ্চল থেকে মৎস সম্পদ আহরণ করে। ফলে ২০০ মিটার গভীরতায় টুনা এবং সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণ থেকে গেছে অধরা।

এই সামুদ্রিক অঞ্চলে কোনো জরিপ না থাকায় টুনা ফিশ আহরণে অন্তত ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েও এই মাছ আহরণ কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দেশীয় বিনিয়োগকারীদের উৎসাহী করতে এবার মৎস অধিদপ্তর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে টুনা ফিশ আহরণ এবং জরিপের উদ্যোগ নিয়েছে।

টুনা ফিশ আহরণের পরীক্ষামূলক এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগকারীরা টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে এগিয়ে আসবে এমনটি আশা করছে মৎস অধিদপ্তর। সামনের বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীন থেকে ২৪ কোটি টাকায় দুটি জাহাজ আমদানি করে গভীর সাগরে টুনা ফিশ আহরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রাথমিকভাবে ৩০ জন ক্রু নিয়োগ দেওয়া ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাহাজ দুটির অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন, "বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টুনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে ক্যানজাত টুনা আমদানি করা হয়। টুনা ফিশ আহরণের এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে সামুদ্রিক মৎস আহরণ খাত তথা ব্লু ইকোনোমিতে নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে। জাপানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে টুনা ফিশ রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।"

মৎস অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রথমে জুলাই ২০২০ হতে ডিসেম্বর ২০২৩ সময়ে গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়। ৬১ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি জাহাজ কেনার কথা থাকলেও ডলারের মূল্য বৃদ্ধিসহ নানান সংকটের কারণে এখন দুটি জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, প্রকল্পের মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। ব্যয় প্রথমে ৬১ কোটি ৬ লাখ টাকা ধরা হলেও একটি জাহাজ কম কেনায় প্রকল্পের ব্যয় নেমে আসে ৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকায়।

প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাহাজ না কেনার বিষয়ে গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্পের পরিচালক জোবাইদুল আলম বলেন, "ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের জুলাই থেকে জলযান এবং আকাশযান কেনার বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা এখনো চলমান। তবে সরকারের বিশেষ অনুমোদনক্রমে এই প্রকল্পের অধীনে দুটি জাহাজ কেনা হচ্ছে।"

জাহাজ দুটি চীনের ইউনি মেরিন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কেনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সামুদ্রিক মৎস দপ্তরের তথ্য মতে, ইন্ডিয়ান ওশান অধ্যুষিত অঞ্চলে টুনা ফিশ আহরণ নিয়ন্ত্রিত হয় ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশনের অধীনে। এই কমিশনের অধীনে রয়েছে ৩০টি দেশ। বাংলাদেশ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল এই কমিশন এর সদস্যভুক্ত হয়। নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিয়মিত টুনা ফিশ আহরণ করে বাংলাদেশের কাছাকাছি অঞ্চলের ভারত, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ। 

সামুদ্রিক মৎস দপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ইন্ডিয়ান ওশান টুনা ফিশ কমিশন বাংলাদেশের ফোকাল পার্সন মো. শওকত কবির চেীধুরী বলেন, টুনা ফিশ আহরণ করতে দেশের জলসীমার ২০০ মিটার গভীরতায় জরিপ চালানো হবে। এছাড়া ইন্ডিয়ান ওশানের আন্তর্জাতিক জলসীমায়ও টুনা ফিশ আহরণ করা হবে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, "ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশনের সাথে টুনা ফিশ আহরণের বাংলাদেশের হিস্যা কী পরিমাণ হবে, সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে নেগোসিয়েশন চলছে। টুনা ফিশ আহরণে বাংলাদেশকেও উৎসাহ দিচ্ছে কমিশন।"

৮ প্রজাতির টুনা রয়েছে বঙ্গোপসাগরে

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের সামুদ্রিক অঞ্চলে আট প্রজাতির টুনা এবং ১০টিরও বেশি প্রজাতির পেলাজিক মাছ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ও চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে এই খাতের উদ্যোক্তারা টুনা মাছ ধরায় নিয়োজিত হতে পারেননি না।

২০১৯ সালে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৯টি কোম্পানিকে টুনা মাছ ধরার অনুমতি দেয়। তবে কোনো কোম্পানিই এ খাতে বিনিয়োগ করেনি। নতুন প্রকল্পটি সাগরের ২০০ মিটার গভীরতা থেকে টুনা মাছ ধরার জন্য লংলাইন ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক জোবাইদুল আলম বলেন, " কী পরিমাণ মাছ ধরা যাবে, তা কেবল কার্যক্রম শুরু হলেই বলা যাবে। যেহেতু ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে টুনা এবং পেলাজিক মাছ ধরে, তাই আমরাও এই উদ্যোগকে সফল করার পরিকল্পনা নিয়েছি।"

বর্তমানে গভীর সাগরের চারটি অঞ্চল সাউথ প্যাচেস, সাউথ অফ সাউথ প্যাচেস, মিডল গ্রাউন্ড এবং সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডে মৎস আহরণ করা হয়। সমুদ্র উপকুল থেকে এসব অঞ্চলের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ১৮ ঘণ্টা।

দূরত্ব অন্যতম চ্যালেঞ্জ

টুনা ফিশ আহরণ করতে বাংলাদেশের স্থলভাগ থেকে প্রায় ৩৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভারত ও শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি এলাকায় যাওয়া লাগবে। এ অঞ্চলে যেতে সময় লাগবে কমপক্ষে তিন দিন। তবে নিকটবর্তী হওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের জেলেরা এ অঞ্চলে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছাতে পারে।

মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক বলেন, "সাগরে টুনা ফিশ আহরণে সরকার আমাদের প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু দেশের জলসীমায় কী পরিমাণ টুনা ফিশ আছে, কোন অঞ্চলে আছে এ সংক্রান্ত কোনো জরিপ নেই। তাই আমরা আশাবাদী হতে পারিনি। তাছাড়া, টুনা ফিশ আহরণে প্রতিটি জাহাজে ৮০ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া বিনিয়োগকারীরা এই খাতে এগিয়ে আসতে পারেনি।"

তিনি জানান, "এ সংক্রান্ত একাধিক সভা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এই খাতে সহজশর্তে ঋণ সুবিধা চেয়েছি। এটি করা গেলে টুনা ফিশ খাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের সম্ভবনা তৈরি হবে।"

বেসরকারি খাতের অনিহা

বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএফএ) প্রেসিডেন্ট নূরুল কাইয়্যুম খান বলেন, সরকার টুনা ফিশ আহরণে দুই দফায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমতি দিলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানই এগিয়ে আসেনি।

"সেখানে কী পরিমাণ টুনা ফিশের মজুদ আছে, তা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। কারণ এই খাতের একটি জাহাজ আমদানি করতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লাগবে। সরকারের এই পাইলট প্রকল্পটি সফল হলে অবশ্যই বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসবে," বলেন তিনি।

মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, বর্তমানে ২৬৩টি নিবন্ধিত ফিশিং জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ২৩০টি জাহাজ বঙ্গোপসাগরে মৎস আহরণ করে। এছাড়া গভীর সমুদ্রে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে প্রায় ৬৭ হাজার নৌকা মৎস আহরণ করে।

মাত্র ২৪ হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত তিনটি অঞ্চল থেকে মৎস্য সম্পদ আহরণ করে বাংলাদেশ। বার্ষিক মাছ ধরার পরিমাণ ৬.৫ লাখ টন।

মালয়েশিয়া থেকে আনা গবেষণা জাহাজ 'আরভি মীন সন্ধ্যানি' বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সম্পদের অনুসন্ধান পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যেই ২৫ প্রজাতির মাছের প্রজননের সময় সম্পর্কে জানতে পেরেছে। তবে উপসাগরে অন্যান্য ৪৭৬ প্রজাতির মাছ ও ৩৯ প্রজাতির চিংড়ির প্রজনন সময় এখনও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।


আরও খবর



ব্যাংক ডাকাতি-অস্ত্র লুট

কেএনএফ সম্পৃক্ততায় রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে চলমান যৌথবাহিনীর অভিযানে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কেএনএফ এর আরো ৭ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন লাল নুন নোয়াম (৬৮) লাল দাভিদ বম (৪২) চমলিয়ান বম (৫৬) লাল পেক লিয়ান (৩২) ভান নুন নোয়াম (৩৩) লাল মিন বম (৫৬) ভান বিয়াক লিয়ান বম (২৩)। তারা সবাই রুমার মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় রুমার মুনলাই পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জন কেএনএফ এর সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত ৭ জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম এমরান এর আদালতে হাজির করা হলে আদালত আসামীদের জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির মামলায় ৭৮জন কে গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল  বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা করে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় রুমা ও থানচিতে ৯টি মামলা দায়ের করা হয়।


আরও খবর



বান্দরবানে সব বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বান্দরবানে আমরা সব বাহিনীর সদস্য আরও বাড়াবো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে যা যা করা দরকার তা করব।

আজ শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। বান্দরবানের রুমার ঘটনায় সন্ত্রাসীরা তাদের সক্ষমতা প্রর্দশন দেখানোর চেষ্টা করেছে মাত্র। তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধূলিসাৎ করে দেবে।

তিনি বলেন, বান্দরবানের ঘটনায় বিদেশি কোনো মদদ নেই। বিদেশি যাদের কথা বলা হচ্ছে, তারা নিজেদের সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত। এই অপরাধে জড়িত কেউ দেশের বাইরে গেলে সেখান থেকে তাকে এনে বিচার করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেএনএফ যে হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন শক্তিশালী অভিযান চালানোর। সমন্বিত অভিযানের বিষয়ে সেনাবাহিনী সিদ্ধান্ত নেবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বাহিনী তাদের মতো অভিযান চালাবে।

এর আগে আজ সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে রুমা উপজেলায় যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে সোনালী ব্যাংকে শাখা পরিদর্শন করেন এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিবরণ শোনেন।


আরও খবর



আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার মজুরি বাড়িয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। এ সময় কারখানা বা প্রতিষ্ঠান মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার আহ্বান জানান। বুধবার (০১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে, তিনি যদি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন হন, তাহলেও তাকে আমরা ছাড়ি না, ছাড়বোও না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল। খেটে খাওয়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। সরকার চায়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠুক। তাই আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততোবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। কারখানা বা প্রতিষ্ঠান মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখারও আহ্বান জানান।’

তিনি বলেন, আমি এক প্রতিষ্ঠানের মালিককে জিজ্ঞাস করলাম, ৮০০’ টাকা বেতনে একজন শ্রমিক চলে কীভাবে- এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী, আবারও মালিকদের বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের স্বার্থ দেখার কথা বলেন। মালিকদের মুনাফা বাড়াতে হলে, অবশ্যই শ্রমিকদের দিকে তাকাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায় আমাদের শ্রমজীবী মানুষের মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। বিলাসিতা একটু কমিয়ে মালিকরা শ্রমিকদের দিকে একটু নজর দেবেন সেটাই আমরা চাই। কিছু ভাড়াটে লোক কথায় কথায় শ্রমিকদের রাস্তায় নামায় আন্দোলন করানোর জন্য। কারখানা ভাঙচুর করায়। কারখানায় আগুন দিলে শ্রমিকদের নিজেদেরই ক্ষতি হচ্ছে, পরিবারের ক্ষতি হচ্ছে, দেশের মালিকদের ক্ষতি হচ্ছে। কোনো অসুবিধা হলে আলোচনা করে সমাধান করার জন্য আমার দুয়ার খোলা। আপনারা যোগাযোগ করবেন। কারও প্ররোচণা বা উসকানিতে নিজের রুটি-রুজি যেখান থেকে আসে, সেখানকার ক্ষতি করবেন না।’

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পণ্যের ক্রয় মূল্য বাড়ালে আমিও মালিকদের বলতে পারি, তারা যেন শ্রমিকদের সুবিধা বাড়ান।

এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের নামে বাসে ট্রাকে-আগুন দিয়ে শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে তারা। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক-মালিককে আমরা সহায়তা দিয়েছি। শ্রমিকদের কল্যাণ দেখা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব বলে মনে করি। মানুষের কল্যাণ করাই আমাদের প্রচেষ্টা।’

শ্রমিকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে- এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষের দল। আমরা যতটা আইএলও কনভেশন বা প্রটোকল সই করেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ততটা করেনি। আমি যদি এখন জিজ্ঞাস করি, তারা কতটা সই করেছে? তারা জবাব দিতে পারবে না। খুব বেশি হলে দুটা করেছে। আর সেখানে কেউ আন্দোলন করলে, সাথে সাথে চাকরি চলে যায়। আর আমাদের এখানে কেউ আন্দোলন করলে আমরা তার সাথে কথা বলি, আলোচনা করি, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। অথচ আমাদের ওপর খবরদারি করা হয়।’

তিনি আরও বলেন,  সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে। কোনো সমস্যা হলে যা করণীয়, আমরা করবো। সে জন্য কারও দুয়ারে গিয়ে ধরনা দিতে হবে না। দেশ আমাদের। আমরা চাই, শ্রমিকরা নিরাপদে কাজ করবেন। সব ধরনের সুবিধা পাবেন। এখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলবো। আর গরমে সাবধানে থাকবেন, নিজেদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখবেন।


আরও খবর



জব্বারের বলিখেলায় এবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শরীফ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলিখেলার ১১৫তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার শরীফ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে তাকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন রেফারিরা। এবারের আসরে রানার আপ হয়েছেন কুমিল্লার মোহাম্মদ রাশেদ।

বিকেল ৫টা ২৯ মিনিটে দুই বলির চূড়ান্ত কুস্তি শুরু হয়। ১২মিনিট পর শরীফ বলীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এবারের বলিখেলায় ৮৬ জন কুস্তিগির অংশ নিয়েছিলেন। প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে সৃজন চাকমা ও সীতাকুণ্ডে রাশেদ।

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জব্বারের বলিখেলায় প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

এর আগে বিকেল ৪টার দিকে বলিখেলা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বলিখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।

বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া শরীফ ট্রফির পাশাপাশি প্রাইজ মানি পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারীরা ট্রফির সঙ্গে পেয়েছেন যথাক্রমে ২০ হাজার, ১০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা। বলীখেলায় সেমিফাইনালে পর্যায়ের আগে মোট ৪৩ রাউন্ড খেলা হয়। প্রাথমিক রাউন্ডে জয়লাভকারী প্রত্যেকে দেড় হাজার টাকা পেয়েছেন।

জব্বারের বলিখেলার ইতিহাস

১৯০৯ সালে বকশিরহাটের স্থানীয় ধনী বণিক বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জব্বার সওদাগর এই কুস্তি প্রতিযোগিতার সূচনা করেন। জানা যায়, এই ব্যবসায়ীর শুধু কুস্তির প্রতি ভালোবাসা ছিল না বরং তার মধ্যে ছিল দেশের প্রতি ভালোবাসা। ওই সময় ভারতে ব্রিটিশ শাসনে অবসানে চট্টগ্রামে দানা বাঁধছিল আন্দোলন। পরে তার নাম অনুসারেই এই আয়োজনের নামকরণ হয়েছে।

আয়োজক কমিটির সেক্রেটারি ও প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল জব্বারের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, আমার দাদা এই আয়োজনের সূচনা করলেও এটা এখন আর পারিবারিক ঐতিহ্য নয়। এটা চট্টগ্রামের সকল মানুষের এবং তারা এই অনুষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।


আরও খবর



মৌসুমের আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সাধারণত বর্ষার ঠিক আগে আগে শুরু হয় ডেঙ্গুর প্রকোপ। বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টাকে ডেঙ্গুর মৌসুম ধরা হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে সারা বছরই কম-বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ বছর ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২২ জন। এ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সামনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।  

ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত রোগ। এ রোগের ভাইরাসের একমাত্র বাহক স্ত্রী এডিস মশা। এ মশার মাধ্যমে ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হলে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এডিস মশা কামড়ালেও মশার মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডেঙ্গু আক্রান্ত বাহক অন্য জায়গায় ভ্রমণের মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ একজন আক্রান্ত ব্যক্তি যখন অন্য জায়গায় ভ্রমণ করেন, সেখানে তাকে এডিস মশা কামড়ালে সেই মশার ভেতরেও ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে, আর সেসব মশা যাদের কামড়ায় তাদের ডেঙ্গুরোগ হতে পারে।

বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায় বলে এ সময় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এমন ধারণা প্রচলিত থাকলেও বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বছরের যেকোনও সময় এ মশার বংশবিস্তার ঘটে এবং ডেঙ্গুরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৮৯ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে রোগী ছিল ১ হাজার ৫৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৩৯ জন এবং মার্চে ৩১১ জন। এপ্রিলের ৯ দিনে রোগী পাওয়া গেছে ৮৪ জন।

গত বছর এযাবৎকালের সর্বাধিক ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়। তবে তখন রোগী বেশি ছিল মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বছর জানুয়ারিতেই হাজারের বেশি রোগী পাওয়া গেছে, যা আগে কখনও পাওয়া যায়নি। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রোগী পাওয়া যায় ১২৬ জন, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে রোগী ছিল ৩২ জন।

বিগত দিনগুলোর তুলনায় এ বছর মৃত্যুও বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে মারা গেছেন ১৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং মার্চে ৫ জন। গত বছরের জানুয়ারিতে মারা যান ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং মার্চে কোনও মৃত্যু ছিল না। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। তার আগে ২০২১ সালেও এই সময়ের মধ্যে এই রোগে মৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকরা বলছেন, এবারে পরিস্থিতি গতবারের চেয়ে নাজুক হতে পারে। সংক্রমণ ও মৃত্যু সেই পূর্বাভাস দিচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, বিভাগীয় ও জেলা শহরে স্বাস্থ্য অবকাঠামো যথেষ্ট আছে। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ে বেশি রোগী হলে তা সামলানো কঠিন হয়ে যাবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক কীটতত্ত্ববিদ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বছরজুড়ে চালাতে হবে। গত বছর আমরা গ্রামাঞ্চলে রোগী পেতে শুরু করেছি। এ বছর এই পরিমাণটা আরও বাড়তে পারে। বাড়লে আমাদের চিকিৎসা সক্ষমতার ওপর অনেক চাপ পড়বে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. জি এম সাইফুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত আমরা দেখেছি, মার্চ-এপ্রিলে ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যায়। ২০১৩ সালের পর থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুই-এক মাস বাদ দিয়ে প্রায় সব মাসেই ডেঙ্গুরোগী পাওয়া গেছে। ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি মাসেই একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এডিস মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসা পরের কথা। চিকিৎসার জন্য যা যা দরকার সেটা নিয়ে আমরা এরইমধ্যে একটা মিটিং করেছি। এখন আবার বসবো যেন চিকিৎসায় কোনও ঘাটতি না হয়।


আরও খবর