চিত্রনায়ক সোহেল
চৌধুরী হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের হাতে নিহত জনপ্রিয়
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার কেস ডকেট (মামলার যাবতীয় তথ্যাদির সংরক্ষিত নথিপত্র)
পাওয়া যায়নি। এই কারণে মামলা বিচারের জন্য এখনো প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই
অবস্থায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন মামলার শুনানি ফের পিছিয়ে
আগামী ১২ মে দিন ধার্য করেন।
ঢাকার মহানগর
পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২ জুন তৎকালীন ডিবির এসআই
ফরিদ উদ্দিন কেস ডকেট গ্রহণ করেন। গত ১১ এপ্রিল ফরিদ উদ্দিনকে কেস ডকেটের বিষয়ে অবহিত
করার জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ দেন। গত ২৭ এপ্রিল চকবাজার থানা থানার সাবেক পরিদর্শক
ফরিদ উদ্দিন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ট্রাইব্যুনালকে জানান তিনি যেদিন কেস ডকেট গ্রহণ
করেছেন সেদিনই তৎকালীন ডিবির ডিসি শহিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। শহিদুল ইসলাম
উক্ত কেস ডকেট কি করেছেন এরপর আর তিনি জানেন না।
ট্রাইব্যুনাল
ফরিদ উদ্দিনকে বলেন, কেস ডকেট আপনি গ্রহণ করেছেন আগামী সাত দিনের ভিতর আপনি সেটা সংগ্রহ
করে ট্রাইব্যুনালে জমা দেবেন। কীভাবে সংগ্রহ করবেন সেটা আপনি জানেন।
আজ ফরিদ উদ্দিন
আদালতে হাজির হয়ে বলেন, ‘কেস ডকেট এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি আরও কিছুদিন
সময় চান।’ ট্রাইব্যুনাল এ সময় শরিফ আমিনকে বলেন,
‘আপনি কেস ডকেট
নেওয়া এবং অন্য কাউকে হস্তান্তর করে রেজিস্ট্রার আগামী তারিখে ট্রাইব্যুনালে হাজির
করবেন। আপনি কেস ডকেট দিয়েছেন এবং তা কাউকে হস্তান্তর করেছে এসব তথ্য প্রমাণ আপনি ট্রাইব্যুনালের
দাখিল করবেন। এরপর আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন।’
এ মামলায় কারাগারে
রয়েছেন আসামি তারিক সাঈদ মামুন ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। আসামি ফারুক আব্বাসী
ও আদনান সিদ্দিকী জামিনে আছেন। হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকা আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে
লেদার লিটন ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী কোনোরকম পদক্ষেপ ছাড়া কয়েকটি তারিখ
অনুপস্থিত থাকায় গত ২৮ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে আশীষ
চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে এ মামলার
অন্যতম আসামি ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক
আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান অনুপস্থিত থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে
গত ২০ মার্চ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল
ইসলাম ইমন এই মামলায় প্রথম থেকেই পলাতক রয়েছেন।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। ঘটনার পর সোহেলের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বাদানুবাদই এ হত্যার নেপথ্য কারণ বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।