এ বার কি শেষ
হবে যুদ্ধ! কাল তুরস্কে ফের শান্তি আলোচনায় বসতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। শোনা যাচ্ছে,
দু’পক্ষই এ বারে যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আগ্রহী।
সম্প্রতি রুশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এখন শুধুমাত্র পূর্ব ইউক্রেনের উপরে নজর দিচ্ছে।
কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা, মস্কো হয়তো তার উচ্চাকাঙ্খা কমিয়ে লক্ষ্যস্থির করতে চাইছে। হয়তো
যুদ্ধ থামাতে চাইছে তারাও। তবে তার আগে মস্কোর সমঝোতাসূত্র ‘সাবধানে’ বুঝেশুনে নিতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট
ভলোদিমির জ়েলেনস্কি।
রাশিয়ার দেওয়া
শর্তের মধ্যে অন্যতম হল ইউক্রেনের ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’। অর্থাৎ নেটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার
চেষ্টা করবে না তারা। পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়ার স্বপ্নও রাখবে না ইউক্রেন। জ়েলেনস্কি
নিজেই জানিয়েছেন এ কথা। বলেছেন, ‘‘আমরা এই শর্ত মেনে নিতে রাজি।’’ সাংবাদিকদের কাছে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট
বলেন, ‘‘যুদ্ধ শুরু হয়েছিল
এই সব কারণেই। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বজায় থাকছে কি না, সেটা দেখার। ওরা অবশ্য বলছে,
ওদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেটা বুঝতে পারছি। আলোচনা চলছে। বিষয়টা গভীর। তবে এ
সব আলোচনা যাতে এক টুকরো কাগজেই থেমে না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে আমি বেশি আগ্রহী। যাতে
কাগজেকলমে সইসাবুদ করে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি
করা যায়, তাতে আগ্রহী।’’ জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন,
ক্রাইমিয়া ও ডনবাস নিয়েও যা যা সমস্যা রয়েছে, তা এই শান্তি আলোচনাতে শেষ করতে চান তিনি।
তবে রুশ মধ্যস্থতাকারীরা যেন না বলেন, ইউক্রেন থেকে ‘নাৎসিবাদ’ মুছতে চান তাঁরা। এ অভিযোগ তুললে তাঁর
দেশ আলোচনাতেই যাবে না। ওই শব্দটা শুনতে রাজি নন জ়েলেনস্কি।
এখানেই শেষ নয়। আরও শর্ত রাখতে পারে রাশিয়া। ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, তাদের কাছে খবর আছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে ভেঙে দিতে চাইছেন। শোনা যাচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ইউক্রেনকেও দু’ভাগে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে মস্কো। কিন্তু কিভের আশপাশের অঞ্চলে রুশ বাহিনীর ব্যর্থতা অনেকাংশে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান জেনারেল কিরিলো বুদানোভ দাবি করেছেন, রাশিয়া বুঝে গিয়েছে ইউক্রেনের সরকার ওরা ফেলতে পারবে না। তাই দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ প্রান্তে নজর দিচ্ছে ওরা। তিনি বলেন, এর থেকেই মনে হচ্ছে ওরা ইউক্রেনকে কোরিয়ার মতো ভাঙতে চাইছে। একটা অংশ থাকবে অধিকৃত ইউক্রেন হিসবে, অন্য অংশটি থাকবে স্বাধীন ইউক্রেন হয়ে। ওরা ইউক্রেনের যে সব অঞ্চলে ঢুকেছে, এখনই সেই জায়গাগুলোতে একটা ‘সমান্তরাল শাসনব্যবস্থা’ চালানোর চেষ্টা করছে।