ফিলিপাইনের
সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ভালদেজ রামোস মারা গেছেন। গতকাল রোববার ৯৪ বছর বয়সী এই নেতা
শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত
করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা
হয়েছে, রামোসের মৃত্যুতে পরিবারটি ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। তবে এতে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর কারণ প্রকাশ করা হয়নি।
বার্তা সংস্থা
এএফপি, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এসব তথ্য
জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিদেল রামোস কোরিয়া ও ভিয়েতনামে সম্মুখ যুদ্ধে
অংশ নিয়েছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনেও সফল ছিলেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
সাবেক একনায়ক
ফার্দিনান্দ মার্কোসের (সিনিয়র) শাসনামলে রামোস (৯৪) নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্চপদে ছিলেন।
পরবর্তী সময়ে তিনি ফার্দিনান্দ মার্কোসকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জাতীয় বীরের মর্যাদা
পান। তার নেতৃত্বে জাতীয় পুলিশ বাহিনী বিদ্রোহ করে, যার ফলে ১৯৮৬ সালে মার্কোসের সরকারের
পতন হয়।
পরবর্তী জীবনে
‘নেভানো
চুরুট’ হাতে
নিয়ে ছবি তোলার জন্য খ্যাতি অর্জনকারী রামোস ১৯৯২ সালে পিপল পার্টি দলের নেতা কোরাজন
আকুইনোকে পরাজিত করে দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। রামোসের আমকে শান্তি, স্থিতিশীলতা
ও প্রবৃদ্ধির জন্য স্মরণ করা হয়।
রামোসের মৃত্যুতে
শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও মার্কোসের ছেলে ফার্দিনান্দ মার্কোস
জুনিয়র। তিনি বলেন,‘সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ভালদেজ রামোস মারা গেছেন। সামরিক কর্মকর্তা
ও সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে জীবন কাটিয়ে দেওয়া মানুষটির পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা
জানাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার কাজগুলো সব সময় অনুসরণ করা হবে এবং তা আমাদের জনগণের
হৃদয়ে চিরকাল গেঁথে থাকবে।’
ফিলিপাইনে ইউরোপীয়
ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। রামোসকে ‘আত্মনিবেদিত রাষ্ট্রপ্রধান’ ও ‘গণতন্ত্রের স্তম্ভ’ বলে উল্লেখ করেছে তারা।
রামোস ফিলিপাইনের
সেনাবাহিনীতে দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট থেকে শুরু করে কমান্ডার-ইন-চিফ পর্যন্ত সব ধরনের
পদ ধারণ করেছেন। দেশ শাসন করার সময়ও তিনি তার মিলিটারি মেজাজ অক্ষুণ্ণ রাখেন। ৬ বছরের
শাসনামলে রামোস বেশ কিছু নীতিমালা পরিবর্তন করেন। তার অবলম্বন করা উদার নীতির কারণে
ফিলিপাইনে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যায়।
পরিবহন ও যোগাযোগ
খাতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন রামোস। বিদ্যুৎ খাতে রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। কংগ্রেস
থেকে পাওয়া বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে তিনি দৈনিক ১২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের অবসান ঘটান। তার
শাসনামলে দারিদ্র্যের হার ৩৯ শতাংশ থেকে কমে ৩১ শতাংশ হয়েছিল।