ইসলাম রক্ষার নামে অনেকেই অনেক কথা বলেন। সাথে এও বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি ইসলাম রক্ষার ব্যাপারে ভীষণ উদাসীন। কিন্তু বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ধর্মের মর্যাদা রক্ষায় একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-ই কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাবলীগ জামায়াতের জন্য কাকরাইল মসজিদ, মুসলিম জাহানের জন্য বিশ্ব ইজতেমা, দেশের মানুষের জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকারম নির্মাণ করেছিলেন। ইসলামের চর্চা ও রক্ষাকবচ হিসেবে ইসলামিক ফাউনডেশন গঠন করেছিলেন।
উল্টোদিকে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মুসলিম জাহানের চরিত্র বিরোধী কাজ হাউজি, জুয়া খেলা, মদ সব কিছুর বৈধতা দেয়।
পিতার মতই ইসলাম ও মুসলিম জাহানের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মনা রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার প্রমাণ, তিনি সকল ইমামবৃন্দের জন্য একটা বেতন কাঠামো তৈরি করে দিয়েছেন। কওমি মাদ্রাসাকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, মূল ধারার পেশার সাথে যুক্ত করেছেন। ইসলাম চর্চার জন্য দেশের প্রত্যেক উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক চর্চা কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন।
শুধু তাই নয়, মুসলিম জাহানের উপর যেকোনো বর্বরতায় পিতার মতই সোচ্চার কণ্ঠে আওয়াজ তুলছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন দেশ স্বাধীনের পর থেকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে শত্রু হিসেবে গণ্য করতেন এবং ফিলিস্তিনের মুসলিম জনগণকে আপন মনে করে পাশে দাঁড়াতেন, তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাও তাই করে চলছেন। জাতিসংঘের মত বিশ্বসভায় নির্যাতিতদের পক্ষে পিতার মতই সমান কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন।
অতীতের সেই ধারাবাহিকতায় এবারও জোরালো কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষে। ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ও মুসলিম জাহানের প্রতি সমর্থনের বিষয়টি আবারো ফুটে উঠেছে। যদিও বিএনপি কিছুদিন পূর্বের সংশোধিত ই-পাসপোর্ট নিয়ে বেশ অপ্রচার চালিয়েছে। যেমন আগের পাসপোর্টে ইসরাইলে ভ্রমণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু নতুন ই-পাসপোর্টে সেই কথাটি নেই।
কিন্তু প্রকৃতি সত্য হল, দেশের ই-পাসপোর্ট থেকে ইসরাইলের নাম বাদ দেয়া হয়েছে একে আন্তর্জাতিক মানের পাসপোর্টের কাতারে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু এর সাথে ইসরাইলের প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির এক চুলও বদল হয়নি। অর্থাৎ আগের মতই ইসরাইলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও অবন্ধুসুলভ আচরণ অব্যহত থাকবে।
যদিও এও সত্য, এর আগেও ইসরাইল নানাভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সাথে সাথে এপ্রিল মাসে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু তখনো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে চলা বাংলাদেশ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
কিন্তু লজ্জার বিষয়, বিএনপি এই সময়ে এসেও ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে। জানা যায়, তারা গোপনে ইসরাইলের জন্য বিবৃতি ও বার্তাও পাঠিয়েছে। এর অবশ্য কারণও আছে। আমরা জানি, আমেরিকা ইসরাইলের পক্ষে। আর বিএনপি যেহেতু আমেরিকার উপর ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায় তাই তারা আমেরিকার মিত্র ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি দেশের জনগণ ও গোটা মুসলিম জাহানের সাথে বেইমানি করেছে। মুসলিম জাহানকে অপমান করেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ঠিকই ফিলিস্তিনি মুসলমান ভাইবোনদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বমঞ্চে পিতা মুজিব যেমন বজ্র কণ্ঠে আওয়াজ তুলতেন তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যুক্তি যুক্ত কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন। আহবান করেছেন, ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি সকল প্রকার সংঘাত, হত্যা থামানোর জন্য। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশ বাংলাদেশকেও আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি ইসলামের শত্রু অর্থাৎ যারা মদ, জুয়াকে বৈধতা দেয়, ফিলিস্তিনিদের সংকটে পাশে দাঁড়ায় না তাদের সমর্থন করবে নাকি ইসলাম রক্ষায় যারা যুক্তি যুক্ত পদক্ষেপ নেয় সেই আওয়ামী লীগ সমর্থন করবে।