এক ফিলিস্তিনি ঔপন্যাসিকের পুরস্কার স্থগিত করেছে ফ্রাঙ্কফুট বইমেলা। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে তা করা হয়েছে। বিশ্বের নানা জাতি ও বর্ণের ৬০০ এর বেশি কবি-সাহিত্যিক এ ধরনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন।
অনেক লেখক ব্যক্তিগতভাবে ফ্রাঙ্কফুর্ট বই মেলা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। মালয়েশিয়া সরকারও আনুষ্ঠানিকভাবে বইমেলাটি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
জানা গেছে, ফিলিস্তিনের নারী ঔপন্যাসিক আদনিয়া শিবলীকে চলতি বছর ‘উন্নয়নশীল দেশের সাহিত্য’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য মনোনিত করা হয়। ২০১৭ সালে তার প্রকাশিত ‘মাইনর ডিটেইল’ উপন্যাসের জন্য তিনি এ পুরস্কার পেতে যাচ্ছিলেন।
উপন্যাসটিতে ১৯৪৯ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের স্মৃতি, সহিংসতা ইত্যাদির দিকে আলো ফেলা হয়েছে। ওই যুদ্ধে প্রায় ৭ লাখ ফিলিস্তিন উদ্বাস্তু হয়েছিল। ফিলিস্তিনিদের প্রায় ৫০০ গ্রাম ধ্বংস ও দখল করেছিল ইসরায়েল।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। তাই এখন আদনিয়া শিবলীকে পুরস্কার হস্তান্তর করা হবে না। তুলনামূলক শান্ত পরিবেশে তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার আরেক বিবৃতিতে ফ্রাঙ্কফুট বইমেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের বই মেলায় ইসরায়েল ও ইহুদিদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।
আদনিয়া শিবলীকে পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠান মুলতবি করার বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। ৬০০ এর বেশি কবি-সাহিত্যিক এক খোলা চিঠিতে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার এ ধরনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
খোলা চিঠিতে বলা হয়, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা সারা বিশ্বে পরিচিত। এটার একটা আলাদা দায়িত্ব আছে। গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বইমেলা হিসেবে ফ্রাঙ্কফুর্টের দরকার ছিল ফিলিস্তিন লেখকদের চিন্তা, অনুভূতি প্রকাশের জায়গাকে অবারিত করা। কিন্তু উল্টো তা সংকুচিত করা হয়েছে।
যে সব কবি-সাহিত্যিক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ, অ্যানি এরনাক্সও ওলগা টোকারজুক এবং বুকার পুরস্কার বিজয়ী অ্যান এনরাইট, রিচার্ড ফ্লানাগান এবং ইয়ান ম্যাকইওয়ান অন্যতম।
৪৯ বছর বয়সি আদনিয়া শিবলী বার্লিন ও জেরুজালেমে ভাগাভাগি করে থাকেন। জার্মানি ও ইংরেজিতে অনর্গল বলতে ও লিখতে পারলেও শিবলী লেখেন প্রধানত আরবি ভাষায়। উপন্যাসের পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ, নাটক এবং ছোট গল্প লেখেন।