আজঃ মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

ফিলিস্তিনিদের প্রতি রাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ

প্রকাশিত:বুধবার ১১ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ অক্টোবর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আসিক আদনান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Image

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘাতে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বাহিনী হামাসের চলমান অভিযানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, বোমা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বছরের পর বছর নানাভাবে ইসরায়েলের কাছে নির্যাতিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণ। তাদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের ওপর সব নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হোক।

প্রতিবাদ জানিয়ে আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ইসরায়েলের অনৈতিক কর্মকান্ডে তীব্র নিন্দা জানাতে এখানে দাঁড়িয়েছি। তাদের এমন কর্মকান্ডে পশ্চিমা দেশগুলো নীরব রয়েছে। সারা বিশ্ববিদ্যালয়ের যত মুসলিম দেশ আছি আমাদের উচিত এসময় ফিলিস্তিনদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমরা বিশ্বাস করি ফিলিস্তিন স্বাধীনতা নিয়েই ফিরবে ইনশাআল্লাহ।

সালাউদ্দিন আম্মার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দূর থেকে দেখে আমাদের যতটুকু করণীয় ফিলিস্তিন ভাইদের জন্য আমরা করবো। এ জন্যে যদি আমাদের জীবনও দিতে হয় আমরা দিতে প্রস্তুত রয়েছি ইনশাআল্লাহ। ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়ে নবাব সিরাজুদ্দৌলা বলেছিলেন, পলাশীর যুদ্বে যদি বাঙালিরা একটি করে পাথর মারতো তাহলে ইংরেজরা যুদ্ধ করার সাহস তো দেখাতো না পাশাপাশি পালানোর জায়গাটুকুও খুঁজে পেতো না। আজকে যদি বিশ্বের মুসলমানরা একত্রিত থাকতেন তাহলে ইসরায়েল এমন সাহস দেখাতে পারতো না। সর্বস্তরের মুসলমানদের কে একত্রিত হয়ে ফিলিস্তিনদের সমর্থন জানানোর আহবান জানান এ শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, ফিলিস্তিনের প্রতি ইসরায়েল বরাবরই হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। কিন্তু এবার ফিলিস্তিন সেটার মোকাবিলা করেছে। শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তানদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করছে জেনে আমিও একাত্মতা পোষণ করে এখানে দাঁড়িয়েছি। একজন মুসলমান হিসাবে এটা আমাদের কর্তব্য বলে জানান তিনি।

পরে সেখান থেকে একটি প্রতিবাদী র‍্যালী বের করেন তারা। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এসময় বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থী।


আরও খবর



দেশব্যাপী বৃষ্টির আভাস, ক্রমেই কমবে তাপমাত্রা

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের ৮ বিভাগেই আজ ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে বৃষ্টি বেশি থাকা ছয় বিভাগে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে, ওই অঞ্চল থেকে দূর হতে পারে তাপপ্রবাহ।

বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এরই মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে তাপ প্রবাহের তীব্রতা এবং আওতা কিছুটা কমেছে। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী বেড়ে সারাদেশ থেকে তাপপ্রবাহ দূর হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

গত কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতি তীব্র ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছিল। শনিবার (৪ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল রাজশাহীতে। ঢাকা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানান, রোববার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। দেশের অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

তিনি আরও জানান, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গা থেকে তা প্রশমিত হতে পারে।

আগামীকাল সোমবার ও পরদিন মঙ্গলবার সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবারও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরবর্তী পাঁচ দিনে সারাদেশে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার সন্ধ্যায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় (হিট অ্যালার্ট) বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অব্যাহত থাকতে পারে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।


আরও খবর



ঈদযাত্রায় গাজীপুরের চন্দ্রায় গাড়ির জটলা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনে শেষ সময়ে ঘরে ফিরছে মানুষ। ভোর থেকে রাজধানী ছাড়ার বিভিন্ন পয়েন্টে তৈরি হয়েছে গাড়ির জটলা। চালক-যাত্রীদের অভিযোগ ঢাকায় ঢুকতে বা বের হতে লম্বা সময় ধরে সিগন্যালে আটকে থাকতে হচ্ছে, যাত্রাবাড়ী, দোলাইপাড়সহ বিভিন্ন জায়গায়। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায়ও আছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। সোমবার দুপুরের পর গাজীপুরের বিভিন্ন পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় বিকেলের দিকে শ্রমিকদের স্রোত নামে মহাসড়কে। যাত্রীদের পাশাপাশি সড়কে বাসের সংখ্যাও বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে যানজটও।

এরপর থেকেই অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে শুরু হয়েছে যানজট। চন্দ্রা ত্রিমোড় থেকে নবীনগর ও সফিপুর সড়কে দুই কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। চন্দ্রা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে।

এদিকে যাত্রীদের কাছ থেকে মিলছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও টাঙ্গাইল অংশেও রয়েছে যানবাহনের চাপ। আজ সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাস‌ড়কের টাঙ্গাইল সদরের আশেকপুর বাইপাস থেকে সেতু টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃ‌ষ্টি হয়েছে। এর আগে ভোরে সেতুর উপর ২২ নম্বর পিলারের কাছে এক‌টি ডাবল ডেকার বাস বিকল হয়ে যাওয়ার পর সে‌টি উদ্ধারে ৫‌ মি‌নিট টোল আদায় বন্ধ ছিল। এতে মহাসড়কে প‌রিবহনের চাপ আরও বেড়ে যায়।


আরও খবর



চীনের মহাসড়কে ধস, নিহত অন্তত ১৯

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে গভীর রাতে একটি মহাসড়কের একাংশ ধসে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। বুধবার (১ মে) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার স্থানীয় সময় রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে মেইঝো শহর এবং ডাবু কাউন্টির মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী এস১২ হাইওয়ের ১৭.৯ মিটার (৫৮.৭ ফুট) প্রসারিত অংশ ধসে পড়ে। এতে ১৮টি গাড়িতে কয়েক ডজন লোক সেখানে আটকা পড়ে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং ৩০ জনকে হাসপাতালে জরুরি সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের জীবন বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে নেই।

এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫০০ জনকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে মহাসড়কটি ধসে পড়েছে তা এখনো স্পষ্ট না।


আরও খবর



গ্যাংস্টারের সঙ্গে প্রেম, মডেলকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

সাবেক মিস ইকুয়েডর প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া মডেল ল্যান্ডি প্যারাগাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল তাকে গুলি করে হত্যা পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুই সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারী।

এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কুখ্যাত এক গ্যাংস্টারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ল্যান্ডির। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাংস্টারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণেই হত্যা করা হয়েছে এই মডেলকে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।

পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে একটি রেস্তোরাঁয় বসে অপেক্ষা করছিলেন ল্যান্ডি। তখন দুই বন্দুকধারী খাবারের দোকানে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া শুরু করলে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন ল্যান্ডি। মডেলের গায়ে গুলি লাগার পরই ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান দুই বন্দুকধারী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঠিক কী কারণে ল্যান্ডিকে গুলি করে হত্যা করা হলো সেটির তদন্ত করছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে মিস ইকুয়েডর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ল্যান্ডি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী রয়েছে তার। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মাদক পাচারকারী হিসেবে ল্যান্ডির নাম ওঠে পুলিশের খাতায়।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর